মন বা মস্তিষ্ক, শরীর ও মানসিক রোগের সম্পর্ক কী? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
412 বার দেখা হয়েছে
"মনোবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (135,480 পয়েন্ট)

3 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (135,480 পয়েন্ট)
মন এবং শরীর এই দু’য়ে মিলে হচ্ছে পরিপূর্ণ মানুষ। শরীরের অস্তিত্ববিহীন যেমন মানুষের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না, তেমনি মন ছাড়া মানুষও কল্পনা করা যায় না। ভেবে দেখুন তো মনবিহীন মানুষ কি কখনও সম্ভব। কাজেই আপনি যদি মানুষের অস্তিত্ব স্বীকার করেন তবে মনের অস্তিত্বও আপনাকে পুরোপুরি মেনে নিতে হবে।

প্রশ্ন করতে পারেন, মন আদৌ অস্তিত্বশীল কি-না? মনকে ধরা যায় কি-না? মনকে অবশ্যই ধরা যায়। এ ‘ধরা’ শরীরকে স্পর্শ করার মতো নয়। আমরা আমাদের Sensory Organ বা পঞ্চইন্দ্রিয়ের সাহায্যে কোনো কিছুর শারীরিক অস্তিত্ব বা Physical Existence ব্যাখ্যা করি।

কিন্তু মনকে এ পঞ্চইন্দ্রিয়ের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। মনের বিভিন্ন অবস্থা আমরা অনুভব করতে পারি। এ অনুভব কোনো কল্পনা বা আজগুবি আষাঢ়ে গল্পের উপাখ্যান নয়। মনের গতি প্রকৃতি, পরিবর্তন, সুস্থতা, অসুস্থতা ইত্যাদিও রয়েছে সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক এবং শরীরবৃত্তীয় ভিত্তি এবং ব্যাখ্যা।

শরীর বা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমন রোগাক্রান্ত হয় তেমনি এই শরীরেরই একটি অঙ্গ হচ্ছে মন যা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। শরীর এবং মন কখনোই পৃথক বা আলাদাভাবে অবস্থান করতে পারে না। শরীর না থাকলে মনেরও অস্তিত্ব থাকে না।

মনে রাখবেন ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপারটাকে কখনও গুলিয়ে ফেলবেন না। মন আর আত্মা এক জিনিস নয়। যা হোক সেটা ভিন্ন আলোচনার বিষয়। শরীর না থাকলে যদি মন না থাকে তবে স্বভাবতই প্রশ্ন আসে হৃৎপিণ্ড যেমন বুকের মধ্যে থাকে, পাকস্থলি যেমন পেটের মধ্যে থাকে তা হলে মন কোথায় থাকে? সহজ কথায় মন থাকে মাথায়।

আগেই বলেছি শরীর বা শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মতো মনও রোগাক্রান্ত হয়। আমরা যদি Neuroscience perspective বা স্নায়ুতান্ত্রিক পরিপ্রেক্ষিত থেকে মন সম্পর্কে জানতে চাই তবে দেখতে পাব মন হচ্ছে কতগুলো neuronal circuit তথা পরস্পর সংযুক্ত কতগুলো স্নায়ুবীয় গতিপথ, কতগুলো নিউরোট্রান্সমিটার, হরমোন, নিউরোমডিউলেটর, মস্তিষ্কে অবস্থিত অসংখ্য নিউরোনাল সাইনেন্সে সম্মিলিত কার্যক্রম।

এসব কার্যক্রমের বিভিন্ন রকম প্রকাশ-ই হচ্ছে মনের বিভিন্ন অবস্থা। পাগলামি বা পাগলের অবস্থাও হচ্ছে মনের একটি অস্বাভাবিক অবস্থা। মনে রাখতে হবে মনের অসুখ হওয়া মানেই পাগল হয়ে যাওয়া নয়, বরং অনেক ধরনের মানসিক রোগের মধ্যে পাগলামি হচ্ছে এক ধরনের মানসিক রোগ।

যদিও আজকাল আমরা পাগল বা পাগলামি শব্দটি ব্যবহার করি না, তার পরিবর্তে আমরা বলি জটিল বা গুরুতর মানসিক রোগ যা আবার বিভিন্ন ধরনের হয়। মনের চিকিৎসক মানেই শুধু পাগলের চিকিৎসক নয়।

সহজ করে বোঝার সুবিধার্থে আমরা মানসিক রোগগুলোকে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করি। সাইকোসিস (Psychosis) বা Major Psychiatric disorder বা জটিল ও গুরুতর মানসিক ব্যাধি এবং নিউরোসিস (Neurosis) বা Minor Psychiatric disorder বা লঘু মানসিক ব্যাধি।

জটিল ও গুরুতর মানসিক ব্যাধিগুলোর মধ্যে রয়েছে সিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডার, ডিলিউশনাল ডিসঅর্ডারসহ আরও অনেক জটিল মানসিক রোগ।

লঘু মানসিক ব্যাধিগুলোর মধ্যে রয়েছে Depressive disorder বা বিষণ্ণতা, Obsessive compulsive disorder বা শুচিবায়ু, Anxiety disorder বা অতিরিক্ত উদ্বেগ জনিত রোগ, Phobia বা অহেতুক ভীতি, Panic disorder বা হঠাৎ আতঙ্কিত হওয়া, Somatic Symptom disorder বা মানসিক সমস্যার শারীরিক প্রকাশ, যে কোনো ধরনের Addiction বা নেশা (Drug addiction, Internet addiction ইত্যাদি), Personality disorder বা ব্যক্তিত্বের সমস্যা, Relational problem বা সম্পর্কজনিত সমস্যাসহ আরও বহুবিধ লঘু মানসিক রোগ।

এছাড়াও রয়েছে মানসিক বা বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা, অটিজম, Conduct disorder বা আচরণগত সমস্যা, অতিরিক্ত চঞ্চলতা এবং অমনোযোগিতা (ADHD)সহ বাচ্চাদের নানাবিধ মানসিক সমস্যা।

এ ক্ষুদ্র পরিসরে সব মানসিক রোগের নাম এবং তাদের লক্ষণ-কারণ সম্বন্ধে আলোচনা আসলে সম্ভব নয়। তবে ভবিষ্যতে পর্যায়ক্রমে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার পরিকল্পনা রইল।

এ ধরনের সব মানসিক সমস্যার চিকিৎসা করেন একজন সাইকিয়াট্রিস্ট। তাই সাইকিয়াট্রিস্ট মানেই পাগলের ডাক্তার এ ধরনের অমূলক বিশ্বাস থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী আমাদের দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শতকরা ১৬.১ ভাগ মানুষ কোনো না কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছে যার মধ্যে মাত্র ১% হল জটিল মানসিক রোগী। বাকিরা লঘু বা Minor psychiatric disorder-এ ভুগছে।

শিশুকিশোরদের মধ্যে মানসিক রোগের প্রকোপ হচ্ছে ১৮.৪% শারীরিক সমস্যা বা অসুখে যেমন আমাদের দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়, তেমনি মানসিক সমস্যাও আমাদের দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজ কর্মকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই এর জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন।

সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি প্রয়োজন মানসিক সুস্থতা। মনের অসুখ নিয়ে কখনও সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব নয়। আর মনের অসুখ মানেই পাগল নয়। তাই মনের যে কোনো সমস্যা যা আপনার স্বাভাবিক জীবনধারাকে ব্যাহত করে তার চিকিৎসা করুন- সুস্থ, সুন্দর জীবন উপভোগ করুন।
0 টি ভোট
করেছেন (28,740 পয়েন্ট)
যে বুদ্ধিমান সে মস্তিষ্ক খাটিয়ে আবেগকে করায়ত্ত করে; বাকিরা আবেগের বশে থাকে। টেকনিক্যাল জ্ঞান ঝারতে হলে বলব মন ইন্দ্রিয়াগ্রাহ্য, আর অন্যটা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য। মন ছাড়া মস্তিষ্ক হয়, কিন্তু তদ্বিপরীত হয় না। সুতরাং, দুটোর মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই।
0 টি ভোট
করেছেন (9,610 পয়েন্ট)
শরীর হলো দেহ, মন হলো হরমোনের প্রভাবে সৃষ্ট অনুভূতি, আর মানসিক রোগ হলো মানসিক বিকৃতি বা অস্বাভাবিক মানসিকতা।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+3 টি ভোট
5 টি উত্তর 673 বার দেখা হয়েছে
13 জানুয়ারি 2022 "মনোবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Kanija Afroz (2,140 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
3 টি উত্তর 377 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 710 বার দেখা হয়েছে
28 ফেব্রুয়ারি 2021 "তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,480 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
2 টি উত্তর 425 বার দেখা হয়েছে
28 ফেব্রুয়ারি 2021 "তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,480 পয়েন্ট)

10,772 টি প্রশ্ন

18,455 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

263,048 জন সদস্য

31 জন অনলাইনে রয়েছে
3 জন সদস্য এবং 28 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  2. djistorevietnam

    100 পয়েন্ট

  3. Elvira69W416

    100 পয়েন্ট

  4. 1kunwinwiki

    100 পয়েন্ট

  5. DebK5204888

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা #science পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...