Yasin Ahmed-মানুষের জন্য অনেক ক্ষতিকর একটা মৌল হচ্ছে পারদ। স্বাস্থ্যের ওপর এই ভারী ধাতুর নেতিবাচক প্রভাবের কারণে অনেক দ্রব্য উৎপাদনে এর ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এর পরেও পারদের বিষক্রিয়া দেখা যাচ্ছে অনেকের মধ্যে। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে হতভম্ব হয়ে গবেষকরা আবিষ্কার করলেন, পারদ দিয়ে বিষক্রিয়ার সবচাইতে বড় উৎস হল স্বর্ণ উত্তোলন!
পারদের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, এটি বিভিন্ন দামি ধাতু যেমন সোনা ও রুপার সাথে আটকে থাকতে পারে। এ কারণে প্রাচীন কাল থেকে মানুষ এসব ধাতু অপসারণ করার জন্য পারদ ব্যবহার করত। এ থেকেই অনেকটা পারদ বিষক্রিয়া হয় বলে জানিয়েছেন U.S. Geological Survey এর গবেষক ডেভ ক্র্যাবেন্টহফট। এছাড়াও সাম্প্রতিক অন্যান্য কিছু গবেষণার সবগুলোতেই দেখা যায় পারদ ব্যবহার করে এই পদ্ধতিতে সোনা বের করাকে বিষক্রিয়ার জন্য দায়ী করা হয়েছে। পারদ দিয়ে সোনা উদ্ধারের জন্য সোনা মেশানো কাদায় পারদ ঢেলে দিয়ে হাত দিয়ে একে মেশানো হয়। তাতে সোনার ওপরে একটা প্রলেপ তৈরি করে আলাদা আলাদা গুটি তৈরি করে পারদ। এরপর একে পোড়ালে পারদ বাতাসে মিশে যায়। এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহারের পর পারদ পানি এবং মাটির সাথেও মিশে যায় এবং বৃষ্টির পানির সাথে সুপেয় পানির জলাশয়ে মিশে যায়। এই ভারী ধাতুটি শতাব্দীর পর শতাব্দী পরিবেশে রয়ে যায়। মাটি, পানি এবং বায়ুমণ্ডলে চক্রাকারে এটি ঘুরতে থাকে। তুলনামুলকভাবে কম তাপমাত্রাতেই পারদ বাষ্পীভূত হয়ে যায় এবং বাতাসে ঘুরে বেড়ায়। কয়েক শতাব্দী আগে সোনা আলাদা করার জন্য যে পারদ ব্যবহার করা হয়েছিল তা এখনও বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ক্র্যাবেন্টহফট। আর এভাবে সাগরের পানিতে এসে পড়া পারদের যৌগের ব্যাপারে বেশি দুশ্চিন্তা রয়েছে বিজ্ঞানীদের। তার কারণ হল, সাগরেই এটি রুপান্তরিত হয় বিষাক্ত মিথাইলমার্কারিতে, যা সামুদ্রিক মাছ খাবার মাধ্যমে আমাদের শরীরে এসে পড়ে।