কোনো পরিশ্রম করলে শরীর মাত্রাতিরিক্ত ঘামে, এর কারণ কি? এর কি কোন ক্ষতিকর দিক আছে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+10 টি ভোট
585 বার দেখা হয়েছে
"লাইফ" বিভাগে করেছেন (123,400 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+2 টি ভোট
করেছেন (123,400 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

Nishat Tasnim-

অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হওয়ার সমস্যা অনেকেরই রয়েছে। মোট জনসংখ্যার প্রায় ১% মানুষের এই অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকে। ইংরেজিতে এটিকে 'হাইপারহাইড্রোসিস' বলা হয়ে থাকে।

শরীরে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হওয়া যেমন কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, শরীরে উপস্থিত অন্য কোনো রোগের কারণে হতে পারে আবার তেমনি কোনো কারণ ছাড়াও এই উপসর্গ দেখা দিতে পারে। শরীরের যে কোনো অংশে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হতে পারে। আবার শরীরের নির্দিষ্ট কোনো অংশেও অতিরিক্ত ঘাম সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি পরিলক্ষিত হতে পারে।

সমাধানঃ-

শরীরে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হওয়ার সমস্যা যথেষ্ট অস্বস্তিকর এবং ক্ষেত্রবিশেষে অবমাননাকর হলেও, খুশির বিষয় হলো প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা হলে ক্ষেত্রবিশেষে ডারমাটোলজিস্টরা ওষুধ গ্রহণ, বোটক্স ইনজেকশন নেয়া বা সার্জারির মাধ্যমে ঘাম তৈরি করা গ্রন্থিগুলো অপসারণের পরামর্শ দিতে পারেন।

তবে শরীরের কোন অংশে ঘাম হয়, তার উপর নির্ভর করে কোন ধরণের চিকিৎসা নেয়া হবে।

বগলের নিচে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার সমস্যা থাকলে বোটুলিনাম টক্সিন ইনজেকশন কার্যকর হতে পারে।

বোটুলিন এক ধরণের বিষাক্ত পদার্থ যেটি ঘাম তৈরি করা গ্রন্থিগুলোর সাথে যুক্ত স্নায়ুগুলোর কার্যক্ষমতা থামিয়ে দেয়, ফলে ঘাম তৈরি হয় না।

তবে এই পদ্ধতি স্থায়ী নয়, ওষুধের ডোজের ওপর নির্ভর করে প্রতি ছয় থেকে নয় মাসে এই পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি করতে হয়।

ঘামের সমস্যার স্থায়ী সমাধান পেতে সার্জারি করতে হবে, যেটিকে এন্ডোস্কোপিক ট্রান্সথোরাসিক সিম্যাথেকটমি বলা হয়।

এই সার্জারির মাধ্যমে ঘাম তৈরি হওয়ার গ্রন্থিগুলোর সাথে সংযুক্ত স্নায়ুর সংযোগ ছিন্ন করা হয়।

এই সার্জারি করে হাত ঘামার সমস্যা সমাধানে প্রায় ৯৯% সফলতা পাওয়া যায়।

তবে এই সার্জারির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। একটি সমস্যা হলো, শরীরের যেসব অংশে ঘাম তৈরি হওয়ার কথা ছিল সার্জারির ফলে সেসব অংশে ঘাম সৃষ্টি হচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু ঘাম তৈরিকারি গ্রন্থিগুলো শরীরে ঘাম উৎপন্ন করছে। এরকম ক্ষেত্রে, উৎপন্ন ঐ ঘাম শরীরের অন্যান্য অংশ দিয়ে নির্গত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

অর্থাৎ, আপনি হাতে অতিরিক্ত ঘামের জন্য সার্জারি করার ফলে হাতে ঘাম তৈরি হলো না কিন্তু শরীরের অন্যান্য অংশে ঘামের পরিমাণ সাধারণ সময়ের চেয়ে বেড়ে গেলো। ঘামের কারণে কাপড় নোংরা হলেও এটি আসলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের একটি উপায়।

সাধারণত শরীরের নিচের অংশে বা ঘাড়ে এই অতিরিক্ত ঘাম সৃষ্টি হয়ে থাকে। আরেকটি ঝুঁকি হলো, সার্জারির পর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

তবে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যত কম বয়সে হাইপারহাইড্রোসিস বা অতিরিক্ত ঘামের এই সমস্যা সমাধান করা যায় ততই ভাল।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ধরণের অষুধ গ্রহণ করা কোনভাবেই উচিত নয়।

"ঘামের সমস্যা যদি এত বেশি থাকে যে আপনার দৈনন্দিন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।"

এছাড়া হঠাৎ যদি ঘামের সমস্যা শুরু হয়, তাহলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অনেক সময় কোনো রোগের ওষুধ নেয়া শুরু করার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘামের সমস্যা তৈরি হতে পারে। সেরকম ক্ষেত্রেও চিকিৎসকের পরার্মশ নেয়া উচিত।"

আর যাদের অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা রয়েছে, তাদের ঘামের সমস্যা যদি টানা ৬ মাস ধরে চলতে থাকে সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত। পারিবারিকভাবে অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকলে বা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট একটি সময়ে, যেমন রাতে, ঘামলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

©Soikat Hossian

0 টি ভোট
করেছেন (9,000 পয়েন্ট)
কেউ কেউ আছেন, গরমকালে আর্দ্র আবহাওয়ায় এত ঘামেন যে মনে হয় গোসল সেরে এসেছেন। ভিজে চুপচুপে হয়ে যায় জামাকাপড়, কাপড়ে ঘামের দাগ লাগে, দুর্গন্ধ হয়, ভারি বিব্রতকর ব্যাপারগুলো। ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরীর উষ্ণ আবহাওয়ায় তাপমাত্রা হারায়। ফলে শরীর শীতল হয়। এটি দেহের একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত ঘাম হওয়াটা কখনো রোগের উপসর্গ হতে পারে বৈকি।

ঘাম কি রোগের কারণে?

-জ্বর হলে ও জ্বর ছাড়ার সময় দেহ তাপমাত্রা দ্রুত হারায় ও প্রচুর ঘাম হতে পারে। এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। আবার ব্যায়াম বা ভারী কায়িক শ্রমেও ঘাম হবেই। কারও কারও উদ্বেগ বা টেনশনে ঘাম হয়। সাধারণত উদ্বেগজনিত রোগে হাত-পায়ের তালু বেশি ঘামে। ওজনাধিক্য ও স্থূল ব্যক্তিরাও বেশি ঘামেন। এটা দেহের বিপাক ক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত।

-থাইরয়েড হরমোনের আধিক্য হলে অতিরিক্ত ঘাম হতে থাকে। এর সঙ্গে থাকে ওজন কমে যাওয়া, বুক ধড়ফড়, হাত-পা কাঁপা ইত্যাদি উপসর্গ। ডায়াবেটিসের রোগী হঠাৎ খুব ঘামতে থাকলে সতর্ক হবেন। রক্তে শর্করা কমে গেলে এমন হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে গ্লুকোমিটারে শর্করা পরীক্ষা করুন, কম থাকলে চিনি বা শর্করাজাতীয় খাবার গ্রহণ করুন।

-বুকে ব্যথা ও ঘামতে থাকা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। এ ধরনের সমস্যা হলে সাবধান হওয়া উচিত। নানা ধরনের ওষুধ আছে, যাতে বেশি ঘাম হয়। চিকিৎসককে সে বিষয়ে বলুন।

-কিছু ক্যানসার, যেমন লসিকা গ্রন্থির ক্যানসারে প্রচুর ঘাম হয়। এই ঘাম বেশি হয় রাতের বেলা। আড্রিনাল গ্রন্থির টিউমার ফিওক্রমোসাইটোমাতেও প্রচুর ঘাম হয়। যক্ষ্মা রোগীরও বেশি ঘাম হয়। রাত্রিকালীন ঘামের সঙ্গে জ্বর জ্বর ভাব, কাশি, লসিকা গ্রন্থি ফোলা, দুর্বলতা ইত্যাদি আছে কি না খেয়াল করুন।

-মেনোপজের পর নারীদের হঠাৎ গরম লাগে, ভাঁপ বোধ হয় ও প্রচুর ঘাম হয়। একে হট ফ্লাশ বলে। বিষয়টা কষ্টদায়ক হয়ে উঠলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। এর সুচিকিৎসা আছে।

ঘাম কি ক্ষতিকর?

আগেই বলেছি, ঘাম একটি শারীরবৃত্তীয় ব্যাপার। বেশি ঘাম হলে কোনোÿক্ষতির আশঙ্কা তেমন নেই। তবে অস্বাভাবিক ঘাম রোগের লক্ষণ হতে পারে বলে আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো লক্ষ রাখা উচিত। খুব গরম আবহাওয়ায় বা রোদে বাইরে কাজ করলে অতিরিক্ত ঘামের কারণে পানিশূন্যতা হতে পারে, সে ক্ষেত্রে অবসন্ন বোধ করলে প্রচুর পানি বা স্যালাইন খেয়ে নেওয়া উচিত।

 মেডিসিন বিভাগ, ইউনাইটেড হাসপাতাল।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+7 টি ভোট
3 টি উত্তর 3,213 বার দেখা হয়েছে
+11 টি ভোট
2 টি উত্তর 594 বার দেখা হয়েছে
03 অগাস্ট 2020 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন বিজ্ঞানের পোকা ৩ (25,790 পয়েন্ট)
+8 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,282 বার দেখা হয়েছে
+7 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,185 বার দেখা হয়েছে
15 ডিসেম্বর 2020 "তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন noshin mahee (110,330 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
1 উত্তর 343 বার দেখা হয়েছে

10,774 টি প্রশ্ন

18,455 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

263,195 জন সদস্য

33 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 32 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  2. XLFKellye729

    100 পয়েন্ট

  3. NormaHildebr

    100 পয়েন্ট

  4. ElizabetBeav

    100 পয়েন্ট

  5. BrooksLeGran

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা #science পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...