মুঠোফোনে নতুন রিংটোন ঠিক করে বারবার শোনার দিন পেরিয়েছে আগেই। নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, রিংটোনেই আগ্রহ হারাচ্ছে মানুষ, বিশেষ করে তরুণেরা। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিংটোন ডাউনলোড করার হার কমেছে এক–চতুর্থাংশ।
মুঠোফোন অ্যাপ বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান সেন্সর টাওয়ারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের মুঠোফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে রিংটোন-বিষয়ক অ্যাপ নামানোর হার ৪ বছরে কমেছে ২০ শতাংশ। ২০১৬ সালে যা ছিল ৪৬ লাখ, ২০২০ সালে এসে তা হয়েছে ৩৭ লাখ।
রিংটোনে মানুষের আগ্রহ কমার একটা বড় কারণ হলো তরুণদের মধ্যে মুঠোফোন সাইলেন্ট মোডে রাখার প্রবণতা বাড়ছে। অর্থাৎ আশপাশে কোথাও রিংটোন বেজে উঠলে মুঠোফোনটি তুলনামূলক বয়স্ক কারও হওয়ার সম্ভাবনা হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফকে এর সম্ভাব্য কারণ জানিয়েছেন কিছু বিশ্লেষক। তাঁরা বলেছেন, তরুণেরা এখন বেশির ভাগ সময় মুঠোফোনেই কাটান। অর্থাৎ তাঁদের চোখ এমনিতেই মুঠোফোনের পর্দায় আটকে থাকে। কল বা এসএমএস এলে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে জেনেও যাচ্ছেন। আলাদা করে রিংটোন বেজে ওঠার দরকার পড়ছে না।
আরেকটি কারণ হলো ওয়্যারেবল বা পরিধেয় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, নারীদের মধ্যে এটা বেশি। এমন গ্যাজেটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো স্মার্টওয়াচ। স্মার্টফোনের সঙ্গে যুক্ত থাকে এটি। নোটিফিকেশন এলে কবজিতে ভাইব্রেশন বা ডিভাইসের কম্পনেই টের পান ব্যবহারকারী, রিংটোনের প্রয়োজন পড়ে না।
আরেকটি জরিপের উল্লেখ এখানে করা যেতে পারে। যুক্তরাজ্যের সরকার অনুমোদিত নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফকমের ২০১৭ সালের জরিপে দেখা যায়, ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের সিংহভাগ ফোনকলের বদলে বার্তা আদান-প্রদানে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। অফকমের প্রতিবেদনে এ প্রজন্মকে বলা হয়েছিল ‘জেনারেশন মিউট’। এই বয়সীদের ৩৬ শতাংশ বার্তা আদান-প্রদানকেই যোগাযোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বলে মনে করে। আর ফোনকল বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেছে ১৫ শতাংশ।
‘মিলেনিয়াল’ প্রজন্মের মধ্যেও ফোনকলে আগ্রহ কমেছে। এ প্রজন্মের সবচেয়ে বয়সীরা ৪০ পূর্ণ করবেন এ বছর। মার্কিন এক জরিপে দেখা যায়, ৮০ শতাংশ মিলেনিয়াল খুদে বার্তা বা অনলাইনে যোগাযোগে বেশি স্বচ্ছন্দ। ফোনে কথা বলাটা তাঁদের কাছে ‘বুড়োদের’ কাজ বলে জানিয়েছে ইয়াহু নিউজ।