না, মোটেই নিরাপদ নয়। আগে জানতে হবে কে খাচ্ছেন, কেন খাচ্ছেন।
আজকাল দেখছি খাওয়ার স্যালাইন ডায়রিয়া ও কলেরার পানিশূন্যতায় চিকিৎসার পাশাপাশি আরও অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে- যেমন, ব্যায়ামের পরে বা একজন খেটে খাওয়া মানুষ যখন গরমে অনেকক্ষণ ধরে কাজ করতে থাকে তখন ঘামের সঙ্গে প্রচুর পানি ও লবণ তার শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়ার ফলে তার দেহেও পানিশূন্যতা দেখা দেয় এবং এ সময় খাওয়ার স্যালাইন পান করে সেই ব্যক্তি পানি ও লবণ উভয় উপাদানই পূরণ করতে পারেন এবং স্যালাইনে বিদ্যমান গ্লুকোজ বা চিনি তাকে বাড়তি শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে, ফলে ব্যক্তির স্বস্তি ও সুস্থতা ফিরে পাওয়াটাই স্বাভাবিক এবং তাই ঘটে থাকে।
অনেকেই বলেন শুনেছি একটু দুর্বল লাগলে তারা খাওয়ার স্যালাইন খেলে বেশ সবলবোধ করেন। যদি ওই ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুস্থতাজনিত রোগে ভুগতে না থাকে এবং বয়সে তরুণ থাকেন বা ডায়াবেটিস রোগে ভুগতে না থাকেন তবে এতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হওয়াই স্বাভাবিক। অনেক প্রান্তিক পর্যায়ের চিকিৎসক রোগীর ব্লাড প্রেসার লো হলে রোগীকে খাওয়ার স্যালাইন গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করে থাকেন যা সেই রোগীদের বেলায় ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। কারণ আমরা জানি যারা হার্ট ফেইলিওরে ভুগছেন তাদের শরীর এমনিতেই দুর্বল থাকে এবং তাদের অনেকেরই ব্লাড প্রেসার লো থাকে, তার সঙ্গে তাদের শরীরে যেমন হাত, পা ও মুখে পানি জমে ফুলে যায়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা রোগীকে লবণ ও পানি সীমিত পরিমাণে গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করে থাকেন এবং ক্ষেত্রবিশেষে শরীর থেকে লবণ ও পানি বের হওয়ার মেডিসিন দিয়ে করে থাকেন, কাজেই এ ধরনের রোগীদের বেলায় খাওয়ার স্যালাইন গ্রহণ করা রোগীর জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।
সর্বশেষে এটাই বলতে চাই আপনি যদি কোন ধরনের হার্টের অসুস্থতায় ভুগতে থাকেন, আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ বিদ্যমান থাকে, আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন বা বয়স যদি ৬০ বছরের বেশি হয়ে থাকে অথবা আপনি যদি অন্য কোনো ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে কখনোই চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত খাওয়ার স্যালাইন গ্রহণ করবেন না এবং তা করলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
©তানিয়া নোভা