শিশুরা স্তনের দুধ পান করা ছাড়া অন্যরা পান করলে কি হতে পারে? তাছাড়া এই দুধে কি আছে এবং অন্য সব দুধ থেকে পার্থক্য কি? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+3 টি ভোট
1,199 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (490 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (300 পয়েন্ট)
আইবিএফএএনের তথ্য অনুযায়ী, শিশুকে মায়ের দুধ না খাওয়ালে নিউমোনিয়াজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১৫ গুণ, ডায়রিয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১১ গুণ, শিশুদের অপুষ্টি ও অন্যান্য কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১৪ গুণ এবং জন্ডিস, কানপাকা ও পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণসহ ডায়রিয়ার শঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া শারীরিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়; বয়সের তুলনায় ওজন অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায়; দীর্ঘস্থায়ী রোগের (ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্থূলতা) ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।তাই জন্মের পর থেকে দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুকে মায়ের দুধ দিয়ে যেতে হবে। ছয় মাস পর্যন্ত শুধুই বুকের দুধ এবং তারপর থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি পানি ও অন্যান্য খাবার দিতে হবে। ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. লুনা পারভীন জানালেন কেন একটি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। আসুন জেনে নেই শিশুর বিকাশে মাতৃদুগ্ধ কেন জরুরি-

১. মায়ের দুধে শিশুর পুষ্টি চাহিদা পূরণে ও শারীরিক গঠন বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড, প্রোটিন, শর্করা ও চর্বি থাকে।
২. মায়ের দুধ পান করলে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এতে থাকা নানা রকম ইমিউনোগ্লোবিউলিন, অ্যান্টিবডি এবং রোগপ্রতিরোধক শিশুকে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। যেসব শিশু প্রথম ছয় মাস এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং করেনি, তাদেরই নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া প্রভৃতির সংক্রমণ বেশি হয়।
৩. শিশুর পাকস্থলী ও পরিপাকতন্ত্র মায়ের দুধের ভিটামিন, খনিজ ও এনজাইম সম্পূর্ণরূপে শোষণ করতে ও কাজে লাগাতে সক্ষম ও প্রস্তুত। বাইরের ফর্মুলা মিল্ক বা অন্য কোনো খাবারের জন্য প্রস্তুত নয়। তাই মায়ের দুধে শিশুর বদহজম বা অ্যালার্জি হওয়ার ঝুঁকি নেই।
৪. মায়ের দুধে থাকা উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে সাহায্য করে। এটি ভিটামিন ডি হরমোন তৈরিতেও সহায়ক। বর্তমানে দেখা গেছে ভিটামিন ডি-এর অভাবে নানারকম অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে শিশুসহ নানা বয়সী মানুষের। এমনকি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতেও ভিটামিন ডি এর উপযোগিতা পাওয়া গেছে।
৫. মায়ের দুধের ওপর নির্ভরশীল শিশুর প্রথম বছরে তিন গুণ ওজন বাড়ে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।
৬. শিশুর আকস্মিক মৃত্যু (সিডস), সর্দি–কাশি বা ফ্লু, কান পাকা, হাঁপানি, একজিমা, টাইপ-১ ডায়াবেটিস, দন্তরোগ, স্থূলতা, শিশুদের ক্যানসার এবং পরবর্তী জীবনে মানসিক রোগ প্রভৃতি সমস্যা প্রতিরোধে মাতৃদুগ্ধ পানের উপকারিতা অনস্বীকার্য।
৭. শিশু জন্মের পর তৃতীয় দিনে মায়ের বুকে আসল দুধ আসার আগ পর্যন্ত যে হলদেটে তরল পদার্থ বের হয়, তাকেই বলে শালদুধ। এটি নবজাতকের শ্রেষ্ঠ খাবার যা গর্ভাবস্থার শেষ দিক থেকেই স্তন থেকে নিঃসৃত হতে শুরু করে। শালদুধ পরিমাণে থাকে অল্প, কিন্তু এতে আমিষ আর শর্করার ভাগ থাকে অনেক বেশি আর চর্বি বা মাখন জাতীয় উপাদানের পরিমাণ থাকে খুব কম। ফলে নবজাতক খুব সহজেই হজম করতে পারে। এতে শিশু তাড়াতাড়ি পায়খানা করে ফলে জন্ডিস হবার সম্ভাবনাও কমে।
শালদুধে প্রচুর পরিমাণ ‘ইমিউনোগ্লোবিউলিন’ থাকে যা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই শালদুধকে বলা হয় শিশুর প্রথম টিকা।
৮. মনে রাখতে হবে জন্মের পর থেকে প্রথম ছয় মাস মায়ের দুধই হবে শিশুর একমাত্র খাবার। এতেই মিটবে তার পর্যাপ্ত পুষ্টি চাহিদা। ছয় মাস থেকে অন্যান্য খাবার ও পানি শুধু হবে তাও অল্প অল্প করে। কিন্তু মাতৃদুগ্ধ পান চালিয়ে যেতে হবে দুই বছর বয়স পর্যন্ত।
৯. অসুস্থ, প্রি-ম্যাচিউরড, সময়ের আগে ভূমিষ্ঠ বা কম ওজনবিশিষ্ট শিশুকে অবশ্যই মায়ের দুধ পান করাতে হবে। হাসপাতালের ইনকিউবেটর বা আইসিইউতে থাকা শিশুকেও বারবার যেয়ে দুধ পান করাতে হবে বা তার কাছে বিশেষ ব্যবস্থায় মায়ের বুকের দুধ সংগ্রহ করে নিয়ে খাওয়াতে হবে।
১০. বুকের দুধ পান করালে শুধুমাত্র যে শিশুরই উপকার তা নয়, মায়েরাও নানাভাবে উপকৃত হন। বুকের দুধ পান করালে মায়েদের প্রসব-পরবর্তী রক্তপাত কম হয়। এছাড়াও একজন মা যত বেশি স্তন্যপান করাবেন, তত দ্রুত তার জরায়ু সংকুচিত হয়ে আগের অবস্থানে ফিরে আসবে। এমনকি তার ওজনও দ্রুত কমে। মায়ের গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে শিশুকে বুকের দুধ পান করালে শর্করা কমে আসে দ্রুত। তাছাড়া বর্তমানে উদ্বেগ বাড়ানো স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিও কমে।

Source: https://sarabangla.net

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+5 টি ভোট
1 উত্তর 4,102 বার দেখা হয়েছে

10,842 টি প্রশ্ন

18,542 টি উত্তর

4,746 টি মন্তব্য

845,342 জন সদস্য

11 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 11 জন গেস্ট অনলাইনে

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল #science ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক #biology পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন গাছ মনোবিজ্ঞান খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার দুধ উপায় হাত শব্দ মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা বাচ্চা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...