টিকটিকির পায়ের তালুর চামড়ার নীচে রয়েছে হাজার হাজার ভাঁজ এবং সেই ভাঁজের মধ্যে রয়েছে কোটি কোটি লোমের গুচ্ছ। প্রতিটি গুচ্ছ আবার মিলিয়ন মিলিয়ন তন্তুর সমন্বয়ে গঠিত যেগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম 'সিটেই'। প্রত্যেকটা setae এর মাথায় আরো চিকন এবং আরো অসংখ্য তন্তু আছে। যেগুলো একমাত্র ইলেক্ট্রনিক অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করেই দেখা সম্ভব। এদের বহুবচনে বলা হয় spatulae। এদের মাথা সমতল থাকে। এইসব 'সিটেই' যখন দেয়াল কিংবা সমান কাঁচের সংস্পর্শে আসে তখন দুইয়ের মধ্যে এক ধরণের সংযোগ স্থাপিত হয়। টিকটিকি দেয়ালে আটকে থাকে মূলত Van der Waals force এর কারনে। ভ্যান ডার ওয়ালস ফোর্স হচ্ছে বিভিন্ন সমযোজী অপোলার যৌগের (এমনকি জৈব যৌগগুলোর) অণুর মধ্যে ক্রিয়াশীল অত্যন্ত দুর্বল মানের বল। অণুগুলো কাছাকাছি এলে এই বল কাজ করে, দূরে সরে গেলে করে না। অণুর সংখ্যা যত বেশি হবে এই বল তত শক্তিশালী হবে। যেহেতু টিকটিকির পায়ের নিচে লক্ষ লক্ষ তন্তু থাকে, আবার এই তন্তুর মাথায় আরো চিকন এবং আরো অসংখ্য তন্তু আছে সেহেতু তাদের মধ্যে ক্রিয়াশীল ভ্যান ডার ওয়ালস বলও আর নগন্য নয়। এজন্য টিকটিকি দেয়ালের সাথে আটকে থাকতে পারে।
টিকটিকি অতি মসৃন দেয়ালে চলা ফেরা করতে পারে। কারণ এর পায়ের গঠনের জন্য এটি যখন পা ফেলে তখন পায়ের নিচে বায়ু শূন্য হয়ে যায়। ফলে পা দেয়ালে আঁটকে থাকে এবং এই আঁটকে থাকার উপর শরীরের ভর দিয়ে টিকটিকি অনায়াসে চলাফেরা করে।
কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে এইসব সুবিধা নেই, তাই মানুষ দেয়ালে হাঁটতে পারেনা!