Nishat Tasnim
গোপন, লুকানো ও নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের বাড়তি কৌতূহল রয়েছে। সেই কৌতূহল থেকেই মানুষ অভিযান করে, গবেষকরা খুঁজে বেড়ান রহস্যময়তার পেছনের রহস্য। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বন আমাজন তেমনই এক রহস্য। পৃথিবীর মানচিত্রের দিকে তাকালে সবুজে আচ্ছন্ন সবচেয়ে বড় ভাগটি আমাজনের। গরম আবহাওয়াচ্ছন্ন এই রেইন ফরেস্ট মোট নয়টি দেশজুড়ে বিস্তৃত। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের উত্তরভাগে ছড়িয়ে রয়েছে বনটি। বনের প্রায় ৬০ শতাংশ রয়েছে ব্রাজিলে। ব্রাজিল ছাড়াও পেরু, কলম্বিয়া, বলিভিয়া, ভেনেজুয়েলা, গায়ানা, সুরিনাম এবং ফ্রেঞ্জ গায়ানা আমাজন বিস্ময়ে ডুবে রয়েছে। ৫৫ লাখ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত এই বনের অনেক স্থানেই এখনো মানুষের পা পড়েনি। মানুষ চাঁদে পা ফেলেছে, গুহার অন্ধকারে নেমেছে, ডুব দিয়েছে মহাসাগরেও— কিন্তু আমাজনের গোপনীয়তা ভাঙতে পারেনি সবটুকু। দক্ষিণ আমেরিকার প্রায় ৪০ শতাংশই হলো এই দুর্গম আমাজন বন। পৃথিবীজুড়ে রেইন ফরেস্টের যত আয়তন, তার অর্ধেকটাই আমাজন। বিস্ময়কর এই বনের আয়তন যেমন বিশাল তেমনি বিশাল এই বনের প্রাণী ও উদ্ভিদ-বৈচিত্র্য। আমাজন বনের গহিনে মানুষের চলাচল নেই। তবে আমাজনের জেগে থাকা সবচেয়ে বড় শহরটি রয়েছে ব্রাজিলে। ব্রাজিলের মানাস শহরটিতে ২ লাখ মানুষ বসবাস করেন। বলা যায়, আমাজন বেসিনে এটাই সবচেয়ে বড় শহর। আমাজনের ২.১ মিলিয়ন বর্গ মাইলের বেসিন অঞ্চল বিশ্বের নবম ক্ষুদ্র দেশের আয়তনের সঙ্গে সমতুল্য। রেইন ফরেস্ট আমাজনে মাত্র দুটি ঋতু রয়েছে। গ্রীষ্ম ও বর্ষা। গরমপ্রধান এই বনে ছয় মাস গ্রীষ্ম ও বর্ষা থাকে। এই বনে গুমোট গরম আবহাওয়া কখনোই সরে যায় না। প্রায় সবসময় ৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা থাকায় এই বনে পথচলা খুবই কষ্টের। এ ছাড়া এখানকার আর্দ্রতা থাকে ৭৭ থেকে ৮৮ শতাংশ। যে কারণে অল্পতেই হাঁপিয়ে যান বনে প্রবেশকারীরা। আমাজনে সারা বছর বৃষ্টিপাত হয়— এমনটি ভাবলে ভুল হবে। বরং রেইন ফরেস্ট বলা হয় এখানকার অত্যধিক আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত (বর্ষা মৌসুমে) এবং গরম আবহাওয়ার কারণে।