মায়িশা বিনতে জামান-
আয়তনের হিসেবে বাতাসে ৭৮.০৯% নাইট্রোজেন, ২০.৯৫% অক্সিজেন, ০.৯৩% আর্গন, ০.৩৯% কার্বন ডাই অক্সাইড এবং স্বল্প পরিমান অন্য গ্যাস থাকে। এ ছাড়াও বাতাসে বিভিন্ন মাত্রার জলীয় বাস্প থাকে। যেমন, গড়ে সমুদ্রতলে ১% ও সামগ্রিক বায়ুমণ্ডলে ০.৪%। আমরা যখন শ্বাস গ্রহণ করি তখন আমাদের ফুসফুস প্রসারিত হয় এবং আমাদের মুখ ও নাক দিয়ে শরীরের ভেতরে বাতাস ঢুকে পড়ে। এখন এই বাতাসে তার সব কয়েকটি উপাদানই মিশ্রিত অবস্থায় থাকে। কারণ নাকের মধ্যে অক্সিজেনকে আলাদা করে গ্রহণ করার কোনও ব্যবস্থা নেই। আর এরা গন্ধহীন বলে বোঝাও যায় না, ঠিক কী গ্রহণ করা হল। তাই নাককে দারোয়ান বলা যাবে না। তবে নাকে সিলিয়া (নাকের চুল) থাকে। এরা কঠিন পদার্থকে আটকে দিতে পারলেও গ্যাসকে পারে না।
নাক ও মুখ দিয়ে নেওয়া বাতাস আমাদের শ্বাসনালি হয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং ব্রঙ্কিয়াল টিউবের ভেতর দিয়ে সেই বাতাস শেষ অব্দি অ্যালভিওলাই (বায়ু থলি)-তে ঢোকে। এখানেই অক্সিজেন গ্রহণের মূল কাজটি সম্পন্ন হয়। কারণ অ্যালভিওলাই-এর সরু দেওয়ালের মধ্যে দিয়ে শুধুমাত্র বাতাসের অক্সিজেনের সংশ্লিষ্ট ক্যাপিলারি (রক্তবাহ)-তে প্রবেশাধীকার মেলে। রক্তের লোহিত কণিকায় থাকা হিমোগ্লোবিন বায়ু থলি থেকে রক্তে অক্সিজেনকে বাহিত হতে সাহায্য করে। খুবই সামান্য পরিমান নাইট্রোজেনও কিন্তু রক্তে মিশ্রিত হয়। এই নাইট্রোজেন নিস্ক্রিয় অবস্থায় থাকে এবং শরীরের কোনও ক্ষতি করে না। পরে অবশ্য সেই নাইট্রোজেন প্রশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। আমরা যখন আঙুল মটকাই বা ঘাড় নাড়াই তখন যে শব্দ শুনতে পাই তা আসলে সন্ধিস্থল থেকে বেরিয়ে আসা নাইট্রোজেনের কারণেই ঘটে।