যেহেতু ডান হাতে কাজ করতে অভ্যস্ত মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি, তাই প্রায় সবক্ষেত্রেই ডানহাতিদের সুবিধা হয় এমনভাবে সব কিছু নির্ধারণ করা হয়। ফলে সে সব ক্ষেত্রে বামহাতিদের বিভিন্ন সমস্যা ও বাধার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন-
১। কাঁচি সহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আছে যেগুলো ডানহাত দিয়ে ব্যাবহার করার মত করে ডিজাইন করা হয়। আর এসব যন্ত্রপাতি ব্যাবহারে বামহাতি দের যথেষ্টই বেগ পেতে হয়।
২। বাংলা ভাষা সহ অধিকাংশ ভাষার হাতের লেখাই বাম থেকে ডানে চলে। বিশেষ করে ল্যাটিন বা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাসা বংশের ভাষাগুলো উল্ল্যাখযোগ্য। এসব ভাষায় যখন একজন বামহাতি যখন লিখতে নেন তখন তার হাতকে অনেকটাই কসরত করতে হয়।
৩। বামহাতি বাচ্চারা যখন লেখা শেখা শুরু করে তখন অনেকক্ষেত্রেই তারা উলটোদিক দিক থেকে লেখা শুরু করে। শিশুদের এই সমস্যাটিকে 'mirror writing' বলা হয়। অবশ্য এটি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা এবং ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়।
৪। কিছু গবেষণা মতে মৃগী এবং অটিজমের মত রোগ বাম হাতিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তবে এটি শুধুই একটি পরিসংখ্যান মাত্র যার এখনো কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায় নি।
৫। বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে লক্ষ করে দেখবেন চেয়ার গুলো ডানহাতিদের লেখার মত করে বানানো হয়। বুঝতেই পারছেন এসব সিটে বসে একজন বামহাতির লেখা কতটুকু কষ্টসাধ্য হবে।
৬। গিটার, ভায়োলিন সহ বিভিন্ন-বাদ্যযন্ত্র বাজানো শিখতে গেলে বামহাতিদের বেশ কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়। যেহেতু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষক ডানহাতি হয়ে থাকেন, ফলে প্রথমে শিক্ষক কি বলেন সেটা শোনা, বোঝা, দেখা এবং তারপর সেটাকে ডানহাতি থেকে বামহাতির মতো উল্টে সাজিয়ে নেওয়া সহ সবকিছুই করতে হয় বেশ দ্রুত, যা কি না নিঃসন্দেহে নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য যথেষ্ট কষ্টকর।
আরও এরকম অনেক সমস্যারই সম্মুখীন হতে হয় বামহাতি দের। অবশ্য কারণটা আমাদের জানাই। যেহেতু আদিকাল থেকেই ডানহাতিদের আধিপত্য, সব কিছু তাই তাদের সুবিধার্থেই করা হয়েছে।