দাদ এখনকার দিনে একটি খুব ছোঁয়াচে ও শক্ত অসুখ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগের চেয়ে সংক্রমণ ৫-৭ গুণ বেড়ে গেছে, বাড়িতে একজনের হলে খুব শিগগিরই পরিবারের সবার হয়ে যাচ্ছে। আগে যে দাদ কয়েকদিন মলম লাগালে কমে যেত, এখন মাস না, বছর ঘুরে যাচ্ছে সারতে।
সংক্রমণ এড়াতে কি করবেন-
- সুতির জামাকাপড় পরবেন, হালকা দেখে। জিন্স পরবেন না। নখে হলে নিয়মিত মোজা বদলাবেন। জামাকাপড় রোজ কাচতে দেবেন।
- নিজের সাবান, গামছা, তোয়ালে আলাদা করে নিন। না কাচা জামাকাপড় অন্যের জামাকাপড়ের সাথে মেশাবেন না।
- অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান-ডেটল বা লাইফবয় ব্যবহার করে কোনো এক্সট্রা লাভ নেই, কারণ দাদ ব্যাক্টেরিয়া থেকে হয়না। অ্যান্টিফাঙ্গাল সাবান কিনতে পারেন, কিন্তু সেটি মানেই চিকিৎসা নয় তা মাথায় রাখবেন
- তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ খান। খাবার ওষুধ কিছুদিন খেলে সংক্রমণের সুযোগ কমে যায়।
প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে:
- বাড়িতে কোনো অ্যান্টিফাঙ্গাল মলম থাকলে ডাক্তার দেখানোর আগে ১-২ দিন লাগাতে পারেন। ফার্মেসি থেকে উল্টোপাল্টা মলম নিয়ে লাগাবেন না, তাতে দাদ তো সারেই না-উল্টে ডার্মাটাইটিস বা কালো দাগ হয়, অনেকসময় ইরিটেশন হয়ে পুড়ে যায়। ডাক্তারকে তখন দাদ সারানোর আগে এগুলো সারাতে হয়। কোয়াড্রিডার্ম, ডেরওবিন, ক্লোপজি ইত্যাদি ভুলভাল মলম, যাতে স্টেরয়েড থাকে, লাগালে চামড়া খারাপ হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।
- দিনে দুবার জল দিয়ে ধুয়ে জায়গাটা তোয়ালে দিয়ে মুছে শুকনো রাখুন। চুলকানি কমানোর জন্য ডেটল, সুথল লাগাবেন না। তেল লাগাবেন না। খুব ঘেমে গেলে মুছে পাউডার লাগাতে পারেন, জামা বদলে নিতে পারেন। যত ভিজে থাকবে তত রোগ আশেপাশের ত্বকে ছড়াবে।
- ও কমে যাবে ভেবে দেরি না করে তাড়াতাড়ি চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ দেখান।
- অনেকদিন ওষুধ খেতে হতে পারে। সঙ্গে মদ, সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিলে লিভারের পক্ষে উপকারী।
- নিয়ম করে শুধু রোগ কমে যাওয়া অবধি নয়, ডাক্তার যতদিন বলেছে ততদিন ওষুধ খেতে হবে। নিজে থেকে ছেড়ে দিলে রোগ ফেরত চলে আসতে পারে, কারণ দেখা গেছে চামড়া ঠিক হয়ে গেলেও রোগ ভেতরে অনেকসময় থেকে যায়।
- বাচ্চার মাথায় হলে অনেকদিন লাগে সারতে। নতুন চুল গজিয়ে যাবে ঘা সারলে।
- নখে হলে এক বছরের উপর চিকিৎসা লাগে। ধৈর্য ধরে করলে পুরো সেরে যায়। জল ঘাঁটা কমাতে হবে, অবশ্যই।
- সুগার থাকলে রোগটি বাড়ে। যথাযথ চিকিৎসা করাবেন।