আপনার উচ্চতাভীতি আছে ৷ উচ্চতাভীতিকে ইংরেজিতে বলা হয় অ্যাক্রোফোবিয়া। গ্রিক শব্দ ‘acron’ অর্থ উচ্চতা এবং ‘phobos’ অর্থ ভয়। এই শব্দ দু’টো নিয়েই ‘Acrophobia’ নামের উৎপত্তি।
অ্যাক্রোফোবিয়া কাটিয়ে ওঠার জন্যে প্রথমেই যা দরকার, তা হচ্ছে আক্রান্ত ব্যক্তির আন্তরিক ইচ্ছা এবং প্রচেষ্টা। তিনি নিজে যদি ভয় থেকে মুক্তি পেতে চান, তাহলে মনোবিজ্ঞানী বা মনোচিকিৎসক প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন উপায়ে তাকে ভয় কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারেন।
ইতিবাচক চিন্তা করা, মেডিটেশন, হিপনোসিস এক্ষেত্রে কাজে দিতে পারে।
ভয় কাটিয়ে ওঠার চিকিৎসা হিসেবে ‘সিস্টেম্যাটিক ডিসেনসিটাইজেশন’ পদ্ধতি ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে রোগীকে নিয়ন্ত্রিত ও নিরাপদ পরিবেশে রেখে ধীরে ধীরে তার ভয়ের সম্মুখীন করা হয়। যেমন- অ্যাক্রোফোবিক ব্যক্তিকে মই বা উঁচু সিঁড়ি বেয়ে ওঠা এবং ধীরে ধীরে ধাপ সংখ্যা বাড়িয়ে অধিকতর উচ্চতায় উঠতে অভ্যস্ত করে তোলা হয়, উঁচু দালান বা পাহাড় থেকে তোলা ছবি দেখানো হয়। এতে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে এরপর রোগীকে উঁচু দালানের ব্যালকনি বা ছাদ থেকে নিচে তাকানো, চলন্ত সিঁড়িতে চড়া- এসব কাজে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়ে তার ভয় কাটানো যেতে পারে। তবে এ সময় বিশ্বস্ত কেউ অবশ্যই রোগীর সঙ্গে থাকা জরুরী।
রোগীর উদ্বেগ কাটানোর জন্যে স্বল্প বা দীর্ঘ মেয়াদে কিছু ঔষধও সেবন করতে হতে পারে।
এটির চিকিৎসার আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে- ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি এক্সপোজার থেরাপি (VRET)। ১৯৯৫ সাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসা এ পদ্ধতিটি অ্যাক্রোফোবিয়ার চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকর বলে জানা যায়।
মনের ছোট ছোট ভয় বা আতঙ্ক দূর করতে ওয়েক আপ ক্লাউড ওয়েবসাইটে দেওয়া পরামর্শগুলো একবার দেখে নিতে পারেন।
১. প্রথমে ভালো করে লক্ষ করুন, কোন বিষয়গুলোতে আপনি ভয় পাচ্ছেন। সেখানে ভয় পাওয়ার মতো কোনো বিষয়ের অস্তিত্ব আছে কি না। যে ভূতের সিনেমা দেখে আপনি ভয় পাচ্ছেন, সেটার শেষ পর্যন্ত কী ঘটে। আবার ভাবুন, আপনি সিনেমা দেখেই ভয় পাচ্ছেন আর যে নায়ক বা নায়িকা ভূতের চরিত্রে অভিনয় করল, তাদের তো ভয়ে মরেই যাওয়া উচিত, তাই না? যখনই কোনো ভূতের সিনেমা দেখবেন, তখন সেই নায়ক বা নায়িকার কোনো রোমান্টিক সিনেমার গানের কথা ভাবতে থাকুন। দেখবেন, ভয় দূর হয়ে আপনি মনে মনে হাসতে শুরু করবেন।
২. অনেক সময় কৌতূহলের কারণেও মনের ভয় দূর হয়। আপনি যদি মনের মধ্যে ভয় পুষে রাখেন, তাহলে তা কোনো দিনই দূর হবে না। যে বিষয়টাতে আপনি ভয় পাচ্ছেন, সেই বিষয়ে কৌতূহলী হয়ে উঠুন। দেখবেন, যখন পুরোটা জেনে যাবেন, তখন আর ভয় কাজ করবে না।
৩. ভয় পেলে সঙ্গে সঙ্গে কোনো না কোনো কাজ করতে থাকুন। কোনোভাবেই চুপচাপ বসে থাকবেন না। কাজের মধ্যে থাকলে ভয়ের কথা আপনি একসময় ভুলে যাবেন।
৪. প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলুন। এটা আপনার ভয় কাটাতে সাহায্য করবে। ইতিবাচক কথাগুলো আপনার মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা ভয়কে দূর করবে।
৫. বই পড়ুন। প্রিয় লেখকের বই আপনার সব ধরনের বিষণ্ণতা, ভয়, আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। বিশেষ করে থ্রিলার বা গোয়েন্দা টাইপের বই পড়ুন, যা আপনার মস্তিষ্ককে অন্যদিকে ধাবিত করবে।
৬. বেশি করে খান। চট করে পছন্দের খাবারটি তৈরি করে ফেলুন। দেখবেন, এক নিমেষেই আপনার মন ভালো হয়ে যাবে। আর ভয়, সেটা তো রান্না করতে করতেই ভুলে যাবেন
। ৭. সাধারণ ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করুন। দেখবেন, আপনার ক্লান্তি দূর হবে। মস্তিষ্ক সতেজ মনে হবে। দেখবেন, ভয়ের কারণে আপনার শরীরে যে ভার অনুভব করছেন, তখন সেটা অনেক হালকা মনে হবে।
৮. প্রার্থনা করুন। প্রার্থনা ধ্যান করার মতো। দেখবেন, মনের ভয় বা আতঙ্ক সহজেই দূর হয়ে যাবে।