Hasan Saikat-
টিকটিকি বা এর মল্মুত্র কোনটাই বিষাক্ত নয়। সাধারণ গৃহ টিকটিকি (Hemidactylus frenatus) যা একেবারেই নির্বিষ বা বিষাক্ত নয়। টিকটিকি চেনে না এমন মানুষ নেই! পৃথিবীতে প্রায় সব দেশেই টিকটিকি পাওয়া যায়। তবে এই নিরীহ উপকারী প্রাণীকে নিয়ে মানুষের কুসংস্কার ভ্রান্ত ধারণা ও ঘেন্নার শেষ নেই। এদের সম্মন্ধে একটা বদনাম আছে এরা নাকি ভয়ঙ্কর বিষাক্ত! খাবারে পড়লে তো আর রক্ষা নেই সরাসরি পটলডাঙ্গার টিকিট কাটতে হবে। এমনকি এর মলও নাকি মারাত্মক বিষাক্ত! একটা কথা বলি কখনো জীবনবিজ্ঞান বইতে পড়েছেন টিকটিকি বিষাক্ত বা খবরের কাগজে পড়েছেন টিকটিকির মলের কারণে মৃত্যু হয়েছে? টিকটিকি বিষাক্ত না হলেও আমাদের কাছে তা অখাদ্য তাই ঘেন্না থেকে বমি হতে পারে এছাড়াও ভয় থেকে খিঁচুনি,গা গোলানো, মাথা ঝিমঝিম করতে পারে! যেমন নির্বিষ সাপ কামড়ালেও শুধুমাত্র ভয়ের কারণেই হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয় মানুষের তেমনই তা টিকটিকির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য!
টিকটিকি বিষাক্ত নয় বুঝলাম! কিন্তু তার মলেও কি বিষ নেই? অনেকে যে বলে টিকটিকির মলে সাদা অংশটাই নাকি বিষাক্ত??
না সেটাও বিষাক্ত নয় ওই সাদা অংশটা আসলে ইউরিক এসিড! এই এসিড আমাদের রক্তের থাকে রেচন পদার্থ হিসেবে। আমাদের রক্তে ইউরিক এসিড বাড়লে গেঁটে বাত হয়। টিকটিকির মলে থাকা সামান্য ইউরিক এসিড অন্ততঃ মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে না। তবে সাধারণ সব সরীসৃপের মতো টিকটিকির শরীরেও সালমোনেলা জাতীয় ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। সেই খাবার খেয়ে বমি ও ডাইরিয়া হতে পারে। তবে সব টিকটিকির গায়েই যে সালমোনেলা থাকবে এমন ভাবারও দরকার নেই আর খাবারে পরে যদি টিকটিকি সেদ্ধই হয়ে যায় তবে তার জীবাণুরও মৃত্যু হয়! সালমোনেলা বড়দের জন্য খুব মারাত্মক না হলেও বাচ্চাদের জন্য ভয়ানক! তাই খাবারে টিকটিকি, ব্যাঙ পড়লে সন্দেহ হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এছাড়াও বাচ্চারা ব্যাঙ, শামুক ধরলে ভালো করে হাত ধুতে বলুন কারণ এরাও এই ব্যাকটেরিয়া বহন করে। টিকটিকি খুবই উপকারী প্রাণী ওরা প্রচুর মশা খেয়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া, ফাইলেরিয়া, এনকেফেলাইটিস ইত্যাদি মশাবাহিত রোগ ও মাছি বাহিত প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই আমরা টিকিটিকে দোষ দেওয়ার আগে নিজের খাবার সব সময় ডেকে রাখবো! শুধু টিকটিকি নয় কোন পোকামাকড় খাবারে পড়ুক কেউই চায় না তাই আমরা যদি একটু সতর্ক হই তাহলেই মিটে যায়।