বেশি জামা পরে থাকলে কি ছেলেদের স্তন বড় হয় ?বড় হলে করনিয় কি ? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
2,823 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (120 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (9,280 পয়েন্ট)

বেশি জামাকাপড় পরিধানের সাথে পুরুষের স্তন বড় হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। পুরো ব্যাপারটাই হরমোনাল।

 

বিস্তারিত জানতে নিচের লেখাটি পড়তে পারেনঃ-

পুরুষের অস্বাভাবিক স্তন বৃদ্ধিকে গাইনেকোমাস্টিয়া বলে। গাইনেকোমাস্টিয়া শব্দটি এসেছে গ্রিক ‘গাইনি’ ও মাস্টোস’ থেকে। এ অবস্থাটি নবজাতক, বয়ঃসন্ধিকালে ও বৃদ্ধ বয়সে শরীরবৃত্তীয় কারণে হতে পারে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের এ অবস্থা সচরাচর মর্মবেদনার উদ্রেক করে, তবে অনেক ছেলের বয়ঃসন্ধিকালের বড় স্তন শারীরিক স্থূলতার কারণে হয় না, স্তনের বৃদ্ধি দু’বছরের মধ্যে ছোট হয় বা মিলিয়ে যায়।

সাধারণ গাইনোকোমাস্টিয়ার কারণগুলো নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে যদিও সাধারণভাবে সেক্স হরমোনের বৈষম্যকে এর জন্য দায়ী করা হয়। স্তন টিস্যুর বৃদ্ধির কারণেও স্তন বড় হতে পারে। অনেক সময়ে স্তনে অতিরিক্ত চর্বি জমলে স্তন বড় দেখায়, তবে এটা গাইনেকোমাস্টিয়া নয়। গাইনোকোমাস্টিয়া হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে পুরুষের শক্ত স্তন টিস্যু গঠিত হয়। এ স্তন টিস্যু সাধারণত দেড় ইঞ্চি ছোট হয় এবং সরাসরি এটা স্তনবৃত্তের নিচে অবস্থান করে। গাইনোকোমাস্টিয়া একপাশে এবং দু’পাশেই হতে পারে। এ অবস্থা স্তনে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। যদি বেশি বড় না হয়ে থাকে, তবে ব্যয়ামে সেরে যেতে পারে। বেশি বড় হওয়াকে গাইনোকোমাস্টিয়া বলা হয়।

শরীরবৃত্তীয় গাইনোকোমোস্টিয়া নবজাতক, বয়ঃসন্ধিকালে বা বয়ঃসন্ধিকালের আগে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হতে পারে। অনেক গাইনোকোমাস্টিয়ার কারণে অজানা অর্থাৎ এদের নির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না। গাইনোকোমাস্টিয়ার কিছু নির্দিষ্ট কারণের মধ্যে রয়েছে হরমোনসহ বিভিন্ন ওষুধ গ্রহণ, সিরাম ইস্ট্রোজেনের বৃদ্ধি, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ, দীর্ঘস্থায়ী লিভারের রোগ, এইচআইভি এবং অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগ। স্পাইনাল কর্ডে আঘাতের কারণে এবং দীর্ঘদিন অভুক্ত থাকার পর খাওয়ার পরে গাইনোকোমাস্টিয়া হতে পারে। ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে গাইনোকোমাস্টিয়ার কারণ জানা যায়নি।

বয়ঃসন্ধিকালের পরবর্তী পুরুষদের বিভিন্ন ওষুধ ১০ থেকে ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে গাইনোকোমাস্টিয়া ঘটায়। এসব ওষুধের মধ্যে রয়েছে সিমেটিডিন, ওমিপ্রাজল, স্পাইরোনোল্যাকটন, ইমাটিনিব মিসাইলেট, ফিনাস্টেরাইড এবং কিছু নির্দিষ্ট অ্যান্টি সাইকোটিক ওষুধ। কিছু ওষুধ সরাসরি স্তন টিস্যুর ওপর কাজ করে আবার কিছু ওষুধ ডোপামিনের কাজ বন্ধ করার মাধ্যমে পিটুইটারি থেকে প্রোলাকটিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। উল্লেখ্য, প্রোলাকটিন হলো স্তন তৈরির হরমোন। শক্তি বৃদ্ধিকারী ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত অ্যান্ড্রোসটেনেডিওন ইস্ট্রোজেনে অতিরিক্ত কার্যকারিতার মাধ্যমে স্তনের বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। মোটা মানুষের ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা থাকে।

পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন মাত্রা কমে গেলে গাইনোকোমাস্টিয়া হতে পারে। এই টেস্টোস্টেরনের উৎপাদনের মাত্রা কমে যেতে পারে জন্মগত বা অর্জিত অন্ডকোষের সমস্যার কারণে। হাইপোথ্যালামাস কিংবা পিটুইটারির রোগও টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমাতে পারে। অ্যানাবলিক অ্যান্ড্রোজেনিক স্টেরয়েডের অপব্যবহারও একই প্রভাব ফেলে।

সাধারণত যেসব ওষুধ খেলে গাইনোকোমাস্টিয়া হয়, যদিও সেসব ওষুধ বন্ধ করলে গাইনোকোমাস্টিয়া আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে, তবুও মাঝে মাঝে এ অবস্থা নির্মূল করতে অপারেশনের প্রয়োজন হয়।

রোগ নির্ণয় : একজন চিকিৎসক পরীক্ষা করে সাধারণ এ রোগ নির্ণয় করতে পারেন। মাঝে মাঝে রোগ নিশ্চিত করতে এক্সরে অথবা আল্ট্রাসাউন্ডের প্রয়োেজন হয়। যদি কোনো রোগের কারণে গাইনোকোমাস্টিয়া হয় তাহলে তা দেখতে রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হয়।

রোগের উন্নতি : গাইনোকোমাস্টিয়া সাধারণত শারীরিকভাবে ক্ষতিকর নয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটা জটিল অসুখ নির্দেশ করে। স্তনের যেসব বৃদ্ধি সাধারণত হরমোনজনিত উদ্দীপনা থেকে হয়, সেগুলো সচরাচর ব্যথা হয় কিংবা চাপ দিলে ব্যথা করে। এ রোগ রোগীকে সামাজিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। স্থূলতার কারণে গাইনোকোমাস্টিয়া হলে ওজন কমালে এ অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে, তবে ওজন কমালেই স্তন গ্রন্থির টিস্যু কমবে না। রোগীর আশাও পূর্ণ হবে না। অতিরিক্ত ওজন কমালে বুকের কাছে টিস্যু ঝুলে যেতে পারে।

চিকিৎসা : যেসব কারণে গাইনোকোমাস্টিয়া হয়, সেসব কারণের চিকিৎসা করালে অবস্থার উন্নতি হতে পারে। রোগী কী কী ওষুধ খাচ্ছেন তা অবশ্যই চিকিৎসককে অবহিত করতে হবে। প্রয়োজনে বিকল্প ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। কিছু নির্দিষ্ট ইস্ট্রোজেন রিসেপ্টর মডুলেটর ওষুধ যেমন- ট্যামক্সিফেন এবং কোমিফেন অথবা অ্যানড্রোজেন বা অ্যারোম্যাটেজ ইনহিবিটর যেমন লেট্রোজল ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে এগুলো গাইনোকোমাস্টিয়ার চিকিৎসায় সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম দু-তিন বছর অপেক্ষা করা যেতে পারে। এ সময়ে গাইনোকোমাস্টিয়া মিলিয়ে যেতে পারে। কিন্তু যদি তা মিলিয়ে না যায় এবং স্তন টিস্যু থেকে যায় তাহলে অপারেশনই হলো একমাত্র চিকিৎসা। এসব অপারেশনের মধ্যে রয়েছে লাইপোসাকশন, গ্ল্যান্ড এক্সিশন অর্থাৎ স্তন টিস্যু কেটে ফেলে দেওয়া, স্কিন স্কাল্পচার, রিডাকশান ম্যামোপ্লাস্টি ইত্যাদি।

লেখক : ডাঃ এসএম বখতিয়ার কামাল
সহকারী অধ্যাপক
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
(চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি)

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+9 টি ভোট
3 টি উত্তর 38,959 বার দেখা হয়েছে
26 অক্টোবর 2021 "চিন্তা ও দক্ষতা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Admin (71,360 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 1,828 বার দেখা হয়েছে
11 নভেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ha Sa N (120 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 6,356 বার দেখা হয়েছে
12 জুন 2022 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Sohana (130 পয়েন্ট)
+3 টি ভোট
1 উত্তর 3,895 বার দেখা হয়েছে
14 অগাস্ট 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ifaz Mahi (1,920 পয়েন্ট)
+3 টি ভোট
2 টি উত্তর 998 বার দেখা হয়েছে
20 এপ্রিল 2021 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন হায়াত (20,400 পয়েন্ট)

10,857 টি প্রশ্ন

18,557 টি উত্তর

4,746 টি মন্তব্য

857,965 জন সদস্য

34 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 33 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Tanvir Zaman

    220 পয়েন্ট

  2. science_bee_group

    120 পয়েন্ট

  3. Muhammad Al-Amin

    110 পয়েন্ট

  4. game6623online

    100 পয়েন্ট

  5. u888kyccom

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল #science ক্ষতি চুল চিকিৎসা কী পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক #biology পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল মনোবিজ্ঞান আগুন গাছ খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার শব্দ দুধ উপায় হাত মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা বাচ্চা মেয়ে বৈশিষ্ট্য মৃত্যু হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা চার্জ অক্সিজেন দাঁত ভাইরাস আকাশ গতি কান্না বিড়াল আম
...