প্যারাসুট কীভাবে আকাশে উড়ে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+2 টি ভোট
820 বার দেখা হয়েছে
"পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (141,820 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (141,820 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

টেলিভিশনের কোনো কার্টুন বা মুভিতে তোমরা নিশ্চয়ই দেখেছ, আকাশে হেলিকপ্টার বা বিমান থেকে একজন নিচে লাফ দিচ্ছে আর তার মাথার উপরে ছাতার মতো মেলে যাচ্ছে প্যারাসুট নামের একটা জিনিস। সেই প্যারাসুটের সাহায্যে ভেসে ভেসে আস্তে আস্তে সে মাটিতে নেমে আসছে। ফলে এত উচ্চতা থেকে পরেও সে একদম অক্ষত থাকছে। তুমি নিশ্চয়ই অবাক হয়ে ভেবেছ, পাখির মতো করে এভাবে উড়ে উড়ে নামা কীভাবে সম্ভব?

ছোটবেলায় আমরা প্রায় সবাই বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটনের মাথায় আপেল পড়ার ঘটনাটা শুনেছি, যা থেকে তিনি আবিষ্কার করেছিলেন মহাকর্ষ বল। উপর থেকে ছেড়ে দেওয়া যেকোনো বস্তু নিচের দিকে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। কেন পড়বে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। প্রতি সেকেন্ডে যেকোনো মুক্তভাবে পড়ন্ত বস্তু নিচের দিকে পড়বে ৯.৮ মিটার ত্বরণে। যত বেশি সময় নিয়ে তা নিচের দিকে পড়তে থাকবে, তত বেশি বেগ নিয়ে মাটি স্পর্শ করবে। একজন মানুষও যদি উপর থেকে মুক্তভাবে পড়ে, সে-ও একই নিয়ম মানতে বাধ্য হবে।

এ নিয়ম অনুযায়ী, একটি পাখির পালক আর একটি বড়সড় পাথরকেও যদি উপর থেকে ছেড়ে দেয়া হয়, তাদেরও সমান সময়ে মাটি স্পর্শ করার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না; পাথরটাই আগে পৌঁছায়, কারণ বাতাসের বাধাকে এটি পাখির পালকের থেকে বেশি ভালোভাবে পরাস্ত করতে পারে। যে বস্তুর বাতাসের বাধা কাটিয়ে নেয়ার ক্ষমতা যত কম, সেটি তত ধীরে নিচের দিকে পড়বে। বিপরীতভাবে বলতে গেলে, যে বস্তুর উপর বাতাসের বাধা যত বেশি, সে বস্তু তত ধীরে নিচের দিকে পড়বে। প্যারাস্যুট মূলত এই বাধা বাড়ানোর কাজটিই করে থাকে। মহাকর্ষের বিপক্ষে বেশিক্ষণ ভেসে থাকতে বাতাসকে কাজে লাগায় এটি। সাইন্স বী

কিন্তু সামান্য বাতাসের বাধার ক্ষেত্রে কী হয়? পানিতে সাঁতার কাটার সময় অবশ্যই আপনার বিপরীতে পানি আপনার উপর বল প্রয়োগ করে খুব ভালোভাবেই। বাতাসের বাধাটা অবশ্য তার থেকে অনেক কম, তাই পানির বাধার মতো করে বোঝা যায় না; কিন্তু বাধা ঠিকই আছে। এই বাধা যতটা বাড়ানো যাবে, কোনো বস্তু উপর থেকে নিচের দিকে তত ধীরে পড়বে। প্যারাস্যুট সে কাজই করে। প্যারাস্যুট প্রান্তিক বেগ কমিয়ে দিয়ে মানুষকে নিরাপদে মাটিতে পা ছোঁয়ানোর কাজ করে থাকে। প্যারাস্যুটের মূল নকশা করা হয়েছে এ বেগ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়ার মতো করেই।

এ বাতাসকে কাজে লাগিয়ে অভিকর্ষজ ত্বরণ আর বেগকে বুড়ো আঙুল দেখানোর কাজটা করে থাকে মূলত প্যারাসুট উইং বা প্যারাসুটের ডানা। উড়তে থাকা মানুষটির হাতে থাকা স্টিয়ারিং দিয়ে উইংয়ের আকার-আকৃতি পরিবর্তন করার মাধ্যমে পরিবর্তন ঘটে দিকের। উইংগুলো মূলত অর্ধভেদ্য। ওড়ার সময় এগুলো অনেকটা কঠিন পদার্থের মতো আচরণ করে থাকে। মূলত সাত থেকে নয়টি আলাদা আলাদা বায়ুভর্তিযোগ্য সেল একত্র করেই তৈরি হয় মডার্ন প্যারাসুট উইং, ওড়ার সময় যেগুলো কাজ করে একত্রে। প্রত্যেক সেলের সামনের দিকটা কিছুটা উন্মুক্ত, যেখান দিয়ে বাতাস প্রবেশ করে সেলগুলোর ভেতরে। গঠনটি আধুনিক প্যারাস্যুটের। কিন্তু ছোটবেলায় আমরা যে প্যারাস্যুটগুলো বেশি দেখতাম, সেখানে সেল ছিল না, সেগুলো ছিলো অনেকটা গোলাকার; একটি ফোলানো বেলুনের অর্ধেকের মতো। সাইন্স বী

বর্তমানে আয়তাকার বায়ুভর্তি সেলযুক্ত প্যারাস্যুটগুলো অধিকতর ব্যবহৃত হলেও মিলিটারি ক্ষেত্রসমূহে গোলাকার সেই অর্ধেক বেলুনাকৃতির প্যারাসুট এখনো ব্যবহৃত হয়। এর প্রধান একটি কারণ হলো, এই প্যারাস্যুট ব্যবহার করে অল্প জায়গায় অধিক ব্যক্তি ভালোভাবে অবতরণ করতে পারে। মূলত ১০টি অংশ নিয়ে রাউন্ডেড প্যারাস্যুটগুলো তৈরি করা হয়ে থাকে। একেবারে উপরে থাকে পাইলট স্যুট, যেটি দিয়ে মূল প্যারাস্যুট খোলা হয়ে থাকে। পাইলট স্যুট ও মূল প্যারাস্যুট যুক্ত থাকে ব্রিডলের মাধ্যমে। প্যারাস্যুটের মূল অংশকে বলা হয় ক্যানোপি। এছাড়াও থাকে স্কার্ট, সাসপেনসন লাইন, কন্ট্রোল লাইনসহ আরও অনেকগুলো অংশ।

আধুনিক প্যারাস্যুট হোক কিংবা পুরনো, সবগুলোই থাকে কনটেইনার নামক এক ব্যাগপ্যাকে। এতে থাকে দু'টি প্যারাস্যুট। একটি যদি কোনো কারণে কাজ না করে, তবে দ্বিতীয়টি খোলা হয়; একে বলা হয় রিজার্ভ প্যারাসুট। যদিও প্রতি হাজারে প্রায় ৯৯৯টি প্যারাস্যুট প্রথম চেষ্টাতেই খুলে যায়, তবুও নিরাপত্তার জন্য রিজার্ভ প্যারাসুট রাখা হয়ে থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে।

তথ্যসূত্র : রোর বাংলা

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+4 টি ভোট
3 টি উত্তর 516 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
3 টি উত্তর 281 বার দেখা হয়েছে
08 এপ্রিল 2023 "জ্যোতির্বিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Sharmin Akhter (270 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
1 উত্তর 155 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 411 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
3 টি উত্তর 377 বার দেখা হয়েছে

10,719 টি প্রশ্ন

18,361 টি উত্তর

4,729 টি মন্তব্য

239,760 জন সদস্য

60 জন অনলাইনে রয়েছে
6 জন সদস্য এবং 54 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  3. almoyaj_k

    130 পয়েন্ট

  4. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

  5. Monojit Das

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস গ্রহ স্বপ্ন রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...