মৃগীরোগের চিকিৎসা প্রধানত: নিম্ন লিখিত বিষয়গুলির উপর নির্ভরশীল:
এন্টি এপিলেপটিক ওশুধ
এন্টিএপিলেপটিক ওষুধগুলিই সাধারণত পছন্দসই চিকিৎসা ব্যবস্থা। প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে যে 70% ঘটনায় ওষুধ দিয়েই উপসর্গগুলি বা খেঁচুনি নিয়ন্ত্রণ বা নিরাময় করা গিয়েছে। মস্তিষ্ক থেকে নিঃসৃত হওয়া রাসায়নিকগুলির পরিমাণ পরিবর্তন করে এই ওষুধগুলি খেঁচুনির তীব্রতা এবং পুনরাবৃত্তির হার হ্রাস করতে সাহায্য করে। যদিও এই ওষুধগুলি মৃগীরোগের নিরাময় করতে পারে না, কিন্তু নিয়মিত চিকিৎসায় খেঁচুনির ঘটনার পুনরাবৃত্তির হার হ্রাস করতে। এই ওষুধগুলি বিভিন্ন প্রকারে পাওয়া যায়। চিকিৎসার শুরুতে ওষুধ প্রায়ই অল্প মাত্রায় প্রয়োগ করা হয় এবং খেঁচুনির ঘটনা না থামা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে ওষুধের মাত্রা বৃদ্ধি করা হয়। কোন অর্থপূর্ণ প্রতিক্রিয়া বা উন্নতি না দেখা গেলে ডাক্তারবাবু ওষুধ পরিবর্তন করতে পারেন। মৃগীরোগের ধরণের উপরে ওষুধের ধরণ নির্ভর করে, এবং শুধু মাত্র একজন চিকিৎসকই এই ওষুধগুলি প্রেসক্রাইব করতে পারেন। রোগী যদি অন্য কোন ওষুধ নিতে থাকেন তাহলে ডাক্তারবাবুকে তা জানাতে হবে।
এই ওষুধগুলির পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াগুলির অন্তর্গত হল:
যদি কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা যায় তাহলে তৎক্ষণাৎ তা ডাক্তারবাবুকে জানাতে হবে। সুতরাং, যেমন ভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ওষুধগুলি ঠিক সেই ভাবেই নিতে হবে। ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করার আগে ডাক্তারবাবুর সাথে কথা বলে নিন। এমন কি ওষুধগুলির জেনেরিক সংস্করণ ব্যবহার করতে হলেও ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিন। ডাক্তারবাবুর অনুমতি ছাড়া ওষুধ বন্ধ করবেন না। যদি রোগীর মেজাজের কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় তা হলে ডাক্তারবাবুকে তা জানান। সময়ের সাথে সাথে অধিকাংশ এন্টিএপিলেপটিক ওষুধই বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং ব্যক্তিটি কোন উপসর্গ ছাড়াই বাঁচতে পারবেন।
শল্য চিকিৎসা
যদি ওষুধগুলি পর্যাপ্ত আরাম না দেয় অথবা বেশ কিছু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তা হলে শল্য চিকিৎসা করার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে। অস্ত্রোপচারের সময় মস্তিষ্কের প্রভাবিত অংশ বাদ দেওয়া হয়। অস্ত্রোপচার তখনই করা হয় যখন মস্তিষ্কের খুব ছোট এলাকা প্রভাবিত হয় এবং সেই এলাকা কোন শরীরের কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যেমন বাক শক্তি, শ্রবণ শক্তি, চলাফেরা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নড়াচড়া ও সমন্বয় ইত্যাদির কোন ক্ষতি করে না।
জীবনধারার ব্যবস্থাপনা
খেঁচুনির নিয়ন্ত্রণ জরুরী কারণ এটি বিপদজনক এবং জটিল সমস্যার সৃষ্টি করা।
- নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করবেন। ডাক্তারবাবুর অনুমতি ছাড়া ওষুধ গ্রহণ এড়িয়ে যাবেন না বা বন্ধ করবেন না।
- খেঁচুনি বা মৃগীরোগ শুরুর কারণ খুঁজে বার করুন। খুব সাধারণ কারণগুলি হল মদ্যপান, অনিদ্রা, চাপ, উজ্জ্বল আলো জোরে আওয়াজ ইত্যাদি।
- খেঁচুনি কবে এবং কখন শুরু হল, এর তীব্রতা কত, কতক্ষণ ধরে হয়েছে এবং তার সাথে খেঁচুনি শুরুর আগে আপনি কি করছিলেন তা বিস্তারিত ভাবে লিখে রাখুন।
- খেঁচুনি শুরুর কারণগুলিকে এই ভাবে মোকাবিলা করার চেষ্টা করুন:
- ঘুমানোর জন্য তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ার চেষ্টা করুন।
- শ্বাসের হালকা ব্যায়াম করুন।
- মদ্যপান কম করুন।
- যদি খেঁচুনি খুব ঘন ঘন হয় তবে এই কাজগুলি করবেন না যেমন, গাড়ি চালানো, সাঁতার কাটা এবং রান্না করা। এইগুলি করার সময় খেঁচুনি হলে তা খুবই ক্ষতিকারক হবে।
- বাড়িতে স্মোক ডিটেক্টার লাগান।
- বাড়ির আসবাবপত্রগুলির কোণগুলি যেন মসৃণ হয়।
- স্নান করার সময় স্নান-ঘরের দরজা বন্ধ করবেন না।
- বাথটাবে স্নান করার বদলে শাওয়ার ব্যবহার করুন। এতে খেঁচুনি শুরু হলে বাথটাবে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
- সাঁতার কাটার সময় এমন সঙ্গী সাথে রাখুন যে আপনার খেঁচুনি শুরু হলে আপনাকে উদ্ধার করতে পারবে।
- ঘরের বাইরে কোন খেলা ধুলার সময় মাথায় হেলমেট ব্যবহার করুন।
-যদিও এটির চিকিৎসা রয়েছে।তবে সম্পূর্ণ নিরাময় যোগ্য না।
এক্ষেত্রে দ্বিতীয় টার্মের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।