চা-কফি খেলে স্নায়ু উদ্দীপ্ত হয়। আর, স্নায়ুকে উদ্দীপ্ত করার এই কাজটা করে ক্যাফেইন। চা-কফিতে ক্যাফেইনের মাত্রা ভিন্ন হয়। তবে গড়ে ১০০ গ্রাম চা-তে প্রায় ১১ গ্রাম ক্যাফেইন থাকে, আর কফিতে প্রতি ১০০ গ্রামে থাকে ৪০ গ্রাম। সেজন্যই কফি ঘুম তাড়ানো বা স্নায়ু উদ্দীপ্ত করার কাজে বেশি কার্যকরী।
খাওয়ার পর ক্যাফেইন দ্রুত রক্তের মাধ্যমে যকৃতে চলে যায়। যকৃতে গিয়ে ক্যাফেইন ভেঙে যায়। তারপর তা প্রভাব ফেলে বিভিন্ন অঙ্গে। তবে এর মূল প্রভাব মস্তিষ্কে। অ্যাডেনোসিন নামে এক ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার আছে মস্তিষ্কে। এটি মস্তিষ্ককে শিথিল করে দেয়। ফলে দেহে ক্লান্তি বোধ হয়। সারাদিন ধরে এই অ্যাডেনোসিনের মাত্রা বেড়ে চলে। এক সময় তাই ক্লান্তিতে ঘুম চলে আসে। ক্যাফেইন এই অ্যাডেনোসিনকে আটকে দেয়। ফলে শরীর ক্লান্ত হওয়ার অনুভূতি হারিয়ে ফেলে।
পাশাপাশি, ক্যাফেইন রক্তে অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তীব্র আবেগ বা উত্তেজনা বোধের জন্য দায়ী এই অ্যাড্রিনালিন হরমোন। এছাড়াও, এটি ডোপামিন এবং নর-এপিনেফ্রিন ক্ষরণের মাত্রাও বাড়িয়ে দেয়। পৃথিবীর প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন অন্তত একটি ক্যাফেইনযুক্ত খাবার খান বা পানীয় পান করেন।
গবেষণা থেকে দেখা গেছে, ক্যাফেইনের বেশ কিছু উপকারও আছে। এটি অ্যালঝাইমার বা এ ধরনের স্নায়বিক রোগ হওয়ার হার কমিয়ে দেয়। তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণে শরীরে এক ধরনের ক্যাফেইননির্ভরতা তৈরি হয়। তখন ক্যাফেইন না খেলে মাথা ব্যথা, অস্বস্তি লাগা, হৃৎকম্পনের হার বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। সেজন্য অতিরিক্ত চা-কফি খাওয়া বা এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া উচিত নয় বলেই বলেন পুষ্টিবিশেষজ্ঞেরা। সূত্র: জি নিউজ