বাইরে থেকে যখন কোন রোগজীবাণু শরীরে ঢুকেছে বলে শরীর বুঝতে পারে, তখন সেই ব্যবস্থা লড়াইয়ের জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে। একে বলা হয় শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধক প্রতিক্রিয়া।
শরীর তখন কিছু রাসায়নিক এবং সাদা রক্ত কোষ তৈরি করে যার ফলে প্রদাহ দেখা দেয়। রক্তের ওই সাদা কোষগুলো সংক্রমিত কোষগুলোকে মেরে ফেলে।
কিন্তু করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া কাজ করে না। শরীর এই জীবাণুর আক্রমণ ধরতে পারে না। ফলে আপনাকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে স্বত:প্রণোদিতভাবে প্রতিরোধ দিতে পারে না।
এর জন্য আপনার দরকার এমন একটা প্রতিরোধ ক্ষমতা, যেটা আপনার শরীর আলাদাভাবে গড়ে তুলেছে।
এই ব্যবস্থায় দেহকোষকে সুনির্দিষ্টভাবে ওই ভাইরাসকে লক্ষ্য করে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে হবে। যে অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধক রাসায়নিক, ভাইরাসকে ঠেকাতে তার গায়ে সেঁটে থাকতে পারবে এবং সাদা রক্ত কোষ যাকে 'টি সেল' বলা হয় সেগুলো শুধু সংক্রমিত কোষগুলোকে মেরে ফেলতে পারবে।
একে বলা হয় সেলুলার রেসপন্স বা সুনির্দিষ্ট কোষ মোকাবেলার প্রক্রিয়া। কিন্তু এর জন্য সময় লাগে।
গবেষণায় দেখা গেছে করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেহকোষকে লক্ষ্য করে লড়াই চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরি করতে শরীরে প্রায় দশ দিন সময় লাগে। আর সবচেয়ে খারাপভাবে আক্রান্ত ব্যক্তির সবচেয়ে জোরালো প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়।
এইভাবে গড়ে তোলা প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি যথেষ্ট শক্তিশালী হয়, তাহলে শরীর একই ধরনের ভাইরাস সংক্রমণের কথা মনে রাখতে পারে এবং ভবিষ্যতে চেনা শত্রু হিসাবে এর মোকাবেলা করতে পারে।
কিন্তু কারো যদি সামান্য উপসর্গ দেখা দেয়, বা কোন উপসর্গই না হয়, তাহলে শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা সেই ভাইরাসের কথা মনেই রাখে না, কারণ তাকে আগে ওই ভাইরাস মোকাবেলার জন্য সুনির্দিষ্ট প্রতিরোধ যথেষ্ট মাত্রায় তৈরি করতে হয়নি।