সাধারণত কিডনি বিকল হলে ডায়ালাইসিস করতে হয়। কিডনি বা বৃক্ক এবং এর বিকল্প ডায়ালাইজার তরল পদার্থের ব্যাপন (diffusion) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রক্ত হতে বর্জ্য পদার্থ এবং সূক্ষ ছাঁকন প্রক্রিয়ায় (ultrafiltration) পানি ছেঁকে একে মূত্র হিসেবে শরীর থেকে বের করে দেয় ।
ডায়ালাইসিস মূলত ২ ধরনের:
১. হেমোডায়ালাইসিস
২. পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস
হেমোডায়ালাইসিসঃ
সাধারনত একটি মেশিনের মাধ্যমে হেমোডায়ালাইসিস করা হয়। মেশিনটি শরীরের বাইরে স্থাপিত থাকে এবং এর মধ্যকার ফিল্টারের মধ্য দিয়ে রক্ত প্রবাহিত করা হয়। পরিশোধন শেষে রক্ত পুনরায় শরীরে ফেরত পাঠানো হয় । সাধারণত সপ্তাহে তিন থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত হিমোডায়ালাইসিস করতে হয়। প্রতি সেশনে কতটা সময় করতে হবে তা নির্ভর করে রোগীর কিডনির অবস্থার ওপর। কিছু ক্ষেত্রে রোগীর হিমোডায়ালাইসিস বাড়িতেও করা সম্ভব। যেমন— ডায়ালাইসিস করার সময় যে রোগী সুস্থ থাকে বা অবস্থা পরিবর্তিত হয় না, যখন রোগীর অন্য কোনো অসুখ না থাকে। হেমোডায়ালাইসিস করার আগে হাতে একটি এভি ফিস্টুলা করে নিতে হয়। এটি ডায়ালাইসিস শুরু করার অন্তত এক মাস আগে করতে হয়, কারণ, ক্ষত শুকিয়ে এটি তৈরি হতে মাস খানেক সময় লাগে।
এভি ফিস্টুলা: রক্তনালীর ফিস্টুলাকে ডায়ালাইসিস রোগীদের লাইফ লাইন বলা হয়। কারন এর মাধ্যমেই ডায়ালাইসিস করা হয় যা কৃত্রিম কিডনির কাজ করে, শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়। এদের ভাসকুলার একসেস বা হিমোডায়ালাইসিস একসেস ও বলা হয়।।
পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিসঃ
এই প্রক্রিয়ায় রোগীর শরীরের মধ্যেই রক্ত পরিশোধন করা হয়। একধরনের বিশেষ তরল পেটের ভিতরে রাখা হয় যেটি বর্জ্য পদার্থ গ্রহণ করে নেয় এবং নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া শেষে তরল বের করে নেয়া হয়। পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস সাধারনত বাসায় করা হয় ।পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস আবার দুই রকম। কন্টিনিউয়াস অ্যাম্বুলেটরি পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস বা সিএপিডি। কন্টিনিউয়াস সাইক্লিক পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস বা সিসিপিডি। প্রথমটি প্রতিদিন কয়েকবার করতে হয়। খুবই সহজ। রোগী বা রোগীর সঙ্গের লোকই করতে পারেন। কোনো যন্ত্রপাতির সাহায্য লাগে না। দ্বিতীয়টি সাধারণত রোগী যখন ঘুমায় তখন করতে হয়। সাধারণত প্রতি রাতেই করতে হয়। সময় লাগে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা। এটা করতে ছোট একটি মেশিনের সাহায্য লাগে।