Nishat Tasnim-
না, কথাটি ঠিক না। বহু বছর ধরেই আমাদের সমাজে এই কথাটি প্রচলিত আছে। অভিজ্ঞতা হয়তোবা তা মানবে না। কিন্তু চুল ছাঁটা বা মাথা মোড়ানোর সাথে চুল বাড়বে এমন কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য আজ পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি।
প্রথমেই বলি, কেন যুগ যুগ ধরে এটা মানুষ বিশ্বাস করে আসছে। চুল বাড়ার হার কেমন হবে সেটা আমাদের খাদ্যভ্যাসের ওপর কিছুটা নির্ভরশীল। যারা সাধারণত ছোটবেলাতেই চুল টাক করে ফেলত চুল পরবর্তীতে ভালো করে গজাবে সেই উদ্দেশ্যে, তাদের পরিবার স্বাভাবিক খাওয়া দাওয়া নিয়ে যত্নশীলও থাকত। সেজন্য পুষ্টিসম্মত খাদ্যগ্রহণের কারণেই তাদের চুল পরিপুষ্ট থাকত।
মানুষ চুল বাড়ানোর জন্য কখনো গোড়া ছেটে দেয়(ট্রিমিং) কখনো বা সব চুলই ফেলে দেয়(শেভিং)। দুটোর ক্ষেত্র দুধরনের। ট্রিমিং করা মানে চুলের অপরিপুষ্ট চুলগুলা পরিপুষ্ট চুল থেকে ছেটে আলাদা করে ফেলা। বিভিন্ন কারনে চুলের আগা ফেটে যায় বা পুষ্টিহীন হয়ে যায়। এটা ড্যান্ড্রাফের কারনে হতে পারে বা বাহ্যিক কোন কারনে হতে পারে। এসব পুষ্টিহীন চুল মাথার ত্বক থেকে স্বাভাবিকভাবে পুষ্টি নিয়ে বড় হতে পারে না। এখন এসব চুল ছেটে ফেলে দিলে বাকি চুল স্বাভাবিকভাবেই বড় হবে। কিন্তু অপরিপুষ্ট যেসব চুল বড় হচ্ছিল না, সেগুলা আর না থাকার কারণে বৃদ্ধিটা অসামঞ্জস্য বা কম মনে হবে না।
এখন আসি শেভিং এ। ছোটবেলায় শেভিং করলে চুল মোটা হয়, তাড়াতাড়ি বাড়ে এগুলো কে না শুনেছি। চুলের গঠন হচ্ছে, বাইরে হেয়ার ফলিকল, তার ভেতরে কর্টেক্স, তার ভেতর মেডুলা। এখন কর্টেক্স এর গঠন এর ওপর আমাদের চুলের গঠন নির্ভর করে। কর্টেক্স শক্তিশালী হলে আমাদের চুল শক্তিশালী হবে। ঘনত্বও এর উপরই নির্ভরশীল। আর হেয়ার ফলিকল হচ্ছে আমরা বাইরে থেকে যা দেখতে পাচ্ছি। হেয়ার ফলিকল এর দৈর্ঘ্যও এই কর্টেক্স এর গঠন এর ওপর অনেকখানি নির্ভর করে।মাথা শেভ করলে এই কর্টেক্স এর কোন পরিবর্তন করা যায় না। মাথায় যদি অপুষ্ট চুল থাকে, যা বাহ্যিক কোন কারণে (খুশকি বা বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে টাক করলে চুল তার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেতে পারে। তবে জেনেটিক্যালি যদি আপনার চুল কম থাকে, তবে বার বার শেভিং করলেও চুল বেশি করে গজাবে এমন ধারণা রাখা ভুল।
©শ্রেয়সী