লুসিড ড্রিম কী? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+15 টি ভোট
6,577 বার দেখা হয়েছে
"মনোবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (71,130 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+5 টি ভোট
করেছেন (71,130 পয়েন্ট)

"লুসিড ড্রিম" এর "লুসিড" শব্দটার অর্থ হলো "স্পষ্ট বা পরিস্কার" আর "ড্রিম" মানে যে "স্বপ্ন" এটা আমরা সবাই জানি। লুসিড ড্রিম হলো সেই স্বপ্ন যেটা আপনার স্পষ্টত মনে থাকে (এমনকি স্বপ্নের মাঝে অন্ততপক্ষে এতোটুকু উপলব্ধি করতে পারবেন যে আপনি সত্যিই স্বপ্ন দেখছেন) এবং আপনি আপনার স্বপ্নটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

কি বিষয়টা মাথায় ঢুকলো না তাইতো??

আচ্ছা মনে করুন আপনি রাতে স্বপ্ন দেখছেন যে আপনি দশতলা বিল্ডিং হতে লাফ দিয়ে পড়ে যাচ্ছেন (ওহ মাই গড...দশতলা হতে মাটিতে পড়লে তো আপনি এমনিই মারা যাবেন) এবার আপনি যদি আপনার এই স্বপ্নটাকেই মোডিফাই করে একটা গদির ওপর পড়েন তাহলে কেমন হবে ভাবুন তো?!
হুমমম....এমনি স্বপ্নের মাঝে নিজের ইচ্ছায় স্বপ্নটাকে নিয়ন্ত্রণ করায় হলো লুসিড ড্রিম!

লুসিড ড্রিম কিভাবে হয়?

মূলত আমাদের ঘুমের সময় REM Sleep এর সময়ই হতেই লুসিড ড্রিম এর সূত্রপাত হয়, REM sleep হলো Rapid Eye Movement অর্থাৎ ঘুমের মাঝেই চোখের পাতার নড়নচড়ন।

সাধারণত আমাদের মনের দুইটা অংশ থাকে (১) সচেতন মন (২) অবচেতন মন; আমরা স্বপ্ন দেখি অবচেতন মনে কিন্তু স্বপ্নের মাঝে সচেতন মন খানিকটা সক্রিয় হলেই এই লুসিড ড্রিম হয়।

আচ্ছা লুসিড ড্রিম দিয়ে কি হয়?!

আমরা সাধারণত ঘুমের মাঝে যেসব স্বপ্ন দেখি সেগুলির বাস্তব জীবনে মূল্যায়ন বা প্রয়োগ তথা প্রভাব তেমন একটা থাকে না; অন্যদিকে লুসিড ড্রিম আপনার পুরো লাইফটাই পাল্টে দিতে পারে।

মনে করুন আপনি স্বপ্নের মাঝে প্রতিদিন সাপের দৌড়ানি খাচ্ছেন কিংবা একটা অশরীরী আত্মা এসে বারবার আপনাকে ভয় দেখাচ্ছে, এভাবে কয়দিন আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন?
দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ এমন ভয়ংকর স্বপ্ন আপনার পুরো লাইফটাই ডিস্ট্রয় করে দেওয়ার জন্য এনাফ, একটা সময় হয়তো আপনি ঘুমুতে যেতেই ভয় পাবেন তাইনা??!

আর আপনি যদি লুসিড ড্রিম করতে পারেন তাহলে সাপকে লাঠি দিয়ে মেরে মনের শক্তি বাড়াতে পারেন,অন্যদিকে সচেতন মাইন্ড "ভূত বলতে কিচ্ছু নেই" বলে অশরীরী'টাকে তাড়াতে পারেন.....কত্তো মজার লুসিড ড্রিম তাইনা?

লুসিড ড্রিম আপনার দুঃস্বপ্নকে সুন্দর স্বপ্নে রূপান্তরিত করাতে সক্ষম, স্বপ্ন বিষয়টাকে আপনার লাইফে বেস্ট মোটিভেশন হিসেবে তুলে ধরবে এবং সর্বোপরি আপনার লাইফে সফলতা বয়ে নিয়ে আসবে।

ধারনা করা হয় লুসিড ড্রিম এর মাধ্যমে আপনার অবচেতন মনকে সচেতন মন স্পেসিফিক ইন্ডিকেশনে পরিচালিত করে অন্যের মনের গোপন কথা জানতে সহায়তা করে কিংবা আপনার মনের আবেগ অনুভূতি অন্যের মনের মাঝে ঢুকিয়ে দিতে পারে ফলে আপনি চাইলেই সহজেই লুসিড ড্রিম এর সাহায্যে আপনার স্বার্থসিদ্ধি করতে পারেন (বিষয়টা আপনি হিপ্নোসিস এর সাথে তুলনা করলে এখনে পাত্র আপনি নিজেই এবং সম্মোহক মানুষটাও আপনি নিজেই....মোদ্দকথা বিষয়টাকে হয়তো সেল্ফ হিপ্নোসিস এর সাহায্যে ব্যখ্যা করা সম্ভব)।

লুসিড ড্রিম কিভাবে করবেন?

আপনি চাইলেই কিন্তু লুসিড ড্রিম বিষয়টাকে আয়ত্তাধীন করতে পারেন; এমনি লুসিড ড্রিমের জন্য যে রাতের বেলায় ঘুমুতে হবে এমনটাও নয়।
লুসিড ড্রিম এর জন্য মেডিসিন থেকে শুরু করে মেডিটেশন পর্যন্ত বিভিন্ন পদ্ধতি আছে; আমি আপনাকে সবচেয়ে সহজ উপায়টাই শিখিয়ে দিচ্ছি....

আপনি প্রতিদিন রাতে ঘুমুতে যাওয়ার আগে আপনার মনকে বলুন " আজ আমি লুসিড ড্রিম করবো" ব্যাস এতোটুকুই এনাফ!

ভাবছেন মজা করছি... উহু আমি কিন্তু সত্যিই সিরিয়াস!!

আপনি যখন সচেতন মনে আপনার অবচেতন মনকে কমান্ড দিচ্ছেন "লুসিড ড্রিম" করতে চান তখন আপনার অবচেতন মন এমনিতেই স্বপ্ন দেখার সময় আপনার ব্রেইনের সচেতন মনটাকে জাগ্রত করবে এবং আপনি আপনার স্বপ্নের কনট্রোল করতে পারবেন।

কি বিশ্বাস হচ্ছে না...তাহলে পরীক্ষার আগের রাতে ঘড়িতে এলার্ম দিয়ে রাখলেও এলার্ম বাজার আগেই আপনার ঘুম ভেঙ্গে যায় ক্যামনে - এইটা ভাবুন তো?!

এছাড়াও আপনি চাইলে একটা ড্রিম ডায়েরী রাখতে পারেন যাতে আপনার যাবতীয় স্বপ্ন ভোরবেলা উঠে লিখে রাখবেন, এতে করেও আপনার লুডিস ড্রিম তথা স্বপ্নের এক্সেস করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

লুসিড ড্রিমের কোন সাইড ইফেক্ট আছে?

হুমম...আপনি যদি "যখন মন চাই তখনই লুসিড ড্রিম করতে পারেন" তাহলে স্বপ্ন এবং বাস্তব গুলিয়ে ফেলার আশংকা থাকে এবং হ্যালুসিনেশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে; সুতরাং অতিরিক্ত লুসিড ড্রিম আপনার লাইফে ক্ষতির কারণ হতে পারে; ব্রেইনের ওপর জোরাজুরি করা তো লক্ষী ছেলের কাজ নহে!!!

সবিশেষ শুধু একটা কথায় বলবো "আপনারা যদি জানতেন যে শুধুমাত্র ব্রেইন দিয়েই লাইফে সফলতা আনা সম্ভব তাহলে হয়তো বোকার মতোন কখনোই মন খারাপ করে হতাশ হতেন না"।

#নিশান_আহম্মেদ_নিয়ন

+4 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)
Lucid Dream : স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ

লুসিড ড্রিম বলতে এমন এক ধরনের স্বপ্ন বুঝায় যেখানে একজন মানুষ চাইলে স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ, পরিবর্তন করতে পারেন। একজন লুসিড ড্রিমার স্বপ্নের মাঝেও জেগে থাকেন এবং তিনি যে স্বপ্ন দেখছেন তা বুঝতে পারেন। স্বপ্ন দেখার সময় কোনো কিছু চিনে ফেলা হচ্ছে লুসিড ড্রিম এর প্রথম পর্যায়। আমরা যখন স্বপ্নে কাউকে চিনে ফেলি তখন আমাদের মস্তিষ্কের dorosolateral prefrontal cortex এ সাড়া জাগে এবং তা ঘুমের রেম পর্যায়ে যেতে সাহায্য করে। এখন প্রশ্ন হলো ঘুমের রেম পর্যায় আবার কি? এই পর্যায়ে কেন মানুষ লুসিড ড্রিম দেখে?

মানুষ গড়ে প্রতিদিন ঘুমের মাঝে ৪ থেকে ৬ বার স্বপ্ন দেখে। আমাদের ঘুমকে দুটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। একটি হলো Rapid Eye Movement (REM) এবং অন্যটি হলো Non Rapid Eye Movement (Non-REM)। মানুষ সাধারণত ঘুমের রেম পর্যায়েই লুসিড ড্রিম দেখে। ঘুমের এই সময়ে আমাদের মস্তিষ্ক সবচেয়ে সক্রিয় থাকে। লুসিড ড্রিম দেখার জন্য মানুষের মস্তিষ্কের  ল্যাটারাল প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স দায়ী। মস্তিষ্কের এই অংশ মানুষের যুক্তিতর্ক ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। রেম ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্কের ল্যাটারাল প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স সাধারণত নিষ্ক্রিয় ই থাকে। কিন্তু অনেক সময় এই অংশটি সক্রিয় থাকে যার ফলে আমরা যুক্তি দিয়ে বিচার করে স্বপ্ন দেখি এবং তা নিজের মতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। science bee

কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে আমরা লুসিড ড্রিম ঘটাতে পারি। এতোক্ষণে আমরা জেনেছি যে লুসিড ড্রিম হয় ঘুমের রেম পর্যায়ে, এই সময়ে মস্তিষ্ককে সজাগ রাখলে লুসিড ড্রিম দেখা যাবে। এর জন্য আপনার একবার ঘুমানোর ঠিক পাঁচ ঘন্টা পর জেগে উঠতে হবে, তারপর আবার ঘুমিয়ে পড়তে হবে। এর ফলে আপনি সরাসরি ঘুমের রেম পর্যায়ে চলে যাবেন এবং লুসিড ড্রিম দেখতে পারবেন। অন্য একটি পদ্ধতি হলো MILD (Mnemonic Induction of Lucid Dreams)। এটি এক ধরনের আবেশ পদ্ধতি। এক্ষেত্রে আপনি প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে মনে বার বার বলবেন "আমি  আজ লুসিড ড্রিম দেখবো"। এছাড়া আরো একটি পদ্ধতি হচ্ছে নিজের দেখা স্বপ্নগুলো ডায়েরি তে লিখে রাখা এবং প্রতিদিন একবার করে সেগুলো পড়া। এইসব পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনার লুসিড ড্রিম দেখার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

তবে যাদের মানসিক অসুস্থতা রয়েছে তাদের জন্য লুসিড ড্রিম ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ ঘুমানোর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেওয়া, কিন্তু লুসিড ড্রিম এর ফলে আপনি ঘুমের মাঝেও জেগে থাকবেন। যা আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলবে। এর ফলে যারা বিষণ্ণতায় ভুগেন তাদের জন্য এবং সাধারণ মানুষের জন্যও লুসিড ড্রিম ক্ষতিকর।

© Nishat Tasnim (Science Bee)

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
1 উত্তর 456 বার দেখা হয়েছে
+14 টি ভোট
1 উত্তর 427 বার দেখা হয়েছে
+32 টি ভোট
2 টি উত্তর 465 বার দেখা হয়েছে
05 মার্চ 2019 "চিন্তা ও দক্ষতা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন RakibHossainSajib (32,140 পয়েন্ট)
+3 টি ভোট
2 টি উত্তর 2,334 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 216 বার দেখা হয়েছে

10,776 টি প্রশ্ন

18,469 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

271,535 জন সদস্য

103 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 101 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Shariar Rafi

    420 পয়েন্ট

  2. Tazriyan

    190 পয়েন্ট

  3. Khandoker Farhan

    110 পয়েন্ট

  4. Eyasin

    110 পয়েন্ট

  5. rr88actor

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...