মানুষ ঘুমায় কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+6 টি ভোট
518 বার দেখা হয়েছে
"তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে করেছেন (110,330 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+2 টি ভোট
করেছেন (110,330 পয়েন্ট)
সম্পাদিত করেছেন
নিশাত তাসনিম-

বিজ্ঞানীদের মতে,ঘুম হল একটি পর্যাবৃত্ত (পিরিয়ডিক)। তা একেবারেই প্রাকৃতিক। ঘুম মানে সাময়িক ভাবে হারিয়ে যাওয়া চেতনার ক্ষণ।

 

পৃথিবীর সব প্রাণীর ক্ষেত্রেই ঘুম একটি জরুরি প্রক্রিয়া। যা কি না মানুষের ক্ষেত্রে সঠিক শ্বাসক্রিয়া, রক্ত সঞ্চালন, শারীরিক বৃদ্ধি ও সংক্রমণ রোধ করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এই সময় আমাদের শরীরের পাঁচ শতাংশ বেশি রক্ত মস্তিষ্কের দিকে সঞ্চালিত হয়। যখন আমরা ঘুমোই, তখন আমাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন কেন্দ্র এক টানা কাজ করে।

 

নিদ্রা আর জাগরণের প্রক্রিয়াটি সঠিক ভাবে চালু রাখার জন্য। প্রতি দিন ২৪ ঘণ্টায় আমরা ১৬ ঘণ্টা জেগে কাটাই আর ৮ ঘণ্টা থাকি ঘুমিয়ে। আর তার জন্য যে কেন্দ্রটির ভুমিকা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, সেটি হল- আমাদের মস্তিষ্কের নীচের দিকে থাকা ছোট্ট বাদামের মতো একটি অংশ। যার নাম-হাইপোথ্যালামাস (Hypothalamus)।আমরা জেগে থাকব নাকি ঘুমিয়ে পড়ব, তার অনেকটাই নির্ভর করে হাইপোথ্যালামাস আর ব্রেন স্টেম নামে দুটি বিশেষ অংশের ওপরে। মস্তিষ্কের যে দু অংশের কথা বললাম, তার কিছু নিউরন বা স্নায়ুকোষই এই কাজটার জন্য দায়ী। এদের দুভাগে ভাগ করা যায়। এর মধ্যে যে স্নায়ুকোষগুলি উত্তেজিত থাকলে আমরা এক টানা ১৬ ঘণ্টা জেগে থাকতে পারি, তারাই তখন ক্রমাগত ঘুম আনার জন্য দায়ী স্নায়ুকোষগুলিকে দাবিয়ে রাখে।

 

নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস আর ব্রেন স্টেম-এর বিশেষ কিছু স্নায়ুকোষ উত্তেজনার সঙ্কেত (সিগন্যাল) মস্তিষ্কের হায়ার সেন্টার বা কর্টেক্সে (মস্তিষ্কের ওপরের অংশটিকে) পাঠাতে থাকে যতক্ষণ আমরা জেগে থাকি বিশেষ রাসায়নিক সংবাদদাতা বা কেমিক্যাল নিউরো-ট্রান্সমিটার এর মাধ্যমে। মস্তিষ্ককে উত্তেজিত রাখতে গিয়ে হিস্টামিন নামে এক ধরনের নিউরো-ট্রান্সমিটার নিঃসরণ করে হাইপোথ্যালামাস -এর টিউবারো-ম্যামালিয়ারি নিউক্লিয়াস বা TMN স্নায়ুগুলি থেকে। ঘুমের সময়, হাইপোথ্যালামাস এর ঘুমের জন্য দায়ী ভেনট্রোল্যাটেরাল প্রি-অপটিক নিউক্লিয়াস বা, VLPO স্নায়ুকোষগুলো উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এই সময়টিতে তারা ক্রমাগত জাগিয়ে রাখার স্নায়ুকোষগুলোকে পুরোপুরি দাবিয়ে রাখার চেষ্টা চালায়।

এভাবে রাসায়নিক বার্তার (রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে যে বার্তা পাঠানো হয়) মাধ্যমে হাইপোথ্যালামাসের TMN স্নায়ুকোষগুলোকে জাগ্রত অবস্থা থেকে নিদ্ররায়  রুপান্তরিত করার সঙ্কেত পাঠায়। এ যেন জোয়ার আর ভাঁটার খেলা! মস্তিষ্কের এই সুইচটিই আমাদের নিদ্রা আর জাগরণের জন্য দায়ী।

তথ্যসূত্রঃ- বিজ্ঞান পত্রিকা
0 টি ভোট
করেছেন (20,400 পয়েন্ট)
মানুষ আসলে কেন ঘুমায়?

আমরা এতোটুকু জানি যে, মানবদেহ একটা চক্রাকার ঘড়ির সাথে তাল মিলিয়ে চলে, আর সেটাই মানুষকে ঘুম আর জেগে থাকার চক্র মেনে চলতে সহায়তা করে। এর পেছনের কারণটা কিন্তু আমরা জানিনা। ঘুমের সময়টাতে আমাদের দেহ টিস্যু মেরামত করে, অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষণমূলক কাজ করে। বলতে গেলে, আমরা আমাদের জীবনের তিন ভাগের এক ভাগ নাক ডেকেই কাটাই। আবার, কোনো কোনো প্রাণী তো একেবারেই ঘুমায় না। আমরা কেন ঘুমাই?

বেশ কিছু ধারণা প্রচলিত আছে এ ব্যাপারে, কিন্তু কেউই একদম পাকা কোনো উত্তর দিতে পারেনি। কেউ কেউ বলেন, বিবর্তনের সুবাদে যেসব প্রাণী শিকারীদের হাত থেকে লুকানোর সামর্থ্য অর্জন করেছে, তারা ঘুমানোর সুযোগ বের করে নিতে পেরেছে। কিন্তু যাদেরকে সবসময়েই সতর্ক থাকতে হয়, তারা ঘুম ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে বিশ্রাম নেয়ার বা নতুন উদ্যম অর্জন করার সামর্থ্য পেয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা যদিও জানেন না আমরা কেন ঘুমাই, কিন্তু তারা বুঝতে পারছেন, ঘুমের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব আসলে কতখানি যেমন, মস্তিষ্কের স্থিতিস্থাপকতা ঠিক রাখা,মানুষের ক্ষেত্রে সঠিক শ্বাসক্রিয়া, রক্ত সঞ্চালন, শারীরিক বৃদ্ধি ও সংক্রমণ রোধ করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এই সময় আমাদের শরীরের পাঁচ শতাংশ বেশি রক্ত মস্তিষ্কের দিকে সঞ্চালিত হয়।
আমাদের ঘুম নিয়ে কিছু তত্ত্ব
Repair and Restorative theory – Oswald এর মতে ঘুম মস্তিষ্ক সহ আমাদের শরীর কে মেরামত করে থাকে। উনার মতে ঘুম এর বিভিন্ন ধাপ এ শরীরের বিভিন্ন অংশের মেরামত চলে। আমরা সারাদিন বিভিন্ন কাজে যে পরিমান শক্তি ক্ষয় করি, ঘুমের মাধ্যমে তা পুনরুদ্ধার হয়ে থাকে। সারাদিন শরীর ও মন স্বাস্থ্যকর ও পরিপূর্ণভাবে যেন কার্যসম্পাদন করতে পারে তার জন্যে “ঘুম” আমাদের গুরুত্বপূর্ণ শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া গুলোর জন্যে – যেমন তাপমাত্রা স্বাভাবিক করণ, হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা, পরিপাকক্রিয়া ইত্যাদির জন্যে শক্তি যোগায়। যার ফলশ্রুতি তে আমরা সবাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সকল প্রকার শারীরিক ও মানসিক কাজকর্ম করতে পারি। এমন কি গবেষণায় পাওয়া যায় যে ঘুম এর সময় আমাদের মস্তিষ্ক সব বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন করে থাকে যা দিনের বেলায় বিভিন্ন কাজ সমপন্ন করার সময় মস্তিষ্কে জমা হয়। ধরা হয় এই বর্জ্য নিষ্কাশন এর ফলেই পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া টি সম্পন্ন হয়।
Evolutionary theory or Adaptive theory – এই তত্ত্ব অনুসারে বলা হয়, সব প্রাণীরই ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে উঠেছে প্রকৃতির সাথে খাপ খাওয়ানোর মাধ্যমে এবং প্রাণী রা তখনই ঘুমায় যখন জেগে থাকা তার জন্যে বিপদজনক। এই তত্ত্ব অনুসারে, ঘুম আমাদের জন্যে একটি প্রতিরক্ষামূলক কাজ করে।
Information Consolidation theory – এই তত্ত্ব বলে মানুষ যখন ঘুমায় তখন তার মস্তিষ্কে সারাদিনের সংগ্রহকৃত সব তথ্য বিশ্লেষণ চলে। এবং এই তত্ত্ব আরও বলে যে ঘুম আমাদের পরবর্তী দিনে সব কাজ করার জন্যে তৈরি করে থাকে। গবেষকরা আরও বলেন, ঘুম আমাদের স্মৃতি গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যারা নির্দিষ্ট পরিমান ঘুম থেকে বঞ্চিত হয়েছে তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় মনে করা এবং মনে রাখতে অসুবিধা হয়েছে।

যদিও কোন একটি তত্ত্বও “আমরা কেনো ঘুমাই?” এ প্রশ্নের উত্তর সরাসরিভাবে দেয় না, তবে ঘুম আমাদের যেসকল গুরুত্বপূর্ণ কার্যসম্পাদন করে তা দ্বারা আমরা যথেষ্ট ব্যাখ্যা পাই যে ঘুম কেন আমাদের জন্যে এতো প্রয়োজনীয় এবং এতো বোধগম্য হওয়ার কথা যে ঘুম এতো দরকার দেখেই আমরা ঘুমাই।

বুঝাই যাচ্ছে এখন, বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া তথ্য ও তত্ত্ব থেকে বোঝা যায় যে “ঘুম” আমাদের জীবনে অপশনাল কোন বিষয় নয় অথবা
বিলাসিতা নয়, বরং ঘুম আমাদের জীবন ধারনের একটি মৌলিক অংশ যা প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে থাকা আবশ্যক। “ঘুম” এর শারীরিক, মানসিক এবং আবেগীয় কার্যকারী উপাদান রয়েছে, তাই ঘুম এর গুনাগুণ ব্যহত হলে মানুষের জীবনে বিভিন্ন  দিকে এর প্রভাব পরে থাকে। একটি সুস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্যে পরিমিত খাওয়া, ঘুম ও শারীরিক শ্রম এর কোনো বিকল্প নেই।

তত্ত্ব সম্পর্কিত তথ্যঃ
Marzia Al Hakim, Consultant Psychologist
Psycure Organization
তথ্য সংগ্রহেঃ মাহফুজুর রহমান

#Science #Bee #sleep #Facts

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+3 টি ভোট
9 টি উত্তর 2,062 বার দেখা হয়েছে
02 জানুয়ারি 2022 "আইকিউ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন অচেনা মানুষ (3,170 পয়েন্ট)
+8 টি ভোট
4 টি উত্তর 757 বার দেখা হয়েছে
+9 টি ভোট
1 উত্তর 771 বার দেখা হয়েছে
04 জানুয়ারি 2021 "মনোবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন noshin mahee (110,330 পয়েন্ট)
+5 টি ভোট
1 উত্তর 851 বার দেখা হয়েছে
31 জানুয়ারি 2021 "প্রাণিবিদ্যা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Samsun Nahar Priya (47,700 পয়েন্ট)

10,775 টি প্রশ্ন

18,456 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

265,656 জন সদস্য

138 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 138 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  2. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  3. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  4. hubetplus

    100 পয়েন্ট

  5. SusanPerrier

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...