সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ হিসাবে বলি, কাউকে ধূমপানের উৎসাহ দেয়ার জন্য কিছু লেখা হচ্ছেনা।
সিগারেট একটি আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য। সকল দেশের মধ্যে অঞ্চলভেদে প্রধান খাবার এবং অন্যান্য খাবারের মধ্যে নানবিধ বৈচিত্র্য থাকলেও ধূমপানে কোনও বৈচিত্র্য নেই। যে জিনিসটার এতোটা জনপ্রিয়তা সেটা কেন এত জনপ্রিয় সেটার উত্তর বেরকরা কিছুটা গবেষণা লব্ধ ব্যাপার। এখন বলা যায়, কে কতটুকু ধূমপান করবে আসলে তার কোন সীমারেখা নেই। পরিবেশ পরিস্থিতি, স্থান কাল পাত্র ভেদে ধূমপানের পরিমাণে কম বেশি পার্থক্য নিরূপিত হয়।
সিগারেট খাওয়া শুরু করাটা একটা পারিপার্শ্বিক ব্যাপার। কেউ একা একা সিগারেট খাওয়াও শুরু করতে পারে কিংবা কারও সাহচর্য পেয়ে শুরু করতে পারে। সেটা ভিন্ন গল্প। ধূমপান করা যেহেতু ভাল কাজ না এটা জেনেই একজন ব্যক্তি প্রথম ধূমপান শুরু করে সেহেতু ব্যাপারটা মূলত নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আকর্ষণ এখানে মূল নিয়ামক। অনেকটা আসক্তি আর কিছুটা অভ্যাসে সেটা চলমান থাকে।
দ্বিতীয় প্রশ্নে আসা যাক। কষ্ট থেকে মানুষ সিগারেট খায় এটা ভুল ধারণা। চরম সুখের সময়েও সিগারেট খাওয়া একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। যারা ধূমপান করে তারা সকলেই কষ্টে আছে এমন ভাবার কিছু নেই।
পরিশিষ্টঃ একজন ব্যক্তির ধূমপান ছেড়ে দেয়ার জন্য বা ধূমপান থেকে বিরত থাকার ব্যক্তির ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট।
সিগারেট শরীরের যেসব ক্ষতি করে :
মাথার চুল থেকে পায়ের নখ, একটা লোকের সম্পূর্ণ দেহ। সেখানে এমন কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নেই যেখানে তামাকের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না।
এরপর চোখের ছানি পড়া। মুখের ভেতর মুখের ক্যানসার। গলায় ক্যানসার। কানের শ্রবণশক্তি হ্রাস। এরপর বুকের একদিকে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা, এরপর হলো ফুসফুসে ক্যানসার। তারপর পুরুষের যৌনশক্তি হ্রাস।
মেয়েদের অকালে গর্ভপাত। এরপর চর্মরোগ। সবশেষে পায়ের নখে পচনশীল রোগ গ্যাংরিন। এর জন্য পা কেটে ফেলতে হয়। একমাত্র তামাক, যার মধ্যে সাত হাজার রাসায়নিক পদার্থ আছে। এগুলো সবই বিষাক্ত।
সবচেয়ে মারাত্মক হলো নিকোটিন। নিকোটিন হলো কঠিন নেশার মতো। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, নিকোটিন হেরোইন ও কোকেনের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। এ জন্য যারা সিগারেট একবার ধরে তারা ছাড়তে পারে না। নেশায় আসক্ত করার শক্তিটা তার অনেক বেশি।
মানসিক চাপ
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানসিক চাপ থেকে মুক্তির জন্য মানুষ সিগারেট খায় কিন্তু পরে আর ছাড়তে চায় না । বলা যায় ছাড়তে পারে না।
তীব্র শোক থেকে
অনেকের ধারণা সিগারেট এমন একটি জিনিস যা মানুষকে কোনো ধরনের আঘাত বা শোক থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
মজা করে খায়
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে ছাত্র থাকাবস্থায় বন্ধুদের সঙ্গে মজা করে সিগারেট খেতে গিয়ে তা অভ্যস্ততায় পরিণত হয়। এই ধরনের মজা থেকেই সিগারেট খাওয়া শুরু করেন অনেকে। পরে আর ছাড়তে পারেন না।
স্মার্ট হওয়া
অনেক পুরুষের ধারণা, সিগারেট খেলে নিজেকে বেশি স্মার্ট দেখায়। তাই বর্তমান ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মেলাতে সিগারেট খেয়ে থাকেন অনেকে। জেনে রাখা ভালো সিগারেট খেলে কখনো স্মার্ট হয় না। এটা বিষপান বটে।
সময় কাটানোর জন্য
অনেক সময় দেখা যায় শুধুমাত্র সময় কাটানোর জন্য বা একাকীত্বের সঙ্গী হিসেবে সিগারেট একটা বিরাট ভূমিকা পালন করে স্মোকারদের কাছে। কারো কাছে হয়তো কিছু না করে আধঘণ্টা অপেক্ষা করা
বেশ কষ্টের মনে হতে পারে, কিন্তু সিগারেট ধরিয়ে নিলেই যেন মনে হয় সময় একদম দ্রুত কেটে যাচ্ছে। অনেকের সিগারেট সঙ্গে থাকলে নিজেকে একা মনে করেন না, সিগারেটকে সাথির মতো মনে করেন।
বড় হয়ে গিয়েছি
টিনেজারদের মধ্যে একটা বিষয় দেখা যায় বিশেষ করে এখনকার টিনেজারদের মাঝে, তারা একটু বড় হলেই ভাবে আমি তো বড় হয়ে গিয়েছি।
আমার বন্ধুরা সিগারেট খাচ্ছে, আমি না খেলে কেমন দেখায়। তাছাড়া ওরা হয়তো আমাকে অসামাজিক ভাবতে পারে। এসব চিন্তাভাবনা থেকেই অনেক কম বয়সীরা সিগারেট খেতে শুরু করে।
গার্লফ্রেন্ডকে ইমপ্রেস করতে
এমন অনেক মেয়ে আছেন যারা ছেলে বন্ধুর সিগারেট খাওয়াকে বেশ উপভোগ করেন। আবার তারা ভাবেন যে কোনো ছেলে সিগারেট না খেলে সে একটা আন-স্মার্ট। অর্থাৎ অনেক মেয়ে ছেলে বন্ধুর সিগারেট খাওয়া পছন্দ করেন। এ কারণেও অনেকেই সিগারেট খায়।