বিবর্তবাদ অনুসারে মানুষের উৎপত্তি কোন প্রজাতি থেকে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+2 টি ভোট
578 বার দেখা হয়েছে
"জীববিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (24,230 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (20,390 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

মানুষ বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী জীব। আধুনিক মানুষ (হোমো স্যাপিয়েন্স, প্রাথমিকভাবে এসএসপি হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্স) হল হোমিনিনা উপজাতির (অথবা মানব জাতিগোষ্ঠী) একমাত্র বিদ্যমান সদস্য। শিম্পাঞ্জিগরিলা ও ওরাং ওটাংদের মত মানুষ বানর পরিবারের অন্তর্গত হোমিনিডি গোত্রের একটি শাখা। স্থলচর প্রাণী হিসাবে তাদের বৈশিষ্ট হল স্থির খাড়া অবস্থান এবং দ্বিপদী চলৎশক্তি; অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন এবং ভারী সরঞ্জাম ব্যবহারে সক্ষমতা; অন্যান্য প্রাণির চেয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে জটিলতর ভাষার ব্যবহার, আকারে বৃহত্তর ও জটিল মস্তিষ্ক এবং খুবই উন্নত ও সংঘবদ্ধ প্রাণী

করেছেন (24,230 পয়েন্ট)
ধন্যবাদ
0 টি ভোট
করেছেন (9,000 পয়েন্ট)
বিবর্তনবাদ অনুসারে মানুষ বানর থেকে এসেছে—এরকম ধারণা আমাদের প্রায় সবারই। অনেকে আবার এমন প্রশ্নও করে, যদি বানর থেকে মানুষ হয়ে থাকে, তবে জীবজগতে এখনও বানর আছে কীভাবে? নাকি সব বানর মানুষ হয় নি? তাছাড়া মানুষ বিবর্তিত হয়ে ভবিষ্যতে কি আবার বানর হয়ে যাবে? বেশির ভাগ মানুষইবিবর্তনবাদ সম্পর্কে এরকম ভ্রান্ত ধারণায় বিশ্বাসী। আর ‘বানর থেকে মানুষ’ তত্ত্বটি প্রচারের জন্য চার্লস ডারউইনকেই অভিযুক্ত করা হয়। অথচ ডারউইন কিন্তু বর্তমান কালের বানরকে মানুষের পূর্বপুরুষ বলে দাবি করেন নি। তাহলে তিনি কী বলেছিলেন?

​ডারউইন ১৮৫৯ সাথে প্রকাশিত তাঁর ‘On the Origin of Species’ গবেষণাগ্রন্থে জীবজগতের বিবর্তন তত্ত্ব ব্যাখ্যা করেন। তবে এ বইয়ে তিনি মানুষের বিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেন নি। ‘The Descent of Man’ (১৮৭১) নামক পরবর্তী গবেষণাগ্রন্থে তিনি মানব বিবর্তনতত্ত্ব সম্পর্কে তাঁর ধারণা প্রকাশ করেন। তাঁর এই বিবর্তনতত্ত্ব অনুসারে মানব প্রজাতি এবং বর্তমানে বিদ্যমান বড় নরবানর (great apes) শ্রেণীভুক্ত শিম্পাঞ্জি, বনোবো, গরিলা ও ওরাংউটান প্রজাতি আদ্যিকালে একই পূর্বপুরুষ (common ancestors) থেকে পরস্পর আলাদাভাবে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে অনেক ধাপে বিবর্তিত হয়ে আজকের অবস্থায় এসেছে। বিবর্তনের ধারায় মানুষ ও নরবানরের উক্ত প্রজাতিগুলো জীবজগতে আজ পর্যন্ত টিকে থাকলেও বিলুপ্ত হয়ে গেছে তাদের সেই পূর্বপুরুষেরা।ডারউইন বিবর্তনবাদের প্রথম প্রবক্তা নন। তবে তিনিই প্রথম জীবজগতের বিবর্তনকে ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন’ নামক তত্ত্বের সাহায্যে ব্যাখ্যা করেন, যা পরবর্তীকালে অসংখ্য বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রামাণ্যবিবেচিত হয়েছে। প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্ব অনুসারে জীবজগতের যে প্রজাতি প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকা ও বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে বেশি সুবিধা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, সেই প্রজাতিই শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে এবং অন্যরা বিলুপ্ত হয়ে যায়। আর এই টিকে থাকার লড়াইয়ে অনুকূল শারীরিক বৈশিষ্ট্য অর্জন এবং পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে তা জীনগতভাবে স্থানান্তরের লক্ষ্যে জীবপ্রজাতিগুলো সময়ের সাথে বিবর্তিত হয়।আধুনিক ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে উদঘাটিত হয়েছে বানর নয়, বরং জীনগত দিক থেকে মানুষের সবচেয়ে কাছাকাছি প্রজাতি হচ্ছে শিম্পাঞ্জি। তার মানে এই নয় যে, বর্তমান কালের শিম্পাঞ্জি থেকে মানুষের উৎপত্তি হয়েছে। তবে বিবর্তন তত্ত্ব অনুসারে আদিতে মানুষ ও শিম্পাঞ্জির পূর্বপুরুষ একই ছিল—যদিও আধুনিক মানব প্রজাতি ও শিম্পাঞ্জি প্রজাতির সাথে সেই একক পূর্বপুরুষের প্রজাতির শারীরবৃত্তীয় পার্থক্য ছিল বিশাল। আনুমানিক ছয় মিলিয়ন বছর আগে উক্ত একক পূর্বপুরুষের প্রজাতি থেকে শিম্পাঞ্জি প্রজাতিও মানব প্রজাতি বিবর্তনের মাধ্যমে দুটি আলাদা শাখায় ভাগ হয়ে গিয়েছিল। একইভাবে মানুষ ও শিম্পাঞ্জির একক পূর্বপুরুষের শাখাটি থেকে প্রায় আট মিলিয়ন বছরআগে গরিলা প্রজাতি এবং তের মিলিয়ন বছর আগে ওরাংউটান প্রজাতির শাখা আলাদা হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং বানর কিংবা নরবানর থেকে মানুষের বিবর্তন এবংনরবানর ও মানুষের একক পূর্বপুরুষথেকে মানুষের বিবর্তন এক কথা নয়।[image]শিম্পাঞ্জি প্রজাতি থেকে আলাদা হওয়ার পর পরই আধুনিক মানব প্রজাতির উৎপত্তি হয়েছিল—এমনটি ভাবলেও ভুল হবে। কারণ এর পরও মানুষের পরবর্তী পূর্বপুরুষ প্রজাতিটি আরও অনেকগুলো প্রজাতিতে ভাগ হয়ে গিয়েছিল এবং এদের মধ্য থেকে এক বা একাধিক প্রজাতি ধাপে ধাপে আরও অনেকবার বিবর্তিত হয়ে আজকের মানব প্রজাতির উৎপত্তি হয়েছে। অবশ্য বিবর্তনের এই পর্যায়ের ধাপগুলোর ধারাবাহিকতা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। এ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। তবে দিন দিন যতই নতুন নতুন তথ্যপ্রমাণ আবিষ্কৃত হচ্ছে, মানববিবর্তনের অতীতচিত্রটি ততই পরিষ্কার হচ্ছে।এটি ঠিক যে, জীবজগতের বিবর্তন তথা মানুষের উৎপত্তি নিয়ে বিজ্ঞানের সাথে ধর্মের একটা বড় বিরোধ বিদ্যমান। ঈশ্বর-কেন্দ্রিকসৃষ্টিতত্ত্বে বিশ্বাসীদের পক্ষেডারউইনের বিবর্তনবাদ মেনে নেওয়া কষ্টকর। ডারউইন যখন তাঁর প্রাকৃতিক নির্বাচনভিত্তিক বিবর্তন তত্ত্ব প্রকাশ করেছিলেন,তখন তা ছিল তাঁর নিজস্ব পর্যবেক্ষণলব্ধ ফলাফলমাত্র। সে আমলে উন্নত প্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক গবেষণার সুযোগ ছিল না। পরবর্তীকালে, বিশেষ করে আধুনিক যুগে বিবর্তন তত্ত্বের গবেষণায় রেডিওকার্বন ডেটিং সহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রত্নতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব, জীনতত্ত্বসহ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার সম্মিলিত জ্ঞানের বহুমাত্রিক সমাহার ঘটেছে। এর ফলে একসময় যে তত্ত্ব ছিল ডারউইনের একক, সীমিত গবেষণার ফলাফল—সেই বিবর্তনবাদই এখন বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর দিনে দি্নে আরও সুপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আধুনিক বিজ্ঞান এই তত্ত্বের সপক্ষে এমন সব তথ্যপ্রমাণ হাজির করছে, যা জ্ঞান ও যুক্তির আলোকে এক কথায় উড়িয়ে দেওয়া যায় না।বিবর্তনবাদ ডারউইনের একটি যুগান্তকারী তত্ত্ব। অন্তত এখন পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার কষ্টিপাথরে এইতত্ত্বের সত্যতা যাচাইকৃত ও প্রমাণিত। তবে ভবিষ্যতে কখনও যদিনতুন তথ্যপ্রমাণের আলোকে এই তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হয়, তবে তা হবে আরও বেশি যুগান্তকারী ঘটনা। কারণ এর ফলে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার প্রতিষ্ঠিত বিশাল জ্ঞানরাজি নিঃসন্দেহে ওলট পালট হয়ে যাবে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
1 উত্তর 5,565 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
3 টি উত্তর 294 বার দেখা হয়েছে
29 মার্চ 2023 "পরিবেশ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Fatema Tasnim (4,820 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
2 টি উত্তর 370 বার দেখা হয়েছে
18 ফেব্রুয়ারি 2023 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ashim Datta (3,220 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 196 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 98 বার দেখা হয়েছে
08 ডিসেম্বর 2023 "তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Monjil Hossain (5,600 পয়েন্ট)

10,722 টি প্রশ্ন

18,365 টি উত্তর

4,730 টি মন্তব্য

240,716 জন সদস্য

30 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 29 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Al Moyaj Khondokar

    210 পয়েন্ট

  3. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  4. Hasan rafi

    140 পয়েন্ট

  5. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন গ্রহ রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...