ঘুম না হওয়ার নানারকম কারণ আছে।
১) শোওয়ার ঘরে বেশি শব্দ বা সেখানে বেশি গরম বা বেশি ঠান্ডা
২) বিছানা অপরিষ্কার বা যথেষ্ট আরামদায়ক নয়
৩) নির্দিষ্ট কোনো রুটিন না থাকা অথবা পর্যাপ্ত পরিমাণ শারীরিক পরিশ্রমের অভাব
৪) রাতে বেশি খেলে ঘুমোতে অসুবিধা হতে পারে
৫) সিগারেট, মদ বা ক্যাফেইন যুক্ত কোনো পানীয় যথা চা বা কফি গ্রহণ : মানুষের ঘুমের ওপর বিভিন্ন ওষুধ ও নেশাকারক দ্রব্যের প্রভাব রয়েছে। ঘুমের ওষুধও অনিদ্রা সৃষ্টি করে। বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য যেমন ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইন, পোথেডিন, কোকেন, এলএসডি প্রভৃতি সমানভাবে অনিদ্রার জন্য দায়ী। উত্তেজক পানীয় যেমন চা, কপি, চকোলেট অনিদ্রা ঘটায়। ধূমপানেও অনিদ্রা হয়। জরিপে দেখা গেছে, যে লোক দিনে ১০টার বেশি সিগারেট খায় এবং তার সাথে চা বা কফি খায় তার অনিদ্রায় ভোগার সম্ভাবনা থাকে সবচেয়ে বেশি। স্নায়ু নিস্তেজ করা উত্তেজক ওষুধ, থাইরয়েড গ্রন্থির চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ, হরমোনজাতীয় ওষুধ যেমন গর্ভনিরোধক বড়ি, হৃদরোগ ও উচ্চরক্তচাপের বিভিন্ন ওষুধ, ঘুমের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব ফেলে অনিদ্রা ঘটায়।
৬) মানসিক অশান্তি, কর্মক্ষেত্রে অসুবিধা ও সেই সংক্রান্ত মানসিক চাপ :অনিদ্রার জন্য সবচেয়ে বেশি যে কারণটিকে দায়ী করা হয় তা হলো মানসিক কারণ। পারিবারিক জটিলতা, দাম্পত্য কলহ, অর্থনৈতিক সমস্যা, স্থান বা কাজের পরিবর্তন, বেকারত্ব, যৌনতৃপ্তি, কল্পনার সাথে বাস্তবের অসঙ্গতি, দুশ্চিন্তা, বিষন্নতা প্রভৃতি কারণ অনিদ্রার জন্য দায়ী। এ ছাড়া সিজোফ্রেনিয়ার এবং বিভিন্ন মানসিক রোগের রোগীরা অনিদ্রায় ভোগে।
৭) দুশ্চিন্তা, বিষাদ ও দৈনন্দিন ব্যাপারে সবসময় চিন্তা করা
৮) ঘুমোতে যাওয়ার আগে দীর্ঘক্ষণ টিভি দেখা বা মোবাইল ফোন ব্যবহার
অনিদ্রা দূর করার উপায় অনিদ্রার কারণগুলো চিহ্নিত করে তার চিকিৎসা করাতে হবে। দিবানিদ্রার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। বিছানায় অযথা শুয়ে থাকা চলবে না। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যেতে হবে এবং একই সময়ে শয্যা ত্যাগের অভ্যাস করতে হবে। ঘুমানোর আগে কোনো প্রকার ব্যায়াম এবং মানসিক দুশ্চিন্তা করা যাবে না। ঘুমানোর অন্তত ৪ ঘণ্টা আগে চা, কফি বা সিগারেট খাওয়া যাবে না। ভোরে হাঁটা এবং ব্যায়াম করার অভ্যাস করতে হবে। ধূমপান, মদ্যপান কিংবা যেকোনো ধরনের নেশা পরিত্যাগ করতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে অল্প গরম দুধ খাওয়া যাবে। মুখে, ঘাড়ে ঠাণ্ডা পানির স্পর্শ নিন। বিছানায় শুয়ে গান শুনুন বা প্রবন্ধ পড়ুন।