কোষ বিভাজন একটি মৌলিক ও অত্যাবশ্যকীয় প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে জীবের দৈহিকবৃদ্ধি ও বংশ বৃদ্ধি ঘটে । যে প্রক্রিয়ায় জীব কোষের বিভক্তির মাধ্যমে একটি থেকে দুটি বা চারটি কোষের সৃষ্টি হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে । কোষ বিভাজন সাধারণত বৃহত্তর কোষ চক্রের অংশ হিসাবে ঘটে। বিভাজনের ফলে সৃষ্ট নতুন কোষকে অপত্য কোষ (Daughter cell) এবং যে কোষটি বিভাজিত হয় তাকে মাতৃ কোষ (Mother cell) বলে। সুকেন্দ্রিক জীবে দুইরকম কোষ বিভাজন দেখা যায়; একটি হলো বর্ধনশীল কোষ বিভাজন, যেখানে বংশানুগতভাবে অপত্য কোষগুলো এবং মাতৃকোষ অভিন্ন (মাইটোসিস), অন্যটি হলো প্রজনন সংক্রান্ত কোষ বিভাজন, যেখানে অপত্য কোষগুলিতে ক্রোমোজোমের সংখ্যা অর্ধেক হ্রাস পেয়ে হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট উৎপন্ন করে (মিয়োসিস)। কোষবিদ্যায় মাইটোসিস হলো কোষ চক্রের একটি অংশ, যেখানে প্রতিলিপি করা ক্রোমোজোমগুলি দুটি নতুন নিউক্লিয়াসে বিভক্ত হয়। এই কোষ বিভাজন জিনগতভাবে অভিন্ন কোষের জন্ম হয় যাদের ক্রোমোজোমের মোট সংখ্যা বজায় থাকে। সাধারণত মাইটোসিস (নিউক্লিয়াসের বিভাজন) এর পূর্বে ইন্টারফেজের এস পর্যায় (যখন ডিএনএ প্রতিলিপি হয়) হয় এবং এটির পরে টেলোফেজ এবং সাইটোকাইনেসিস সম্পন্ন হয়; যখন একটি কোষের সাইটোপ্লাজম, অঙ্গাণু এবং কোষ ঝিল্লি বিভাজিত হয়ে নতুন সৃষ্ট কোষ দুটির মধ্যে প্রায় সমানভাবে বিভক্ত হয়ে যায়। মাইটোসিসের বিভিন্ন ধাপগুলি একসাথে একটি প্রাণীর কোষ চক্রের মাইটোটিক (এম) পর্বকে সংজ্ঞায়িত করে। ওয়াল্টার ফ্লেমিং ১৮৮২ সালে সামুদ্রিক সালামান্ডার (Triturus maculosa) কোষে প্রথমবারের মতো কোষ বিভাজন লক্ষ্য করেন।