Rubaiya Jannat -
কল্পনা করুন রাতের বেলা আপনি সমুদ্রের পাড়ে বেড়াতে গিয়েছেন। হঠাৎ আপনার চোখে পড়লো সমুদ্রের পানিতে নীল রঙের তারার মতো কিছু জ্বলজ্বল করছে! আপনার কাছে মনে হতেই পারে আকাশের সব তারা যেনো সমুদ্রে নেমে এসেছে!
আশ্চর্য হওয়াটাই স্বাভাবিক তবে এই তারা আকাশের তারা নয়। এটি হচ্ছে বায়োলুমিনেসেন্ট প্ল্যাঙ্কটন।
বায়োলুমিনেসেন্ট প্ল্যাঙ্কটন হচ্ছে একধরনের সামুদ্রিক অনুজীব। বায়োলুমিনেসেন্স প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীব দেহে আলো তৈরি ও নির্গমন হয়। বায়োলুমিনেসেন্স প্রক্রিয়ায় আলো তৈরি করতে সাহায্য করে 'লুসিফেরেন' এবং 'লুসিফেরেজ' নামক দুটি রাসায়নিক পদার্থ। অবশ্য কিছু কিছু বায়োলুমিনেসেন্ট জীব নিজেরাই এই 'লুসিফেরেন' পদার্থটি তৈরি করতে পারে। এই আলো শীতল আলো। যা ২০ শতাংশেরও কম তাপ উৎপন্ন করে। এই অনুজীবের কোষের ঝিল্লিতে এক বিশেষ চ্যানেল রয়েছে যা বৈদ্যুতিক সংকেতগুলোর বিপরীতে সাড়া প্রদান করতে পারে। এরা আক্রমণকারী প্রাণীকে বিভ্রান্ত করার জন্য আলো বিচ্ছুরণ করে।Science Bee
জেলিফিশ, সামুদ্রিক ছত্রাক এধরণের কিছু বায়োলুমিনেসেন্ট জীব। সমুদ্র ছাড়াও স্থলে পাওয়া যায় এমন কিছু বায়োলুমিনেসেন্ট জীব হচ্ছে জোনাকিপোকা, ছত্রাক এবং এই জাতীয় আরো কিছু জীব। তবে মিঠাপানিতে বায়োলুমিনেসেন্ট জীব পাওয়া যায় খুবই কম। এদের অধিকাংশের আলোই দেখতে নীল এবং সবুজ রঙের হয়ে থাকে।রাতের বেলা সমুদ্রের পাড়ে কেউ হাটলে তার পায়ের ছাপে এদের নীল আলো দেখা যায়। যেখানে এদের অবস্থান বেশি সেখানে এই আলোর পরিমানও বেশি হয়।Science Bee
যেকোনো সমুদ্রেই যে এই বায়োলুমিনেসেন্ট প্ল্যাঙ্কটন দেখা যাবে এটা মোটেও ভাববেন না। পৃথিবীর অল্প কিছু সংখ্যক সমুদ্র কিংবা হ্রদে কেবল এদের দেখা পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্র, পুয়ের্তোরিকো, জ্যামাইকা, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপসহ আরও বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সমুদ্র, হ্রদে এদের দেখা যায়। সৌভাগ্যবান হলে একদিন আপনিও হয়তো এই সমুদ্রের তারা নিজ চোখে উপভোগ করতে পারবেন।