অক্সিজেন ছাড়াই বেঁচে থাকে যে প্রাণী!
হেননিগুয়া সালমিনিকোলা, ছবি সংগৃহীত
পৃথিবীতে অক্সিজেন ছাড়া কোনো প্রাণী বাঁচতে পারে না।প্রথম থেকে আমরা এই বিষয়টি জেনে আসছি।
তবে সম্প্রতি ইসরাইলের তেলআবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন। তারা এমন এক প্রাণীর খোঁজ পেয়েছেন যাদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় না।
ইসরাইলি গবেষকদের ভিন্ন ধরনের এই প্রাণী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে গোটা বিশ্বে।
গবেষকদের দাবি, এই প্রাণীটি দেখতে অনেকটা জেলিফিশের মতো। এরা এক ধরনের পরজীবী। এর বৈজ্ঞানিক নাম হেননিগুয়া সালমিনিকোলা (Henneguya salminicola)।
জানাগেছে, এই প্রাণী ‘মাল্টিসেলুলার’ জীব। যার শরীরে মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোম নেই। এই কারণেই এদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় না।
মানুষসহ বিশ্বের প্রতিটি প্রাণীর শরীরে প্রচুর পরিমাণে মাইটোকন্ড্রিয়া পাওয়া যায় যা শ্বাস প্রশ্বাসের প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে ‘হেননিগুয়া সালমিনিকোলা’ নামের পরজীবীই হল প্রথম এমন এক জীব যাদের শরীরে মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোমের অস্তিত্ব নেই।
গবেষণার দলের প্রধান ডায়না ইয়াহলোমি জানান, এই পরজীবী মানুষের ও অন্যান্য জীবের পক্ষে মোটেও ক্ষতিকর নয়। তবে গবেষক দল এখনো এটা জেনে উঠতে পারেননি কীভাবে এই প্রাণীর বিকাশ হয়েছে বা এর জন্মই বা হল কী ভাবে!
পরজীবীটি স্যালমন মাছের শরীরে পরজীবী হিসেবে পাওয়া গেছে। স্যালমন মাছ থেকেই খাদ্য অর্জন করে বেঁচে থাকে এই পরজীবী। তবে মাছের কোনো ক্ষতিও করে না এরা। যতক্ষণ মাছ বেঁচে থাকে ততক্ষণ বেঁচে থাকে এই পরজীবী ‘হেননিগুয়া সালমিনিকোলা’ও (Henneguya salminicola)।
ইয়াহলোমি জানান, এটিকে ফ্লুরোসেন্ট মাইক্রোস্কোপ দিয়ে এটি পরীক্ষা করে তারা দেখেছেন, এদের মধ্যে সবুজ নিউক্লিয়াস দেখা গেলেও মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ দেখা যায়নি। ২০১০ সালেও একই রকম ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।
ইতালির পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির গবেষক রবার্তো ড্যানভোরো এই ধরনেরই পরজীবীর সন্ধান দেন। ওই পরজীবীদের শরীরেও মাইটোকন্ড্রিয়া পরিষ্কারভাবে দেখা যায়নি।
তবে গবেষণায় জানা যায়, ওই পরজীবীরা গভীর সমুদ্রে বছরের পর বছর বাস করতে পারে। এদের জীবন শক্তির উৎস হাইড্রোজেন সালফাইড। তবে সদ্য পাওয়া ‘হেননিগুয়া সালমিনিকোলা’ (Henneguya salminicola) নামের এই পরজীবীর বাঁচার জন্য হাইড্রোজেন সালফাইডেরও প্রয়োজন হয় না।
collected