যারা জানে না ব্রণ কেন হয় এবং কীভাবে হয়, তারাই ব্রণ নিয়ে রকমারি চিকিৎসার ডালি সাজায় আর উপদেশের ফুলঝুরি বর্ষণ করে। ব্রণ মূলত হয়ে থাকে সিবাসিয়াস গ্ল্যান্ডের অতিক্রিয়ার কারণে।
সাধারণত হরমোনের (এন্ড্রোজেন) প্রভাবেই এটি হয়ে থাকে। বয়ঃসন্ধিকাল থেকে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের শরীরেই এই সেঙ্ হরমোনটির (এন্ড্রোজেন) নিঃসরণ ঘটে। প্রাপ্ত বয়সে এই হরমোনের প্রভাবে সিবাসিয়াস গ্ল্যান্ড (গ্রন্থি) প্রচুর পরিমাণে সিবাম তৈরি করে থাকে। এই গাঢ় এবং আঠালো চরিত্রের সিবাম খুব সহজেই সিবাসিয়াস গ্ল্যান্ড (গ্রন্থি) এবং হেয়ার ফলিকুলকে ভরাট করে বন্ধ করে দেয়। ক্রমশ এই গ্রন্থিটি ফুলে উঠতে থাকে।
এক পর্যায়ে এর মধ্যে সামান্য পুঁজও জমে থাকে। এক সময় এটি ফেটে অবস্থাভেদে শাঁসের মতো সাদা পদার্থ কিংবা পুঁজ বের হতে দেখা যায়। এ অবস্থায় এটিতে জীবাণু সংক্রমিত হয়ে প্রদাহের সৃষ্টি হয়, যা সাধারণের কাছে ইনফেকশন বলে সমধিক পরিচিত।
সিবাসিয়াস গ্ল্যান্ড বা ঘর্মগ্রন্থির ফুলে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট অবস্থাকেই ব্রণ বলা হয়ে থাকে। ব্রণকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় একনি। ব্রুণের বিভিন্ন ধরন এবং পর্যায় রয়েছে, যা সাধারণের কাছে বোধগম্য হওয়ার কথা নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের বংশগতির বাহক জিনের সঙ্গে এন্ড্রোজেনের অতি নিঃসরণের একটি যোগসাজশ রয়েছে। এদিকে আমেরিকার গবেষকরা ব্রণ সৃষ্টিতে কিংবা বেড়ে যাওয়ার পেছনে চকলেটের কোনো ভূমিকা থাকার আশঙ্কাকে একেবারেই নাকচ করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রমাণ হিসেবে সমীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্রণে আক্রান্ত এবং আক্রান্ত নয়, এমন তরুণ-তরুণীকে দীর্ঘদিন চকলেট খাইয়ে দেখা গেছে, তরুণ-তরুণীদের কারও নতুন করে ব্রণ ওঠেনি এবং যাদের এর আগে ব্রণ ছিল তাদের ব্রণের তীব্রতাও বাড়েনি। এদিকে ইয়ালি ইনস্টিটিউটের ডার্মাটোন্সলি (ত্বক বিষয়ক চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি শাখা) বিভাগের ক্লিনিক্যান্স অধ্যাপক ডা. অ্যান্ডু ব্রনিনের কথা হচ্ছে, প্রকৃতপক্ষেই যদি চকলেট জাতীয় খাবারে ব্রণ বেড়ে যেত কিংবা ব্রণ হতো বা ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা থাকত তাহলে শিশু-কিশোরদের মাঝেই ব্রণের প্রকোপ বেশি থাকত। কারণ শিশুরাই চকলেট, ক্যান্ডি জাতীয় খাবার বেশি খেয়ে থাকে।