UV রশ্মিকে অতিবেগুনী রশ্মি বলা হয় ৷
আবিদ হাসান রাফি
অতিবেগুনী রশ্মি এক ধরনের তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ যার তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোর চেয়ে ছোট এবং রঞ্জন রশ্মির চেয়ে বড়। এই রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১০০ ন্যানোমিটার থেকে ৪০০ ন্যানোমিটার এবং শক্তি ৩ ইলেকট্রন-ভোল্ট থেকে ১২৪ ইলেকট্রন-ভোল্ট।সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি বা আলট্রা ভায়োলেট রে মূলত তিন ধরনের—এ, বি এবং সি। আমরা যেহেতু বিষুব রেখার কাছাকাছি থাকি, তাই আমাদের দেশে এ এবং বি বেশি পাওয়া যায়। অতিবেগুনি রশ্মি বেশি ছড়ায় সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত, অর্থাৎ যখন ছায়া নিজের চেয়ে ছোট থাকে। এখন দেখা যাক এই অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি পড়লে ত্বকের কী ক্ষতি হতে পারে।সূর্যরশ্মির মতো আমাদের ত্বকেরও নানা প্রকারভেদ আছে। ত্বকে মেলানিনের মাত্রার ওপর নির্ভর করে এই প্রকারভেদ। আমাদের ত্বকে ইউ মেলানিন বা তামাটে মেলানিনের মাত্রা বেশি বলে আমরা সূর্যালোকের সঙ্গে কিছুটা বেশি খাপ খাইয়ে নিতে অভ্যস্ত। শ্যামবর্ণের মানুষ তাই প্রখর সূর্যালোকে ‘ট্যান’ হয়, কিন্তু ‘বার্ন’ হয় না। ফলে ক্ষতির মাত্রা কিছুটা কম।আবার ইয়েলো মেলানিন যাদের বেশি, যেমন অস্ট্রেলীয় বা পাশ্চাত্যের অনেক দেশে ত্বকের এই ফটোপ্রোটেকশন ক্ষমতা কম। ফলে ত্বকে পোড়াটে ভাব আসে, ত্বকের বিশেষ ক্ষতিও হয়। অস্ট্রেলিয়ায় এ কারণে ত্বকের ক্যানসার পরিচিত এক রোগ। সব ধরনের ক্যানসারের মধ্যে এটি দশম।ক্যানসার ছাড়াও সূর্যের সরাসরি আলো ত্বকের আরও কিছু ক্ষতি করতে পারে। অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি ত্বকের ওপর পড়লে ত্বকের নিচের কানেকটিভ টিস্যুর কোষগুলো ভেঙে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ধীরে ধীরে ত্বকের টান টান ভাব নষ্ট হয়। যাঁরা সূর্যের আলোতে বেশি কাজ করেন, তাঁদের ত্বক দ্রুত বুড়িয়ে যায়, কুঁচকে যায়, বলিরেখা পড়ে। তা ছাড়া সূর্যের আলোয় ত্বক দ্রুত আর্দ্রতা হারায়। এই সমস্যাগুলোকে ফটোড্যামেজ বলা হয়। এর বাইরে তিল পড়া, কালো পিগমেন্টেশন হওয়া, মেছতা পড়া, ডার্ক স্পট, কেরাটোসিস ইত্যাদির কারণও এই অতিবেগুনি রশ্মি।
মোটকথায়,অতিবেগুনি রশ্মির অতিরিক্ত মাত্রার ক্ষতিকর দিকঃ
১. ত্বকের ক্যান্সার হতে পারে;
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়;
৩. চোখে ছানি পড়ে এবং অন্ধত্ব বেড়ে যায়;
৪. খাদ্যশস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়;
৫.বীজের উৎকর্ষ নষ্ট হয়।