Tourette Syndrome কী??এবং কেন ঘটে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+7 টি ভোট
456 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (110,340 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+3 টি ভোট
করেছেন (105,570 পয়েন্ট)

 ABDUL HADI NAHID

 

টুরেট সিন্ড্রোম হলো একধরনের স্নায়ুতান্ত্রিক সমস্যা। এর নামকরণ করা হয়েছে ফরাসি নিউরোলজিস্ট জিল ডে লা টুরেট এর নামানুসারে। এটি একধরনের টিক ডিসঅর্ডার। টিক হলো আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে আপনার দেহের কোনো মাংসপেশির আন্দোলন। টিক দুই ধরনের রয়েছে।

  • মোটর টিক (এটি শরীরের নড়াচড়ার সাথে সম্পর্কিত, যেমন- চোখের পলক ফেলা, কাঁধের ঝাঁকুনি)
  • ভোকাল টিক (এক্ষেত্রে ব্যক্তি মুখ দিয়ে আওয়াজ করেন, গলা পরিষ্কার করতে থাকেন )
  • টিক সাধারণ হতে পারে, আবার জটিলও হতে পারে। জটিল টিকের ক্ষেত্রে একাধিক ধরনের টিকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। টুরেট সিন্ড্রোম একধরনের জটিল টিক ডিসঅর্ডার। এটি একজন ব্যক্তির শিশুকালে হতে পারে, আবার বয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রেও হতে পারে। সাধারণত বাচ্চাকালে একজন টুরেটে আক্রান্ত হলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার সাথে সাথে লক্ষণ হ্রাস পেতে থাকে, আবার কখনও কখনও লক্ষণ না কমার বদলে আরও বাড়তে থাকে। আর জটিলতা শুরু হয় তখনই।

    কেন হয় টুরেট সিন্ড্রোম?

    টুরেট সিন্ড্রোম খুব একটা বিরল কিছু নয়। ধারণা করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের প্রতি ১০০ জনে একজনের টিক সিন্ড্রোম থাকে, আর ৫-১৭ বছর বয়সীদের প্রতি ১৬০ জনের ১ জনের টুরেট সিন্ড্রোম পাওয়া যায়। এই সিন্ড্রোমের কারণ এখনও বিজ্ঞানীদের কাছে পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। তবে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা অনুযায়ী, মস্তিষ্কের কিছু অঞ্চলের অস্বাভাবিকতা (যেমন- ব্যাসাল গ্যাংগলিয়া, সম্মুখ খণ্ড বা লোব এবং কর্টেক্স) এসব অঞ্চলের মধ্যে সংযোগকারী সার্কিটের অস্বাভাবিকতা এবং বেশ কিছু নিউরোট্রান্সমিটার (যেমন- ডোপামিন, সেরোটোনিন, নরএপিনেফ্রিন) এসবের অস্বাভাবিকতার সাথে এই সিন্ড্রোমের সম্পর্ক রয়েছে।

    বিজ্ঞানীদের মতে, বেশ কিছু জেনেটিক কারণও এর জন্য দায়ী। পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু কারণকে টুরেট সিন্ড্রোমের রিস্ক ফ্যাক্টর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সেগুলো হলো-

  • টুরেট সিন্ড্রোমের জন্য দায়ী জিনটি একটি ডমিন্যান্ট বা প্রকট জিন। তাই কোনো ব্যক্তি এতে আক্রান্ত হলে সেক্ষেত্রে ৫০% সম্ভাবনা থাকে তার সন্তানদের মাঝে সেটি সঞ্চারিত হওয়ার।
  • লক্ষণ প্রকাশের দিক থেকে মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা ৩ থেকে ৪ গুন বেশি সেনসিটিভ বা ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
  • ডোপামিনের অস্বাভাবিক ভাঙন টুরেট সিন্ড্রোমকে প্রভাবিত করে।  
  • বিজ্ঞানীদের মতে এটি একটি জটিল রোগ, যেটি অনেকগুলো জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং এখানে পরিবেশের একটি বড় প্রভাব রয়েছে। গর্ভাবস্থায় ধূমপান, জন্মের সময় অস্বাভাবিক কম ওজন এবং কিছু ইনফেকশনের প্রভাব কীভাবে এর পেছনে দায়ী সেটি নিয়েও এখন গবেষণা চলছে।

    কী হয় টুরেট সিন্ড্রোমে? 

    টুরেট সিন্ড্রোমের প্রধান লক্ষণ হলো টিক, অর্থাৎ শরীরের মাংসপেশির ছান্দিক স্পন্দনের ব্যতিক্রম ঘটা। লক্ষণগুলো সাধারণত ৫-১০ বছর বয়সে প্রকাশ পাওয়া শুরু করে। প্রথমদিকের লক্ষণগুলো সাধারণত মোটর টিক, অর্থাৎ শরীরের কোনো পেশীর অস্বাভাবিক স্পন্দন, প্রধানত মাথা এবং ঘাড়ের দিকের পেশিগুলোর ক্ষেত্রে এরূপ হয়ে থাকে। পেশীর অস্বাভাবিক স্পন্দন সাধারণত ব্যক্তির উত্তেজনা, মানসিক চাপের সাথে বেড়ে যায়। আবার সেই অস্বাভাবিক স্পন্দন কমে যায় যখন ব্যক্তি শান্ত এবং কোনো কাজে মনোযোগী হন। পাশাপাশি কিছু ভোকাল টিকও দেখা যায়। মোটর টিকের মধ্যে সাধারণ ক্ষেত্রে ঘন ঘন চোখের পলক ফেলা, চোখের অন্য ধরনের নড়াচড়া, মুখ ভেংচান, কাঁধ ঝাঁকনো, মাথা ঝাঁকানো দেখা যায়। জটিল ক্ষেত্রে অনেকগুলো সাধারণ টিকের কম্বিনেশন, লাফান, শরীর বাঁকান এসব দেখা যায়। সাধারণ ভোকাল টিকের ক্ষেত্রে ব্যক্তি ঘন ঘন গলা পরিষ্কার করতে থাকেন, পাশাপাশি নাক ঝাড়া, আওয়াজ করতে থাকা সহ বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায়। জটিল ক্ষেত্রে কখনো কখনো ব্যক্তি নিয়ন্ত্রনহীনভাবে বিভিন্ন কথা বলতে থাকেন।

  • টুরেট সিন্ড্রোমের সব থেকে জটিল ক্ষেত্রে ব্যক্তির পেশীর স্পন্দন এতটাই নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে যায় যে, ব্যক্তি নিজেই নিজেকে আঘাত করতে থাকেন, হতে পারে সেটা মুখে বা শরীরের অন্য কোথাও। ভোকাল টিকের ক্ষেত্রে ব্যক্তি জটিল পর্যায়ে গেলে দুটো পরিণতির সম্মুখীন হতে পারেন- Coprolalia: এক্ষেত্রে ব্যক্তি সামাজিকভাবে অযোগ্য কথা বলতে থাকেন, এবং Ecolalia: এক্ষেত্রে ব্যক্তি অন্যের কথার পুনরাবৃত্তি করতে থাকেন। তবে Coprolalia খুবই বিরল, সাধারণত টুরেট সিন্ড্রোমে আক্রান্তদের ১০-১৫ শতাংশের  ক্ষেত্রেই কেবল এটি দেখা যায়।

    শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা

    সাধারণত কোনো ব্যক্তির যদি একাধারে কমপক্ষে এক বছর মোটর ও ভোকাল টিক থাকে তাহলে ডাক্তার তাকে টুরেট সিন্ড্রোমে আক্রান্ত বলে ধরে নেন। টুরেটের পাশাপাশি অন্য স্নায়ুতাত্ত্বিক অথবা মানসিক সমস্যাও ডাক্তারকে এটি শনাক্তে সাহায্য করে। টুরেটের জন্য কোনো রক্ত, ল্যাব অথবা কোনো ইমেজিং পরীক্ষা নেই। তবে খুব অল্প ক্ষেত্রেই এমআরআই, সিটি স্ক্যান, ইইজি এসব পরীক্ষা করা হয়ে থাকে টুরেট শনাক্তের জন্য।

    অধিকাংশ ক্ষেত্রেই টুরেটে আক্রান্ত ব্যক্তি কোনো চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হয়ে যান, অনেকের ক্ষেত্রেই আবার বয়স বাড়ার সাথে সাথে লক্ষণগুলো চলে যেতে থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো অতটা প্রকট না হওয়ায় ঔষধের প্রয়োজন পড়ে না। তবে যাদের ক্ষেত্রে টিকের উপস্থিতি স্বাভাবিক কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটায় তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। সাধারণত Neuroleptic drugs অর্থাৎ যেসব ঔষধ মনোরোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়, এসকল ঔষধের ব্যবহার টিক দমনের ক্ষেত্রে কার্যকরী বলে দেখা গেছে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবার ক্ষেত্রে এই ঔষধ কার্যকরী হয় না, বরং অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও লক্ষ্য করা যায়।

  • টিকের প্রভাব কমানোর জন্য অনেক ক্ষেত্রে কিছু আচরণগত চিকিৎসাও প্রয়োগ করা হয়ে থাকে, যেমন- সচেতনতার প্রশিক্ষণ, আচরণগত প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। মোটকথা, আচরণের নিয়ন্ত্রণ আনার পেছনে এসব পদ্ধতি কাজ করে। সম্প্রতি ডিপ ব্রেইন স্টিমুলেশন নামক অস্ত্রোপচার পদ্ধতিও টুরেটের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে, যদিও এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, তবে অনেকেই এর ফলে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। যারা খুব জটিল টুরেট সিন্ড্রোমে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে এটি একটি সমাধান হয়ে আসতে পারে। ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার এক তরুণীর জটিল টুরেটের চিকিৎসায় এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছিল। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক জেফ মাটোভিকেরও সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছিল।

0 টি ভোট
করেছেন (135,490 পয়েন্ট)
টুরেট সিন্ড্রোম হলো একধরনের স্নায়ুতান্ত্রিক সমস্যা। এর নামকরণ করা হয়েছে ফরাসি নিউরোলজিস্ট জিল ডে লা টুরেট এর নামানুসারে। এটি একধরনের টিক ডিসঅর্ডার। টিক হলো আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে আপনার দেহের কোনো মাংসপেশির আন্দোলন। টিক দুই ধরনের রয়েছে।

মোটর টিক (এটি শরীরের নড়াচড়ার সাথে সম্পর্কিত, যেমন- চোখের পলক ফেলা, কাঁধের ঝাঁকুনি)

&bull; ভোকাল টিক (এক্ষেত্রে ব্যক্তি মুখ দিয়ে আওয়াজ করেন, গলা পরিষ্কার করতে থাকেন ) <

টিক সাধারণ হতে পারে, আবার জটিলও হতে পারে। জটিল টিকের ক্ষেত্রে একাধিক ধরনের টিকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। টুরেট সিন্ড্রোম একধরনের জটিল টিক ডিসঅর্ডার।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+8 টি ভোট
1 উত্তর 266 বার দেখা হয়েছে
23 ডিসেম্বর 2020 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন noshin mahee (110,340 পয়েন্ট)
+8 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,984 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 403 বার দেখা হয়েছে
04 মার্চ 2023 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন russha (170 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 151 বার দেখা হয়েছে
17 নভেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,490 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 453 বার দেখা হয়েছে
17 নভেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,490 পয়েন্ট)

10,807 টি প্রশ্ন

18,512 টি উত্তর

4,744 টি মন্তব্য

517,612 জন সদস্য

77 জন অনলাইনে রয়েছে
21 জন সদস্য এবং 56 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ

    1280 পয়েন্ট

  2. Dibbo_Nath

    370 পয়েন্ট

  3. Fatema Tasnim

    340 পয়েন্ট

  4. _Polas

    160 পয়েন্ট

  5. Arnab1804

    140 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি মাথা স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে ডিম চাঁদ কেন বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মাছ মশা শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা মস্তিষ্ক ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাংলাদেশ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...