পরমাণুর যে গাঠনিক কণাটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল, তার নাম ইলেকট্রন। এই অতিপারমাণবিক কণাটি (আসলে এগুলো উপপারমাণবিক কণা, অর্থাৎ পরমাণু থেকে ছোট কণা) আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ পদার্থবিদ জোসেফ জন টমসন। ১৮৯৭ সালে ক্যাথোড রে টিউব নিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে এই খুদে কণা খুঁজে পান তিনি।
কণা পদার্থবিজ্ঞানের স্ট্যান্ডার্ড মডেলে মৌলিক কণাগুলো প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একভাগ ফার্মিয়ন, আরেক ভাগ বোসন। ফার্মিয়ন হলো বস্তুকণা। যেমন ইলেকট্রন। আর বোসন হলো বস্তুকণাদের মধ্যে বলের বাহক। যেমন ফোটন। ফোটন কণা বিদ্যুৎচুম্বকীয় বলের বাহক হিসেবে ইলেকট্রন কণাদের সঙ্গে কাজ করে। মানে ইলেকট্রন কণাদের মধ্যে শক্তি বিনিময় করে ফোটন।
ইলেকট্রনকে বলা হয় স্থিতিশীল এবং মৌলিক কণা। কারণ প্রোটন বা নিউট্রনের মতো একে আরও ক্ষুদ্র কোনো কণায় ভাঙা যায় না। আবার এখন পর্যন্ত এদের ক্ষয় হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এদের আয়ু দীর্ঘ, এমনকি অসীমও হতে পারে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। কারণ পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র অনুসারে, কোনো ভর বা চার্জ এমনি এমনি স্রেফ ভোজবাজির মতো শূন্য মিলিয়ে যেতে পারে না। এ কারণে ইলেকট্রন এত স্থিতিশীল। তবে কোনো ইলেকট্রন যদি তার প্রতিকণার মুখোমুখি হয়, তাহলে তারা পরস্পরকে ধ্বংস করে ফেলে। এবং শক্তি নিঃসরণ করে। ইলেকট্রনের এই প্রতিকণাকে বলা হয় পজিট্রন। পজিট্রনের ভর ইলেকট্রনের মতো, তবে এর চার্জ ধনাত্মক। পজিট্রনের সঙ্গে ইলেকট্রনের সংঘর্ষে শক্তি নিঃসৃত হয় দুটি ফোটন হিসেবে। অর্থাৎ আলোর কণা হিসেবে। বিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যানের নীতি অনুযায়ী, এর উল্টোটাও ঘটা সম্ভব।