Nishat Tasnim-
বেঁচে থাকার জন্য পানি-বাতাসের মতো খাদ্যও দরকার। পোকামাকড় থেকে হাতি পর্যন্ত না খেয়ে কারোর চলে না। গাছপালারাও না খেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে না। একবেলা না খেলেই মজা টের পাওয়া যায়, পুরো দিন হলে তো আর কথাই নেই।
আমরা যে কাজই করি না কেন তাতে শক্তি ব্যয় হয়, মানে কোষসমূহ নষ্ট হতে থাকে। তাদের নতুন করে তৈরি করার জন্য শরীরের পক্ষে খাবার খাওয়া দরকার। শুধু পুষ্টির জন্যই নয়, শরীরে শক্তির জন্যও বটে।
তবে কথা হলো কিছু না খেয়ে কতদিন বাঁচা যায়? কয়েক ধরনের জীব আছে যারা শরীরের মধ্যে খাদ্য জমা করে রেখে অনেকদিন ধরে খাবারের কাজ চালায়। লক্ষ করে দেখা গেছে যে একটা জীব যত ছোট হয় সে তত তড়বড় করে বেড়ায়। এজন্য তার বেশি খাবারের প্রয়োজন হয়। যেসব জীবের শরীরে গরম রক্ত থাকে (মাছ, সাপ এদের হয় ঠাণ্ডা রক্ত) তাদের শরীরে খাবার খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায়। কুকুর বিশ দিন পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে পারলেও ছারপোকা জাতীয় জীবেরা বছরখানেকেরও বেশি সময় না খেয়ে কাটাতে পারে।
মানুষের পক্ষে কিন্তু শরীরের অভ্যন্তরে খাবার সঞ্চয় করা সম্ভব নয়। সাধারণ অবস্থায় খাবার বাদ দিলেই সে কাহিল হয়ে যাবে। শরীরকে গরম রেখে রক্ত চলাচল অব্যাহত রাখার জন্য খাবার পাওয়া দরকার। কেননা শরীরের সব উপাদানই খাবার থেকে আসে। এসব উপাদনের যদি কমতি দেখা দেয় তাহলেই পাকস্থলীতে গণ্ডগোল বেধে গিয়ে মস্তিষ্কে খবর পৌঁছবে। আর তখনই আমরা বুঝতে পারি যে খিদে পেয়েছে।
তবে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অনশনের পরও বেঁচে থাকার নজির পাওয়া যায় বটে। স্কটল্যান্ডের অ্যাঙ্গাস ওয়ারভিয়ের্ন নামের একজন ১৯৬৫ সালের জুন থেকে ১৯৬৬’র জুলাই পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৮২ দিন শুধু চা, কফি, জল আর সোডা খেয়ে দিব্যি কাটিয়ে দিয়েছিলেন। খালি পানি আর সোডা খেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার এক ভদ্রমহিলা ১০২ দিন ছিলেন। শুধু এক গ্লাস করে পানি খেয়ে নিউজিল্যান্ডের স্টিভেন টেল ৪০ দিন কাটিয়েছিলেন।
তবে এগুলো হলো চমক লাগানো ঘটনা। এদের শরীরে নিশ্চয়ই বিশেষ কিছু আছে যার ফলে কিছু না খেয়েও এরা বেশ কিছুদিন চালাতে পারেন। সাধারণ লোকের পক্ষে এক সপ্তাহের বেশি সময় খাবার না খেয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর ব্যাপার।
©ইমরুল ইউসুফ