Warman Hasbi-
বাতকর্ম বা Fart, এটা আমাদের অতি সাধারণ একটি শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া।
কিন্তু পৃথিবীতে আমাদের কাছে এটা সাধারণ হলেও মহাকাশচারীদের জন্য এটা চিন্তার বিষয়।
তাঁরা প্রতিটি বাতকর্ম কে একেকটি বোমার মত মনে করেন, বাতকর্মের সময় সাধারণত যে গ্যাস বের হয় এটা জ্বলনশীল বা দাহ্য গ্যাস, যা মহাকাশযানের বদ্ধ ক্যাপসুলে সমস্যার কারণ হতে পারে।
সাধারণত মহাকাশচারীদের হৃদপিন্ড সুস্থ রাখার জন্য, তাদের খাবারে এক্সট্রা পটাশিয়াম দেয়া হয়, এর ফলে তাদের বাতকর্ম আমাদের তুলনায় কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু কোন মহাকাশচারী স্পেসস্যুট পরিহিত অবস্থায় বাতকর্ম করলে সে গন্ধ পাবেনা, কারণ স্পেসস্যুট গুলোর হেলমেট বডি থেকে আলাদা হয় এবং সেখানে নিশ্বাসের বাতাস আসে অক্সিজেন ট্যাংক থেকে, হেলমেট এর নিচে গলার দিকে একাধিক লেয়ার থাকে ফলে বাতকর্মের গন্ধ হেলমেটে আসেনা।
বাতকর্মের সময় বায়ু একটা বেগে বের হয়ে আসে, যেহেতু প্রতিটি ক্রিয়ার ই বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে তাহলে সেক্ষেত্রে নভোচারীর বিপরীতে বেগবান হবার কথা? হ্যাঁ, তা হয়, তবে খুবই কম পরিমাণে।
গড়ে একজন ব্যাক্তি দিনে ০.৫ গ্রাম বায়ু ত্যাগ করে, ধরি বায়ুর গতি ১ মিটার পার সেকেন্ড, তাহলে 1m/s × 0.5g = 0.005 kg m/s। এই গতি খুবই নগন্য, যদি একজন মহাকাশচারী প্রতিদিন মহাকাশে বাতকর্ম করে তাহলে অল্প অল্প করে তার সামনের দিকে আগানোর গতি বৃদ্ধি পাবে, এতে তার ১০,০০০ বছর লাগবে ঘন্টায় ৮-১০ কিঃমি গতি তুলতে। তাহলে বুঝতেই পারছেন কতটা নগন্য। মহাকাশে সর্বপ্রথম বাতকর্ম করেছিলেন ১৯৭২ সালে আমেরিকান নভোচারী জন ইয়াং, এপোলো-১৬ তে করে তিনি যখন চাঁদে গিয়েছিলেন, তখন দীর্ঘ সময় মহাকাশে কাটান তাঁরা, সেই যাত্রায় তাঁদের একাধিকবার বাতকর্ম হয়েছিল, জন ইয়াং ছিলেন এর মধ্যে প্রথমবার। তিনি বলছিলেন অতিরিক্ত পটাশিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে তার এটা বেশি হচ্ছে।
(সেই অডিও রেকর্ড টি নিচে প্রথম কমেন্টে দেয়া হলো)
নাসা যদিও তখন চিন্তায় ছিল বাতকর্ম এর ফলে বের হওয়া মিথেন গ্যাস মহাকাশযানে কোন বিপত্তি ঘটায় কিনা, কিন্তু এমন কিছু পরে হয়নি তাই তারা পরবর্তী তেও নভোচারী দের পটাশিয়াম যুক্ত খাবার দেয়াও বন্ধ করেনি।
Warman Hasbi | Science Bee-বিজ্ঞান গ্রুপ