প্রশ্ন ১ :
১। হরমোনাল ইমব্যালেন্স আর নারী ➤ এরা একে অন্যের বন্ধু। বইতে একটা গ্রাফই আছে দেখবেন, মেনস্ট্রুয়েশানের সাথে জড়িত হরমোনগুলো ২৮ দিনে কোন লেভেলে উঠানামা করে।
জরায়ু চক্রের একটা পর্যায় আছে - 'বর্ধনশীল পর্যায়'। আগেরবারের চক্র শেষ হবার পর এটা শুরু হয়। এখন জরায়ু তো আজীবন বর্ধিত হবে না, একটা পর্যায়ে গিয়ে বৃদ্ধি থামাতে হবে। ইস্ট্রোজেন আর প্রোজেস্টেরন - এ দুটা হরমোন জরায়ুর এন্ডোমেট্রিয়ামের বৃদ্ধির সীমারেখা টেনে দেয়, এন্ডোমেট্রিয়ামের লাইনিং হরমোন বলে থাকে যদি আমি ভুল না বলি।
তো যদি কোনো কারণে(পুষ্টিজনিত, পরিবেশজনিত, জেনেটিক্যাল, PCOS, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স রোগী) পিক টাইমে অপটিমাম লেভেলে এই দুটো হরমোন সিক্রেশন না হয়/কম হয়, তাহলে সরাসরি এন্ডোমেট্রিয়ামের বৃদ্ধিতে এর ইফেক্ট পড়ে। বর্ধনশীল পর্যায় দেরীতে শেষ হয়, এন্ডোমেট্রিয়ামের বৃদ্ধি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়। তার মানে হলো জরায়ু প্রাচীরে এবার মাংস আর রক্তনালীর পরিমাণ ঢের বেশি। তাহলে যখন মেনস্ট্রুয়েশান হবে, তখন ব্লিডিং বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ তখন বেশি বেশি এন্ডোমেট্রিয়ামের ক্ষয় হচ্ছে।
২। ডিম্বাশয়ের জটিলতা ➤ ডিম্বাশয়ের অক্ষমতার জন্য ১৪ তম দিনে ডিম্বাণু বের না হলে এই সমস্যাটা হতে পারে। ডিম্বাণু বের না হওয়ার কারণ হতে পারে -
i) হাইপোথ্যালামাস থেকে 'লুটিনাইজিং হরমোন'(LH) ক্ষরিত না হওয়া/কম হওয়া, কারণ এই হরমোনই ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণুকে 'লুট' করে নিয়ে যায়।
ii) PCOS হলে এমন হতে পারে, যেখানে জেনেটিক্যালি ডিম্বাশয়ে সিস্ট/থলির মতো গ্রোথের কারণে ডিম্বাশয় ফর্মেশন ও ডিম্বপাতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
iii) ওভারিয়ান ফাইব্রোসিসের কারণে, যেখানে জেনেটিক্যালি ডিম্বাশয়ের ফলিকল কোষগুলোতে ফাইবারের মতো গঠন সৃষ্টি হওয়াতে ফলিকুলোজেনেসিসে ব্যাঘাত ঘটে।
এখন যদি ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণুই বের না হয়, তাহলে লুটিনাইজিং হরমোন ক্ষরণও সেম থাকবে(সামান্য হলেও), আর সেকারণে ইস্ট্রোজেন-প্রোজেস্টেরন হরমোনও ক্ষরণ হবে না। কারণ লুটিনাইজিং আর ইস্ট্রোজেন-প্রোজেস্টেরন কাজের দিক থেকে বিপরীতধর্মী হরমোন।
আর ইস্ট্রোজেন-প্রোজেস্টেরন হরমোনের এই ইমব্যালেন্সের কারণে কী হয়, ১ নাম্বার পয়েন্টেই সেটা বলেছি।
৩। ইউটেরাইন পলিপ - পলিপ মানেই ingrown বাড়তি মাংস। মাংস মানেই রক্তনালী আছে, কৈশিকজালিকা আছে। তো এন্ডোমেট্রিয়াম ভাঙা-গড়ার সময় হরমোনের প্রভাবে পলিপও ভাঙা-গড়া চলতে থাকে। তাই ব্লিডিং বেশি হয়। এটা অনেক পেইনফুল। কারণ পলিপ বারবার ভাঙে আর গ্রো করে।
৪। এন্টিকোয়াগুলেন্ট ওষুধ, Anti-Inflammatory ওষুধ ➤ এরা সরাসরি ইস্ট্রোজেন-প্রোজেস্টেরনের ক্ষরণ ও কাজে বাধা দেয়। এন্টিকোয়াগুলেন্ট ওষুধ খেলে তো এন্ডোমেট্রিয়াম ভাঙনের পর রক্ত কোয়াগুলেশন/জমাট বাধবে না/দেরী হবে। স্বাভাবিকভাবেই ব্লিডিং তখন বেশি হবে।
আরো অনেক কারণ আছে, স্বাভাবিক নারীদের জন্য এগুলো কিছু কমন কারণ অতিরিক্ত ব্লিডিং এর।