মানুষ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণী অঙ্ক করতে পারে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
600 বার দেখা হয়েছে
"তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে করেছেন (141,860 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (141,860 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

প্রশ্নটার উত্তর মেলেনি এখনো। তবে এখন পর্যন্ত অন্য কোনো প্রাণী অঙ্ক বোঝে বা কষতে পারে বলে তেমন কোনো প্রমাণ মেলেনি। তাই গাণিতিক দক্ষতার বিষয়ে জীবজগতে মানুষের একক কৃতিত্ব মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাহলে এখন প্রশ্ন হলো, মানুষ কীভাবে অঙ্ক করে?

এই প্রশ্নের উত্তরটা জটিল। কেননা দেখা গেছে, একেক ধরনের গণিতের জন্য মস্তিষ্কের একেক এলাকাকে সক্রিয় হতে হয়। কখনো একাধিক এলাকা একসঙ্গে মিলেমিশে কাজটা সম্পন্ন করে। যেমন পাটিগণিত বুঝতে হলে আমাদের আগে বুঝতে হবে ভাষা, কেননা এতে থাকে বাক্য। আবার জ্যামিতি একটা ছবির মতো। জ্যামিতি করার সময় মস্তিষ্কের অক্সিপিটাল লোবের ভিস্যুয়াল এলাকা (যা দিয়ে আমরা দেখি) থেকে শুরু করে ফ্রন্টাল লোবের সেনসরি মোটর কর্টেক্স (যা হাতের নিখুঁত ও সূক্ষ্ম কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে) পর্যন্ত অনেক জায়গাকে একই সঙ্গে কাজ করতে হয়। আবার একটা জটিল অঙ্ক সমাধানে যে উচ্চস্তরের চিন্তা বা হাইয়ার থিংকিং দরকার, তার মূল কাজটা হয় ফ্রন্টাল লোবে। মানুষের মস্তিষ্ক কেন অঙ্কে পারদর্শী, তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। নানা ধরনের ইমেজিং স্টাডি হয়েছে এ নিয়ে। 

শেষ পর্যন্ত বলা হচ্ছে, গাণিতিক দক্ষতা আসলে ঠিক কোনো এলাকা বা কোনো পদ্ধতির ওপর এককভাবে নির্ভরশীল নয়। তবে দৃশ্য, স্থান বা স্পেস সম্পর্কে জ্ঞান এবং বিশ্লেষণী ক্ষমতা—মানব মস্তিষ্কের এ তিনটি দক্ষতা এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ কাজগুলো করতে আমাদের মস্তিষ্কে আছে এক বিস্তৃত নিউরাল নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্ক কয়েক বিলিয়ন নিউরন এবং তাদের মধ্যকার সংযোগ সেতু (যার সংখ্যা ২৫০ মিলিয়ন বিলিয়ন!), নিউরোট্রান্সমিটার, নিউরোমডুলেটর ইত্যাদির সাহায্যে তৈরি। আমাদের নিউরনগুলো কাজ করে একটা কম্পিউটারের সিপিইউর মতো। এখানে তথ্য ও ডেটা প্রসেসিং হয়। আর এ তথ্যগুলো সঞ্চয়, বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা করা ও সঠিক পদ্ধতিতে বিতরণের কাজটি করে প্রায় এক ট্রিলিয়ন গ্লিয়া কোষ। গণিত সমাধানে এ সবকিছু কাজ করে একটা ইউনিটের মতো। গোটা সার্কিটটা সমাপ্ত হলেই কেবল সমাধান মেলে।

তবে গণিতের জগতে মানুষের একটাই প্রতিদ্বন্দ্বী আছে—তা হলো কম্পিউটার বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কিন্তু কম্পিউটার কি মস্তিষ্কের চেয়ে অঙ্কে বেশি পারদর্শী? উত্তরটা হলো—না। কম্পিউটারের সঙ্গে মস্তিষ্কের পার্থক্য হলো যে কম্পিউটারের প্রসেসিং ও বিশ্লেষণে দুটো কাজের জন্য আলাদা দুটো অংশ লাগে, মস্তিষ্ক একাই মিলেমিশে তা করে ফেলে। একটা জটিল অঙ্ক বা ক্যালকুলেশন করতে যেখানে একটা কম্পিউটারকে কয়েক মিলিয়ন ধাপ পার হতে হয়, দরকার হয় বিশাল এনার্জির, সেখানে মানুষের মস্তিষ্ক ব্যবহার করে মাত্র কয়েক শ নিউরন ও সামান্য এনার্জি। মজার ব্যাপার হলো, কম্পিউটারকে আমরা আপাতদৃষ্টিতে মুহূর্তের মধ্যেই ক্যালকুলেশন করতে দেখি। কিন্তু মস্তিষ্কের প্রসেসিং গতি কম্পিউটারের তুলনায় বহুগুণ বেশি। 

একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে তড়িতগতিসম্পন্ন সুপার কম্পিউটার আছে চীনের গুয়াংজুতে। এর প্রসেসিং স্পিড ৫৪.৯ পিটাফ্লপস (এক পিটাফ্লপ মানে ১০^১৫ বা সেকেন্ডে এক হাজার ট্রিলিয়ন পয়েন্ট ক্যালকুলেশন করার দক্ষতা)। সেখানে একটা মস্তিষ্কের প্রসেসিং স্পিড গুনতে হবে এক্সাফ্লপ দিয়ে—যার অর্থ ১০^১৮ বা সেকেন্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন ক্যালকুলেশন করার দক্ষতা। এর ধারেকাছে পৌঁছাতে কম্পিউটারের সময় লাগবে আরও অনেক। তাহলে দেখা যাচ্ছে, কেবল জীবজগতে নয়, বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডেও সত্যিকার অর্থে গণিতের মাথা আছে কেবল মানুষেরই।

সূত্র: সায়েন্স এবিসি এবং এমআইট নিউজ

0 টি ভোট
করেছেন (28,740 পয়েন্ট)
মানুষ ছাড়া আর কোনো প্রাণী কি অঙ্ক করতে পারে? প্রশ্নটার উত্তর মেলেনি এখনো। তবে এখন পর্যন্ত অন্য কোনো প্রাণী অঙ্ক বোঝে বা কষতে পারে বলে তেমন কোনো প্রমাণ মেলেনি। তাই গাণিতিক দক্ষতার বিষয়ে জীবজগতে মানুষের একক কৃতিত্ব মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাহলে এখন প্রশ্ন হলো, মানুষ কীভাবে অঙ্ক করে?

 

এই প্রশ্নের উত্তরটা জটিল। কেননা দেখা গেছে, একেক ধরনের গণিতের জন্য মস্তিষ্কের একেক এলাকাকে সক্রিয় হতে হয়। কখনো একাধিক এলাকা একসঙ্গে মিলেমিশে কাজটা সম্পন্ন করে। যেমন পাটিগণিত বুঝতে হলে আমাদের আগে বুঝতে হবে ভাষা, কেননা এতে থাকে বাক্য। আবার জ্যামিতি একটা ছবির মতো। জ্যামিতি করার সময় মস্তিষ্কের অক্সিপিটাল লোবের ভিস্যুয়াল এলাকা (যা দিয়ে আমরা দেখি) থেকে শুরু করে ফ্রন্টাল লোবের সেনসরি মোটর কর্টেক্স (যা হাতের নিখুঁত ও সূক্ষ্ম কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে) পর্যন্ত অনেক জায়গাকে একই সঙ্গে কাজ করতে হয়। আবার একটা জটিল অঙ্ক সমাধানে যে উচ্চস্তরের চিন্তা বা হাইয়ার থিংকিং দরকার, তার মূল কাজটা হয় ফ্রন্টাল লোবে। মানুষের মস্তিষ্ক কেন অঙ্কে পারদর্শী, তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। নানা ধরনের ইমেজিং স্টাডি হয়েছে এ নিয়ে। শেষ পর্যন্ত বলা হচ্ছে, গাণিতিক দক্ষতা আসলে ঠিক কোনো এলাকা বা কোনো পদ্ধতির ওপর এককভাবে নির্ভরশীল নয়। তবে দৃশ্য, স্থান বা স্পেস সম্পর্কে জ্ঞান এবং বিশ্লেষণী ক্ষমতা—মানব মস্তিষ্কের এ তিনটি দক্ষতা এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ কাজগুলো করতে আমাদের মস্তিষ্কে আছে এক বিস্তৃত নিউরাল নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্ক কয়েক বিলিয়ন নিউরন এবং তাদের মধ্যকার সংযোগ সেতু (যার সংখ্যা ২৫০ মিলিয়ন বিলিয়ন!), নিউরোট্রান্সমিটার, নিউরোমডুলেটর ইত্যাদির সাহায্যে তৈরি। আমাদের নিউরনগুলো কাজ করে একটা কম্পিউটারের সিপিইউর মতো। এখানে তথ্য ও ডেটা প্রসেসিং হয়। আর এ তথ্যগুলো সঞ্চয়, বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা করা ও সঠিক পদ্ধতিতে বিতরণের কাজটি করে প্রায় এক ট্রিলিয়ন গ্লিয়া কোষ। গণিত সমাধানে এ সবকিছু কাজ করে একটা ইউনিটের মতো। গোটা সার্কিটটা সমাপ্ত হলেই কেবল সমাধান মেলে।

 

তবে গণিতের জগতে মানুষের একটাই প্রতিদ্বন্দ্বী আছে—তা হলো কম্পিউটার বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কিন্তু কম্পিউটার কি মস্তিষ্কের চেয়ে অঙ্কে বেশি পারদর্শী? উত্তরটা হলো—না। কম্পিউটারের সঙ্গে মস্তিষ্কের পার্থক্য হলো যে কম্পিউটারের প্রসেসিং ও বিশ্লেষণে দুটো কাজের জন্য আলাদা দুটো অংশ লাগে, মস্তিষ্ক একাই মিলেমিশে তা করে ফেলে। একটা জটিল অঙ্ক বা ক্যালকুলেশন করতে যেখানে একটা কম্পিউটারকে কয়েক মিলিয়ন ধাপ পার হতে হয়, দরকার হয় বিশাল এনার্জির, সেখানে মানুষের মস্তিষ্ক ব্যবহার করে মাত্র কয়েক শ নিউরন ও সামান্য এনার্জি। মজার ব্যাপার হলো, কম্পিউটারকে আমরা আপাতদৃষ্টিতে মুহূর্তের মধ্যেই ক্যালকুলেশন করতে দেখি। কিন্তু মস্তিষ্কের প্রসেসিং গতি কম্পিউটারের তুলনায় বহুগুণ বেশি। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে তড়িতগতিসম্পন্ন সুপার কম্পিউটার আছে চীনের গুয়াংজুতে। এর প্রসেসিং স্পিড ৫৪.৯ পিটাফ্লপস (এক পিটাফ্লপ মানে ১০১৫ বা সেকেন্ডে এক হাজার ট্রিলিয়ন পয়েন্ট ক্যালকুলেশন করার দক্ষতা)। সেখানে একটা মস্তিষ্কের প্রসেসিং স্পিড গুনতে হবে এক্সাফ্লপ দিয়ে—যার অর্থ ১০১৮ বা সেকেন্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন ক্যালকুলেশন করার দক্ষতা। এর ধারেকাছে পৌঁছাতে কম্পিউটারের সময় লাগবে আরও অনেক। তাহলে দেখা যাচ্ছে, কেবল জীবজগতে নয়, বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডেও সত্যিকার অর্থে গণিতের মাথা আছে কেবল মানুষেরই।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
1 উত্তর 217 বার দেখা হয়েছে
24 ডিসেম্বর 2021 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন আকিব (130 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 157 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 602 বার দেখা হয়েছে

10,776 টি প্রশ্ন

18,472 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

285,225 জন সদস্য

55 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 53 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Shyla Farjana

    230 পয়েন্ট

  2. CarriCuellar

    100 পয়েন্ট

  3. ElanaJaspriz

    100 পয়েন্ট

  4. gen881com

    100 পয়েন্ট

  5. bet88comonline1

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...