মানুষ তার মস্তিষ্কের কত ভাগ ব্যাবহার করতে পারে?? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+4 টি ভোট
1,562 বার দেখা হয়েছে
"জীববিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (190 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (260 পয়েন্ট)

বহুল প্রচলিত একটি ধারণা হচ্ছে একজন সাধারণ মানুষ জীবনদশায় তার মস্তিষ্কের মাত্র ১০% ব্যবহার করতে পারে। অর্থাৎ তার মস্তিষ্কের বাকি ৯০ ভাগই অব্যবহৃত রয়ে যায়। বিভিন্ন চলচ্চিত্রে দেখা যায় নায়ক কোন একটি বিশেষ উপায় মাথার ১০০% ব্যবহার করা শুরু করে অসীম ক্ষমতার অধিকারী হয়ে পড়ে। এছাড়াও আমরা শুনে থাকি পৃথিবীর বড় বড় প্রতিভাবান মানুষেরা তাদের মস্তিষ্কের ১০ ভাগের বেশি ব্যবহার করতে পেরেছিলেন দেখেই সফলতা অর্জন করতে পেরেছিলেন। এক্ষেত্রে আইন্সটাইনের মস্তিষ্কের ৫০% ব্যবহার করার ব্যপকভাবে প্রচারিত কথাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আধুনিক বিজ্ঞান মতে এই ধারনাগুলো ভিত্তিহীন।

খুব সম্ভবত এই ধারনাটার জন্ম হয় ১৮৯০ সালে যখন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির দুইজন সাইকোলজিস্ট ‘উইলিয়াম সিডিস’ নামক একজন শিশু প্রডেজিকে নিয়ে গবেষণা করার এক পর্যায়ে বলেছিলেন যে মানুষ হয়তো তার মস্তিষ্কের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহার করছে না।  ১৯৩০ সালের দিকে লোকমুখে তাদের কথাটি প্রচারিত হতে হতে তা ‘১০%’ এর একটি সংখ্যায় রূপ নেয়। যা আরও প্রচার লাভ করে বিভিন্ন বই, ম্যাগাজিন, বিজ্ঞাপনে ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে। আর এভাবেই মানুষের মধ্যে এই ভ্রান্ত ধারনাটি ছড়িয়ে যায়। 

তবে উনিশ শতকে প্রকৃতপক্ষেই বিজ্ঞানীরা মনে করতেন মস্তিষ্কের কিছু কিছু অংশ নিষ্ক্রিয় থাকে। তারা মস্তিষ্কের কর্মহীন অঞ্চলকে মস্তিষ্কের নীরব অংশ (Silent Cortex) বলে অভিহিত করেছিলেন। কারণ নীরব অংশ হিসেবে পরিচিত মস্তিষ্কের অংশটিতে ইলেকট্রোডের মাধ্যমে উদ্দীপনা বা স্টিমুলেশন পাঠানোর পরও শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে প্রক্রিয়া পরিলক্ষিত হতো না। এই থেকেই এই ধারণার প্রচলন হয় যে সাধারণ মানুষ সেসব অংশ ব্যবহার করতে অক্ষম। পরবর্তীতে অবশ্য দেখা যায় মস্তিষ্কের এই নীরব অংশগুলো আমাদের শারীরিক ক্রিয়ায় লক্ষণীয় কোন পরিবর্তন না আনলেও, সেসব আমাদের চিন্তা-চেতনা কিংবা ভাষাকে নিয়ন্ত্রণ করে।

নিউরোলজিস্ট ‘ব্যারি গর্ডন’ ১০% ব্যবহারের এই ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “আমরা কার্যত, আমাদের মস্তিষ্কের সব অংশ ব্যবহার করছি এবং প্রায় সবসময়ই আমাদের মস্তিষ্কের সম্পূর্ণ অংশই ব্যবহৃত হচ্ছে।”  এছাড়াও নিউরোসাইন্টিস্ট ‘ব্যারি ব্যায়ারস্টেইন’ নিম্নের সাতটি কারণ দেখিয়ে প্রচলিত এই ধারণাকে স্রেফ লোককথা বলে প্রমাণ করেন

  • যদি মস্তিষ্কের কোন অংশ অকার্যকর থাকতো তাহলে সেখানে আঘাত লাগলে আমাদের কোন শারীরিক প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হতো না। কিন্তু বাস্তবে এমনটা হয় না।
  • ব্রেন স্ক্যান এটা প্রমাণ করে যে আমরা যাই করি না কেন যেই অবস্থায় থাকি না কেন আমাদের ব্রেন সর্বদা কার্যকর থাকে।
  • মস্তিষ্ক আমাদের শরীরের সবচাইতে ব্যয়বহুল অঙ্গ। এটি শরীরের প্রায় শতকরা ২০ ভাগ শক্তি খরচ করে থাকে। যদিও এটির ওজন সমগ্র শরীরের শতকরা ২ ভাগ মাত্র। যদি এরকম একটি অঙ্গের শতকরা ৯০ ভাগই অকেজো থাকে তাহলে বিবর্তনের ধারায় আমাদের মস্তিষ্কের এই নিষ্ক্রিয় অংশগুলো বাদ হয়ে যেতো।
  • নিউরো ইমেজিং এর মাধ্যমে দেখা যায় ঘুমের মধ্যেও মস্তিষ্কের সব অংশ কিছু মাত্রায় হলেও সচল থাকে। শুধুমাত্র গুরুতর কোন ক্ষতির সম্মুখীন হলেই মস্তিষ্কের কিছু অংশ নীরব হয়ে যায়।
  • মস্তিষ্কের প্রত্যেকটি অংশেরই নিজ নিজ কাজ রয়েছে। মস্তিষ্কের একটি অঞ্চল এককভাবে কাজ না করে একটি জটিল প্রক্রিয়ায় সমষ্টিগতভাবে কাজ করে। এই প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে এমন কোন অঞ্চল পাওয়া যায় নি যার কোন কার্যকর ভূমিকা নেই।
  • সিঙ্গেল ইউনিট রেকর্ডিং ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কে ক্ষুদ্র ইলেক্ট্রোকড প্রবেশ করিয়ে নিউরন সেল এর কর্মপদ্ধতি পর্যবেক্ষণ করেন। যদি শতকরা ৯০ ভাগ নিউরন সেলই অকার্যকর থাকতো তাহলে সেটি এই রেকর্ডিং-এ ধরা পড়তো।
  • অব্যবহৃত থাকার ফলে সাধারণত মস্তিষ্কের সেলগুলোর অবক্ষয় হয়। যদি শতকরা ৯০ ভাগ নিউরন সেলই অকার্যকর থাকতো তাহলে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মস্তিষ্কের অটপসিতে এই বিশাল পরিসরে অবক্ষয় পরিলক্ষিত হতো।

আমরা আমাদের মস্তিষ্কের সম্পূর্ণ অংশই ব্যবহার করি, কেবল ব্যক্তি বিশেষে এর কর্মক্ষমতার পার্থক্য থাকতে পারে। আমরা মস্তিষ্কের ‘বেশি অংশ’ ব্যবহার করে না, বরং চর্চা, সঠিক প্রয়োগ ও কঠোর পরিশ্রম এর মাধ্যমে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে পারি।

তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট 

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+2 টি ভোট
1 উত্তর 562 বার দেখা হয়েছে
+3 টি ভোট
2 টি উত্তর 504 বার দেখা হয়েছে
17 এপ্রিল 2021 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন হায়াত (20,390 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
1 উত্তর 557 বার দেখা হয়েছে
30 সেপ্টেম্বর 2021 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন shahadat (2,110 পয়েন্ট)
+27 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,145 বার দেখা হয়েছে

10,743 টি প্রশ্ন

18,395 টি উত্তর

4,731 টি মন্তব্য

243,884 জন সদস্য

53 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 52 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. MIS

    930 পয়েন্ট

  2. shuvosheikh

    260 পয়েন্ট

  3. তানভীর রহমান ইমন

    160 পয়েন্ট

  4. Muhammad_Alif

    120 পয়েন্ট

  5. memo

    120 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো #ask মোবাইল ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি #science স্বাস্থ্য প্রাণী বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #biology বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক শব্দ ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম হরমোন বিড়াল কান্না
...