কথাটা ঠিক নয়। একদম অন্ধকার ঘরে ছেড়ে দিলে বিড়াল কিছু দেখতে পায় না, যেমন মানুষও দেখে না। আসলে বিড়াল যেটা পারে, সেটা হলো আবছা অন্ধকারে খুব ভালো দেখা, মানুষ যেটা পারে না। তাহলে কেন সবাই বলে যে বিড়াল অন্ধকারে দেখে?
এর কারণ হলো প্রায় অন্ধকারে বিড়ালের চোখ জ্বলজ্বল করে জ্বলে। মনে হয় বিড়ালের চোখ থেকে আলো বের হচ্ছে। এ থেকে ধারণা করা হয়, অন্ধকারে বিড়ালের চোখ থেকে বিচ্ছুরিত আলো তাকে দেখতে সাহায্য করে। বিড়ালজাতীয় অন্যান্য প্রাণী, যেমন বাঘ, সিংহ প্রভৃতি প্রাণীর চোখও অন্ধকারে জ্বলে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে তারা অন্ধকারে সেই আলোতে দেখে।
বিড়ালের চোখ থেকে কোনো আলো বের হয় না। ওদের চোখে টেপিটাম লুসিডাম নামক এক ধরনের রঙিন কোষের স্তর থাকে। এই স্তরের ওপর আলো পড়লে তা প্রতিফলিত হয়। মনে হয় তাদের চোখ আলো ছড়াচ্ছে।
বিড়াল, বাঘ, সিংহ প্রভৃতি নিশাচর প্রাণী। পুরো অন্ধকারে দেখতে না পারলেও তাদের মুখমণ্ডলের গঠন রাতের হালকা আঁধারে ভালোভাবে দেখতে সাহায্য করে, যেটা মানুষ পারে না।
মানুষের চোখের তুলনায় বিড়ালের চোখ দুটি মুখমণ্ডলের অনেকখানি সামনের দিকে অবস্থিত। এতে সুবিধা হলো এক চোখের দৃষ্টি অন্য চোখের দৃষ্টিক্ষেত্রের ওপর প্রলম্বিত হয়। এই যুগপৎ (বাইনোকুলার) দৃষ্টি ক্ষমতাসম্পন্ন বিড়ালের পক্ষে ছোটাছুটি করে চলা, ইঁদুরের সন্ধান পাওয়া সহজ।
বিড়ালের আরেকটি সুবিধা আছে। এদের চোখ অতিবেগুনি রশ্মির প্রতি খুব সংবেদনশীল। এ কারণে মানুষ দেখতে পায় না এমন অনেক জিনিস ওরা দেখে।
বিড়ালের দৃষ্টিশক্তি সম্পর্কে মানুষের ধারণা অনেকাংশে বাড়তি। এরা প্রখর সূর্যালোকে ভালো দেখে না, সম্পূর্ণ অন্ধকারে তো একেবারেই দেখে না। মাঝারি ও স্বল্প আলোতে এরা ভালো দেখে, সেটা সত্য।
Abdul Kaiyum