আমরা সকলে বিগ ব্যাং থিওরি কিংবা মহাবিস্ফোরণ তত্ত্বের সাথে পরিচিত। সে-তত্ত্ব অনুযায়ী আমাদের মহাবিশ্বের সবকিছুই একত্রিত অবস্থায় একটি ছোটো বিন্দুতে ঘনীভূত ছিল। যার ঘনত্ব ছিল অসীম! এই অবস্থাকে বলা হয় ‘সিংগুলারিটি’। মহাবিস্ফোরণের পর সবকিছু একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মহাবিশ্বের সৃষ্টির ব্যাপারে এটিই এখন পর্যন্ত সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য গবেষণা! বৈজ্ঞানিকদের মতে প্রায় ১৩.৭ বিলিয়ন বছর আগে মহাবিস্ফোরণ ঘটেছিল, তারপর সব গ্রহ-উপগ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপুঞ্জ ইত্যাদি সৃষ্টি হয়। মহাবিস্ফোরণের অনেক পরে মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে এই পৃথিবীতে। কিন্তু যে-সময় মহাবিস্ফোরণ ঘটেছিল, সে-সময় যদি মানুষের উপস্থিতি থাকতো, তবে কী হতো? কখনো কি ভেবে দেখেছেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক!
১. ‘মহাবিস্ফোরণ’ ঘটার সময় মিলিসেকেন্ডের মধ্যেই সবকিছু আলাদা হয়ে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল! এই সময়ে তাপমাত্রা হয়ে দাড়িয়েছিল প্রায় ৯৯৯ বিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা অত্যাধিক! একজন স্বাভাবিক মানুষকে নিমিষেই ছাই করে ফেলতে সক্ষম!
২. ‘মহাবিস্ফোরণ’-র পর যখন বস্তুগুলো ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে তখন তাদের গতিবেগ ছিল অত্যন্ত বেশি, আপনি সেখানে উপস্থিত থাকলেও আপনি সেগুলোর উপস্থিতি/গতিবেগ টেরই পেতেন না!
৩. প্রচণ্ড গতিতে গতিতে ছড়িয়ে পড়া বস্তুগুলোর সৃষ্টি করা শব্দও ছিল ‘শব্দত্তোর’ কম্পন! যা সাধারণ মানুষের শ্রাব্যতার সীমার বাইরে! আপনি সেখানে উপস্থিত থাকলেও কিছু শুনতে পেতেন না!
৪. যেহেতু সে-সময়টি ছিল মহাবিশ্বের সকল কিছু সৃষ্টির পূর্বে, আপনি চারপাশে তাকালে ঘন ধূসর কুয়াশার মত পরিবেশ দেখতে পেতেন!
৫. ‘মহাবিস্ফোরণ’-র এক মাইক্রোসেকেন্ড পরে আপনি নিউট্রিনো, কোয়ার্ক এবং ইলেকট্রন তৈরি হওয়া দেখতে পেতেন এবং তার কিছু সময় পরে নিউট্রন এবং প্রোটন তৈরি হওয়া দেখতে পেতেন! এসবকিছুই ঘটেছিল এক সেকেন্ডের মধ্যেই!
৬. ঠিক সে-সময়ে তাপমাত্রা কমে গিয়ে প্রায় ৫.৫ বিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে গিয়েছিল! তারপর ধীরে তাপমাত্রা কমে যেয়ে ঠান্ডা হতে শুরু করে এবং সর্বপ্রথম ‘হাইড্রোজেন’ এবং ‘হিলিয়াম’ পরমাণু গঠিত হয়!
মহাবিস্ফোরণের অনেক অনেক বছর পর পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে এবং তারও অনেক বছর পর এই পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে! কিন্তু কখনো কি নিজে মহাবিস্ফোরণের সময়ে কল্পনা করে দেখেছেন? একবার ভেবেই দেখুন না!
- Hayat Mohammad Imran Arafat
| Executive Member, Science Bee