ডিম আমাদের একটি প্রিয় খাবার। সন্দেহাতীতভাবে ডিম একটি পুষ্টিকর খাবার। হঠাৎ অতিথি আপ্যায়নে আমাদের দেশে ডিমের কদর অনেক আগে থেকেই। একথা হলফ করেই বলা যায় যে, ডিম খাওয়ার কথা উঠলে আমাদের দেশের অধিকাংশ লোকজনই মুরগীর ডিমকেই বেছে নেবেন। বিশেষ করে হাঁসের ডিমের পাশে মুরগীর ডিমকেই বেশি পছন্দ। এর কারণ হল, প্রচলিত ধারণা হচ্ছে মুরগীর ডিমে বেশি পুষ্টি থাকে। এ ছাড়া হাঁসের ডিমের রয়েছে নানা বদনাম। যেমন অনেকেই মনে করেন, হাঁসের ডিমে হাঁপানী হয় কিংবা হাঁপানী বাড়ে। আবার অনেকের ধারণা হাঁসের ডিম অ্যালার্জির উদ্রেক করে। কাজেই ডিম যদি খেতেই হয় তো মুরগীর ডিমই খাওয়া ভালো- এমন ধারণায় আমরা অনেকেই বন্দী। কিন্তু ডিম সম্পর্কে এই ধারণাগুলো কি ঠিক? স্বাদ, পছন্দ কিংবা দামের বিবেচনায় হাঁস এবং মুরগীর ডিমকে পার্থক্য করা গেলেও পুষ্টিমানের বিবেচনায় ঊভয় ডিমের মূল্যই সমান বলা যায়। খাদ্যবিজ্ঞানীদের মতে, হাঁস এবং মুরগী উভয় ডিমেরই পুষ্টিমূল্য সমান। একই ওজনের একটি হাঁসের ডিম ও একটি মুরগীর ডিমের পুষ্টিমান প্রায় একই রকম হবে। কাজেই অযথা মুরগীর ডিমের দিকে ঝুঁকে পড়ার কোন কারণ নেই। তবে বাজারের দিকে তাকালে দেখতে পাই উল্টো চিত্র। বেশি দাম দিয়ে লোকজন মুরগীর ডিমই বেশি কিনছেন। অন্যদিকে মুরগীর ডিমের চেয়ে ওজন কিছুটা বেশি হওয়ার পরও কম দামে বিক্রি হচ্ছে হাঁসের ডিম। কাজেই যারা কমদামের জন্য হাঁসের ডিম কিনছেন তারা কিন্তু জিতে যাচ্ছেন পুষ্টিমূল্যের বিবেচনায়। তবে স্বাদ পছন্দের কথা আলাদা, কেউ যদি মুরগীর ডিম খেতে পছন্দ করেন এবং সে কারণেই বেশি দাম দিয়ে মুরগীর ডিম কিনে নেন তাহলে কোন কথা নেই। কিন্তু মুরগীর ডিমে পুষ্টি বেশি মনে করে থাকলে একটি কথা আছে। আর তাহলো, আপনি ভুল করছেন। পুষ্টিমানের বিবেচনায় মুরগীর ডিম ও হাঁসের ডিমের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই বললেই চলে। আর হাঁসের ডিমের সঙ্গে হাঁপানীর কোন সম্পর্ক নেই। আর অ্যালার্জি? ওতো সব ডিমেই হতে পারে। তাহলে দোষটা শুধু হাঁসের ডিমের উপর চাপানো কেন? শুধু ডিম কেন যে কোন খাবারেরই প্রতিই যে কারো অ্যালার্জি থাকতে পারে, খাবারের অ্যালার্জির বিষয়টি কোনক্রমেই এভাবে একতরফা হাঁসের ডিমের উপর চাপিয়ে দেয়া বিজ্ঞানসম্মত নয়।
- সংগৃহীত