সাইটোসল অথবা সাইটোপ্লাজমিক ম্যাট্রিক্স হল একপ্রকারের তরল পদার্থ যা কোষের মধ্যে থাকে। এটি সাধারনতঃ ইন্ট্রা সেলুলার ফ্লুইড অর্থাৎ দুটি কোষের অন্তরবর্তী জলীয় পদার্থ। এরা ঝিল্লী পর্দার দ্বারা পৃথক অবস্থায় থাকে। উদাহরণস্বরূপ মাইটোকন্ড্রিয়াল ম্যাট্রিক্সকে মাইটোকন্ড্রিয়ন বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করেছে।
ইউক্যারিওটিক বা প্রকৃত কোষ এর ক্ষেত্রে, কোষের মধ্যবর্তী সাইটোসল, যা সাইটোপ্লাজমের অংশ এবং সাইটোসল বিভিন্ন অরগান্যালস যেমন- প্লাসটিড এবং মাইটোকন্ড্রিয়া পৃথক করেছে একে অপরের থেকে কিন্তু কখনই তাদের মধ্যেকার জলীয় পদার্থর আকৃতি অথবা গঠন নষ্ট না করে। সাইটোসল হল জলীয় অংশ যা অরগান্যালস গুলির চারপাশে বিরাজমান এবং কোষ নিউক্লিয়াসগুলি্কে পৃথক করে। প্রোক্যারিওটিক বা আদি কোষের ক্ষেত্রে মেটাবলিসম এর বিভিন্ন রাসায়নিক ক্রিয়া অধিকাংশই সাইটোসলে সম্পন্ন হয়। কিছু কিছু রাসায়নিক ক্রিয়া ঝিল্লী পর্দা অথবা পেরিপ্লাজমিক অংশে হয়। ইউক্যারিওটিক বা প্রকৃত কোষেও অধিকাংশ মেটাবলিক রাসায়নিক ক্রিয়া সাইটোসলেই হয়, বাকী রাসায়নিক ক্রিয়া অরগান্যালস এর মধ্যে সম্পন্ন হয়।
সাইটোসল হল জলের দ্রবনীয় বিভিন্ন পদার্থর জটিল মিশ্রণ। সাইটোসলের বেশির ভাগ অংশই জলীয়। তবে কোষের ভেতরের আকৃতি এবং বৈশিষ্ট কিরকম তা এখনও বোঝা যায়নি। সাইটোসলে প্রাপ্ত আয়নের ঘনত্ব বিশেষতঃ সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম এক্সট্রা সেলুলার ফ্লুইড এর থেকে পৃথক হয়। আয়নের ঘনত্বের এই পার্থক্যটা খুব জরুরী ওসমোরেগুলেশন, কোষের সিগন্যাল প্রেরন ইত্যাদি পদ্ধতিগুলির জন্য। এছাড়া এন্ডোক্রাইন, নার্ভ এবং মাসল কোষের মধ্যে অ্যাকশন-পোটেনসিয়াল ক্রিয়া বজায় রাখার জন্য। সাইটোসল, জলীয় অংশ ছাড়াও অনেকটা পরিমানে ম্যাক্রো মলিকিউলস থাকে। যারা অন্যান্য মলিকিউলসের আচরনের সাথে নিজেদের সামঞ্জস্য বজায় রাখে, এই পদ্ধতিকে ম্যাক্রো মলিকিউলার ক্রাউডিং বলে।
পূর্বে সাইটোসলকে বিভিন্ন মলিকিউলসের সরল দ্রবন মনে করা হত কিন্তু সাইটোসলে বিভিন্ন প্রকার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এখানে যেমন ক্যালসিয়াম এর মতো ছোট কনার অথবা মলিকিউলসের কনসেন্ট্রেশন গ্রেডিয়েন্ট আবার উৎসেচক এর দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়া যা একসাথে বিভিন্ন মেটাবলিক পাথওয়েকে চালনা করে। আবার প্রোটিন কমপ্লেক্স যেমন-প্রটিওজোম এবং কার্বক্সিজোম এইগুলি সাইটোসলের পৃথক অংশ।
তথ্যসুত্রে: উইকিপিডিয়া