স্ট্রিং থিওরি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই। - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
263 বার দেখা হয়েছে
"পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (15,280 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (135,480 পয়েন্ট)
মোটামুটি গ্রিকদের সময় থেকেই দার্শনিকদের ধারণা ছিলো সকল পদার্থ, পরামানু (Atom) নামক অতিক্ষুদ্র, অবিভাজ্য কণা দ্বারা গঠিত। অর্থাৎ যেকোনো পদার্থকে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে সর্বশেষ যে অবস্থা পাওয়া সম্ভব তাই পরমানু। কিন্তু বর্তমানে আমাদের ভাঙ্গার দৌড় পরমানু পর্যন্ত আটকে থেকে নেই। পরমানুকে ভেঙ্গে আমরা এর ভেতর থেকে বের করে এনেছি ইলেক্ট্রন, নিউক্লি (Nuclei)। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞানীরা ইলেক্ট্রন, নিউক্লিকেও ভেঙ্গে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন এবং আবিষ্কার করেছেন আরও অসংখ্য অতিপারমানবিক কণার (Subatomic Particle) অস্তিত্ব। কিন্তু আগেকার সময়ের বিজ্ঞানী এবং দার্শনিকরা পরমানুর মাধ্যমে যেকোনো ধরণের পদার্থ সৃষ্টি হবার যে সরল কাঠামো (Framework) বের করে ফেলেছিলেন, অতিপারমানবিক কণাগুলো আবিষ্কার করার পর সেটা করা প্রায় অসম্ভব এবং ঝামেলার কাজ হয়ে দাঁড়ালো। নিউট্রিনোস, কোয়ার্কস, মেসন, লেপটনস, হার্ডডন্স, গ্লুওনস, ডব্লিও-বোসন ইত্যাদি ইত্যাদি উদ্ভট নামের এবং ধর্মের অতিপারমানিক কণার জঙ্গলই যে প্রকৃতির একেবারে মৌলিক পর্যায়ের অবস্থা সেটা মেনে নেওয়াটা কষ্টকরই বটে।

পদার্থের গাঠনিক কাঠামো ব্যাখ্যা করার কষ্টসাধ্য এই বিষয়টাকে অতিচমৎকার ও সরলভাবে উপস্থাপন করা যায় স্ট্রিং তত্ত্ব (String theory) এবং এম তত্ত্ব (M-theory) দ্বারা। অতিপারমানবিক কণা দ্বারা সকল ধরণের পদার্থ সর্বোপরী মহাবিশ্ব সৃষ্টিকে আসলে তুলনা করা যায় ভায়োলিনের তার কিংবা ড্রামের মেমব্রেনের মাধ্যমে সুর সৃষ্টির সাথে। তবে মনে রাখা দরকার, এগুলো সাধারণ তার কিংবা মেমব্রেনের মতো নয়, এদের অস্তিত্ব দশ-এগারো মাত্রা পর্যন্ত বিস্তৃত।

ব্যাপারটাকে আরেকটু বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। পদার্থবিজ্ঞানীরা ইলেক্ট্রনকে গণ্য করেন অতিঅতিক্ষুদ্র একটি মৌলিক কণা হিসেবে। যখন তারা ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের নতুন ধরণের কোনো অতিঅতিক্ষুদ্র কণার সন্ধান পান তখন তার জন্য একটি নতুন নাম বরাদ্দ করেন। এরফলে বর্তমানে প্রায় শ’খানেক মৌলিক কণা নিয়ে তাদের মাথা ঘামাতে হচ্ছে। এগুলোই উপরে বর্নিত অতিপারমানবিক কণা। কিন্তু স্ট্রিং তত্ত্ব মতে, ইলেক্ট্রনের ভেতরটা যদি সুপারমাইক্রোস্কোপ দ্বারা দেখা সম্ভবপর হতো তাহলে আমরা কোনো কণা দেখতাম না, আমরা দেখতাম কম্পিত এক তার। এটাকে আমাদের কণা বলে মনে হয় কারণ আমাদের যন্ত্রগুলো এতো সুক্ষ্ম পরিমাপ উপযোগী নয়।
এই অতিক্ষুদ্র তারগুলোই আসলে ভিন্ন ভিন্ন কম্পাঙ্কে স্পন্দিত এবং অনুরণনিত হয়। আমরা যদি একটি অতিপারমানবিক কণার সুক্ষ্ম তারের কম্পনের হার পরিবর্তন করে দেই তাহলে ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের আরেকটি অতিপারমানবিক কণা সৃষ্টি হবে, ধরা যাক কোয়ার্ক। এখন সেটি যদি আবার পরিবর্তন করি তাহলে হয়তো পাওয়া যাবে নিউট্রিনো। সঙ্গীতে আমরা যেমন ভায়োলিন বা গিটারের তার কাঁপিয়ে ভিন্ন ভিন্ন নোট সৃষ্টি করি, অতিপারমানবিক কণাগুলোও সেরকম ভিন্ন ভিন্ন নোট। সুতরাং অসংখ্য অতিপারমানবিক কণাগুলো শুধুমাত্র একটি বস্তু দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা সম্ভব, সেটা হলো স্ট্রিং বা তার!

স্ট্রিং তত্ত্ব আলোকে, হাজার বছর ধরে পদার্থবিজ্ঞানের যে নিয়মনীতিগুলো আমরা আবিষ্কার এবং লিপিবদ্ধ করেছি সেগুলো গিটার কিংবা ভায়োলিনের বিভিন্ন নোটের সমন্বয়ে সৃষ্ট প্রীতিকর সংমিশ্রন (Harmony)। রসায়নবিজ্ঞানকে বলা যেতে পারে সুর (Melody) আর পুরো মহাবিশ্ব সেক্ষেত্রে হবে লুদউইন ভ্যান বেইতোভেন কোনো সিম্ফোনি!!
0 টি ভোট
করেছেন (33,350 পয়েন্ট)
পদার্থবিজ্ঞানে স্ট্রিং থিওরি হচ্ছে একধরনের গণিতনির্ভর তাত্ত্বিক কাঠামো দ্বারা বিন্দু সদৃশ কণা বা কণা পদার্থবিজ্ঞানকে একমাত্রিক তার বা স্ট্রিং দ্বারা প্রতিস্থাপন করা। অর্থাৎ স্ট্রিং তত্ত্ব অনুযায়ী দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা বিহীন কোনো গোল বিন্দু নেওয়া হলে এবং তাকে বহুগুণে বিবর্ধন করা গেলে, সেখানে শুধু একমাত্রিক বিশাল লম্বা তার বা স্ট্রিং দেখা যাবে। স্ট্রিং তত্ত্ব অনুসারে প্রকৃতিতে প্রাপ্ত সকল মৌলিক কণাই আসলে একরকমের তার। এসব তার আবার বিভিন্ন কম্পাঙ্কে কাঁপছে। এসব তারের কম্পাঙ্কের ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন রকম বৈশিষ্ট্যের মৌলিক কণিকার সৃষ্টি হয়। তারের কম্পণের পার্থক্যই এসব কণিকার আধান, ভর নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে।

স্ট্রিং থিওরী একটি বিস্তৃত ও বৈচিত্রময় বিষয় যা পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক প্রশ্নগুলির সমাধান করার চেষ্টা করে। স্ট্রিং থিওরী দ্বারা কৃষ্ণগহ্ববর, প্রারম্ভিক মহাবিশ্বের গঠনকৌশল পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞান  এবং ঘনীভূত পদার্থবিজ্ঞানের নানাবিধ সমস্যাগুলিতে প্রয়োগ করা হয়েছে এবং এটি বিশুদ্ধ গণিতের বেশ কয়েকটি বড় উন্নয়নকে অনুপ্রাণিত করেছে। যেহেতু স্ট্রিং তত্ত্ব মহাকর্ষ এবং কণা পদার্থবিজ্ঞানের একটি সম্ভাব্য সমন্বিত বিবরণ প্রকাশ করে, এজন্য স্ট্রিং তত্ত্বকে সবকিছুর তত্ত্ব বলেও অভিহিত করা হয়। সবকিছুর তত্ত্ব এমন এক গাণিতিক মডেল যা দ্বারা পদার্থের অবস্থা এবং সমস্ত বলকে একত্রে ব্যাখ্যা করা যায়।

কোয়ান্টাম ক্রোমোডাইনামিক্সের অনুপস্থিতিতে স্ট্রিং থিওরিটি প্রথমত ১৯৬০-এর দশকে শক্তিশালী নিউক্লিয়ার পারমাণবিক তত্ত্বের তত্ত্ব হিসাবে গবেষণা করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে, এটি উপলব্ধি করা হয় যে, বহুমাত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি যা পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানের একটি তত্ত্বের মত স্ট্রিং তত্ত্বকে অনুপযুক্ত করে তোলে, এটি মহাকর্ষের একটি কোয়ান্টাম তত্ত্বের জন্য একটি সম্ভাব্য প্রার্থী করেছে। স্ট্রিং তত্ত্বের প্রথম সংস্করণ, বোসোনিক স্ট্রিং থিওরিটি, বোসনের নামে পরিচিত কণার মাত্রা অন্তর্ভুক্ত করে। এটি পরে সুপার স্ট্রিং তত্ত্বের মধ্যে বিকশিত হয়, যা বোসনগুলির মধ্যে সুপারসোমমেট্রি এবং ফাংশন নামে কণার শ্রেণীবিন্যাসের একটি সংযোগ স্থাপন করে। সুপার স্ট্রিং তত্ত্বের পাঁচটি সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্করণগুলি ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ধারণা করা হয়েছিল যে তারা একক তত্ত্বের একক তত্ত্বের সবকটি সীমিত ক্ষেত্রে এম-থিওরি নামে পরিচিত। ১৯৯৭সালের শেষের দিকে, তত্ত্ববিদরা অ্যাডএস/সিএফটি পত্রিকা নামে পরিচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আবিষ্কার করেন, যা স্ট্রিং থিওরিটিকে অন্য ধরনের শারীরিক থিওরির সাথে সম্পর্কিত করে যা কোয়ান্টাম ফিল্ড তত্ত্ব নামে পরিচিত।

স্ট্রিং তত্ত্বের একটি চ্যালেঞ্জ হল যে সম্পূর্ণ তত্ত্বটি সব পরিস্থিতিতে সন্তোষজনক সংজ্ঞায়িত করে না। আরেকটি বিষয় হল তত্ত্বটি সম্ভাব্য ব্রডকাস্টের একটি বিশাল আড়াআতকে বর্ণনা করার কথা বলে মনে করা হয় এবং স্ট্রিং থিওরির উপর ভিত্তি করে কণা পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্বগুলি বিকাশের প্রচলন রয়েছে। এই সমস্যাগুলি সম্প্রদায়ের কিছু পদার্থবিদ্যা পদার্থবিজ্ঞানের এই পন্থা সমালোচনা এবং স্ট্রিং তত্ত্ব একীকরণ উপর অব্যাহত গবেষণা মূল্য দাবি করেছে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 394 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 1,042 বার দেখা হয়েছে
+6 টি ভোট
1 উত্তর 179 বার দেখা হয়েছে
02 জানুয়ারি 2021 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Rayhan (6,700 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 180 বার দেখা হয়েছে
02 জানুয়ারি "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Noor (1,100 পয়েন্ট)

10,776 টি প্রশ্ন

18,469 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

271,540 জন সদস্য

117 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 115 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Shariar Rafi

    420 পয়েন্ট

  2. Tazriyan

    190 পয়েন্ট

  3. Khandoker Farhan

    110 পয়েন্ট

  4. Eyasin

    110 পয়েন্ট

  5. HermineTrund

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...