আমাদের শরীরের কোথাও কেটে গেলে কিংবা আঘাত পেলে আমরা ব্যথা অনুভব করি। আমাদের হাত কাটলে ব্যথা লাগে। পা কাটলে ব্যথা লাগে। নখ কাটলে ব্যথা লাগে না। চুল কাটলে ব্যথা লাগে না। কিন্তু কেন?
আমাদের শরীরে হাত-পা মিলে মোট কুড়িটা নখ। কেরাটিন’ নামে একটি পদার্থ আছে। এদিয়ে নখ তৈরি হয়। কেরাটিন হল এক ধরনের প্রোটিন।
আমরা জানি, অনেক কোষ দিয়ে আমাদের শরীর তৈরি। নখ, চুলও এক ধরনের কোষ। চামড়ার বাইরে বের হলে এই কোষগুলি দরকারি পুষ্টির অভাবে এক সময় মারা যায়। তাই নখ, চুল এক ধরনের মরাকোষ।
আঙুলের চামড়ার অভ্যন্তরে নখের ভিত্তি থাকে। আবার নখের নিচের চামড়ার ভেতরে নখ থাকে। আবার নখের নিচের চামড়ায় এক ধরনের নরম সুতা বা আঁশ বা নমনীয় তন্তু থাকে। এ তন্তগুলো নখের সাথে আটকে থাকে। নখগুলোকে জায়গা মতো ধরে রাখে। এজন্য নখ শক্ত হয়, নড়াচড়া করে না, নির্দিষ্ট স্থানে আটকে রাখে। নখের ঘোড়ার কাছাকাছি অংশটির সাদা এবং অর্ধচন্দ্রাকৃতি হয় যাকে লুনিয়ুল বলে। মৃত বা মরাকোষ দিয়ে তৈরি বলে নখ কাটলে আমাদের ব্যাথা লাগে না। খাদ্যে পুষ্টিকর পদার্থের অভাব ও ছত্রাকের প্রভাবে নখ খুৎযুক্ত হয়।
চুলও চামড়ার ভেতরে খুবই নরম অবস্থায় থাকে। কিন্তু চামড়ার বাইরের দিকের চুল দরকারি পুষ্টির অভাবে শক্ত হয়ে যায় এবং একসময় মরে যায়। এ কারণে চুল কাটলেও আমাদের ব্যাথা লাগে না। আসলে আমাদের মানবদেহ জীবিত স্নায়ু কোষ বা নার্ভ সেল দিয়ে গঠিত। কিন্তু যেহেতু চুল ও নখ মৃত কোষ দিয়ে তৈরি তাই সেখানে স্পর্শ চাপ, তাপ, ব্যাথা অনুভূতি হয় না।