তবুও আমি ধরে নিচ্ছি পরমাণুতে থাকা ইলেকট্রনের কথাই এখানে বলা হচ্ছে । এবারে আমরা ছোটবেলা থেকে একটা ভুল ভাবনা পোষণ করে আসছি যে - সূর্যের চারিদিকে যেমন গ্রহরা ঘোরে সেই রকম নিউক্লিয়াসের চারিদিকে ইলেকট্রনেরা ঘুরছে। সেটা কিন্তু সম্পূর্ণ সত্যি নয়।
আমাদের পরমাণু নিয়ে ধারণা অনুযায়ী আলোকচিত্র
কারণ ইলেকট্রনের দ্বৈত সত্ত্বা রয়েছে অর্থাৎ ইলেকট্রন একাধারে কণা এবং তরঙ্গও । তাই ইলেকট্রন একটি সুস্থিত কক্ষপথে থাকাকালীন এটি অনেকটা ত্রিমাত্রিক তরঙ্গের মত আচরণ করে ।
সহজ করে বললে - একটা গিটারের তারকে আঙ্গুল দিয়ে নাড়ালে তারটির কোন চলন হয় না। কিন্তু তারটির মধ্যে চাঞ্চল্য আমরা দেখতে পাই । ইলেকট্রনের ক্ষেত্রেও একই জিনিস পরিলক্ষিত হয় ।
এবার হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা সূত্র অনুযায়ী , একই সাথে কোনো দ্বৈতসত্ত্বা বিশিষ্ট কণার অবস্থান ও ভরবেগ নির্ণয় করা সম্ভব নয় । সুতরাং এই সূত্রের আরেকটি রূপ হল -
এখানে Δp বলতে ভরবেগের স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশান এবং
ΔX বলতে তার অবস্থানের স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশান বোঝায় ।
এবার এখানে প্রশ্ন ছিল যে যদি ইলেকট্রন চলাচল বন্ধ করে দেয় । তবে কী হবে ? বেগ তো শূন্য হবে না। কারণ ইলেকট্রনের তো ঘূর্ণন হয় না সেই অর্থে । তাই এর যদি স্পন্দন স্তব্ধ হয়। তবে এর ভরবেগ শূন্য হয়ে যাবে। এবার এক সেকেন্ডের জন্যও যদি ভরবেগ শূন্য হয়ে যায় , তবে এর ভরবেগের পরিবর্তনও শূন্য হয়ে যাবে।
সুতরাং তার অবস্থান অসীম হবে অর্থাৎ এটি পরমাণুর সীমানা পেরিয়ে সারা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে অবস্থান করবে। এমতাবস্থায় পরমাণুর অস্তিত্ব যে বিনষ্ট হবে সেটিই স্বাভাবিক।
অন্যভাবে বললে
ইলেকট্রনের চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে , এর গতিশক্তি শূন্য হয়ে যাবে। সুতরাং শক্তির সংরক্ষণ সূত্রানুযায়ী , গতিশক্তি অন্য কোন শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে যাবে । এরফলে পরমাণুটির সুস্থিততা বিনষ্ট হবে অর্থাৎ পরমাণুটির ক্ষয় হতে পারে অথবা তেজস্ক্রিয়তা দেখা যেতে পারে অথবা সেটি অন্য কোন পরমাণুর সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে নতুন কোন পরমাণু তৈরি করতে পারে ।