একা থাকলে নানাবিধ উপকার পাওয়া যায়, একারনেই মানব মস্তিষ্ক একা থাকাকে ভালো লাগার কারন হিসেবে ধরে নেয়।
১. ব্রেন নিজেকে রিস্টার্ট করে:
একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে নিজের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় ব্রেন নিজে থেকেই পুরো নার্ভাস সিস্টেমকে রিবুট করে ফেলে। ফলে রিস্টার্ট করার পর মস্তিষ্ক যখন আবার কাজ করতে শুরু করে, তখন এত দ্রুত কাজ করে যে বুদ্ধি, মনযোগ এবং স্মৃতিশক্তির বিকাশ ঘটে। প্রসঙ্গত, একা থাকার সময় শরীরও নিজের মতো করে আরাম করার সুযোগ পয়ে যায়। ফলে ব্রেনের পাশাপাশি শরীরও চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
২. পেশাদারি উন্নতির পথ প্রশস্থ হয়:
ভিড়ের মধ্য়ে থাকা মানেই নানা কথা, নানা বিষয়ে মনযোগ ভাগাভাগি হয়ে যাওয়া। আর এমনটা হওয়া মানেই মস্তিষ্ককে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কাজ করতে হয়, ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রেন ক্লান্ত হয়ে পরে। সেই সঙ্গে কমে কাজের মানও। এই কারণেই তো চিকিৎসকেরা প্রতিদিন কিছুটা সময় নিজের সঙ্গে কাটানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ এমনটা করলে মনযোগ ফিরে আসে। সেই সঙ্গে কগনিটিভ ফাংশানেরও উন্নতি ঘটে। ফলে যে কোনও কাজ কম সময় করে ফেলা সম্ভব হয়ে ওঠে।
৩. চিন্তাশীল মনের বিকাশ ঘটে:
আপনি কি কোনও ক্রিয়েটিভ কাজের সঙ্গে যুক্ত? উত্তরটা যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে নিয়মিত নিজের সঙ্গে একটু সময় কাটান। দেখবেন কাজের মানে ব্যাপক উন্নতি ঘটবে। কেন এমনটা হবে জানেন? কারণ গবেষণা বলছে একা থাকার সময় চিন্তা করার এবং চিরাচরিত রাস্তার বাইরে গিয়ে ভাবার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্রিয়েটিভ মন নিজের ডানার সন্ধান পেয়ে যায়। এই কারণে দেখবেন ক্রিয়েটিভ মানুষেরা অনেক ক্ষেত্রেই লোকজনের সঙ্গে মিশতে পছন্দ করেন না।
৪. সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বেড়ে যায়:
গুরু গম্ভীর সমস্যা সামাধানের ক্ষমতার দিক থেকে চাণক্যের মতো আর কেউ আজ পর্যন্ত জন্মেছেন কিনা সন্দেহ। গুরুদেব চাণক্য এত সহজে সব সমস্যার সমাধান করে ফেলতেন কিভাবে জানেন? কারণ ওনার ব্রেন পাওয়ার ছিল মারাত্মক। আপনিও যদি সফল "প্রবলেম সলভার" হয়ে উঠতে চান, তাহলে আজ থেকেই কিছুটা সময় একা থাকার চেষ্টা করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ যেমনটা আগেই আলোচনা করা হয়েছে যে একাকিত্ব, মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার ব্রেন পাওয়ার বেড়ে গেলে বুদ্ধিও এত বেড়ে যাবে যে কোনও সমস্যাই পথের বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
৫. একা থাকলে সহমর্মিতা বাড়ে:
আজকের সমাজে স্বার্থপরতাই নতুন ট্রেন্ড। তাই তো এখন কেউ কাউকে সাহায্য করে না। বরং অন্যকে দাবিয়ে নিজেকে কীভাবে উপরে তোলা যায় এই ভাবনায় সবাই মশগুল। এমন ভাবনা যে বৃহত্তর সমাজের উন্নতির জন্য একেবারেই ভাল নয়, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না। তাই আপনিও যদি আপনার সঙ্গে একমত হন, তাহলে প্রতিদিন কিছুটা সময় নিজের সঙ্গে কাটানোর চেষ্টা করুন। এমনটা করলে দেখবেন মনের অন্দের বিষের মতো জমতে থাকা স্বার্থপরতার মনভাব কমতে থাকবে। ফলে ধীরে ধীরে হলেও সমাজের পরিবর্তন হবেই হবে।