ছেলেদের চুল পড়াটা অ্যান্ড্রোজেনেটিক বা বংশগত। অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে হেয়ার স্টাইল করা। চুলে জেল দেয়া, আয়রণ করা কারলিং, পারলিং। এসব করলে ছেলেদের চুল পড়ে যায়। পুষ্টি এটা বিরাট ফ্যাক্টর এ যুগের ছেলেদের জন্য। আগে ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সে চুল পড়া নিয়ে আসতো। কিন্তু এখন টিনেজ ছেলেরা চুল পড়া নিয়ে আসছে। এর মূল কারণ হচ্ছে তারা অনেক বেশি ফাস্টফুড খায়।
ফাস্টফুডে প্রচুর ফ্যাট আছে, সুগার আছে। তারা কায়িক পরিশ্রম একেবারেই করে না। এটা যে ওদেরই দোষ দেবো সেটা না। আসলে খেলা মাঠই সেভাবে নেই। এখনতো সবাই যান্ত্রিক হয়ে গেছে। আর শহরের যে সব সাপ্লাই পানি নদী থেকে তোলা হয়, সে পানিগুলোতে ক্লোরিন দেয়া থাকে। সেই ক্লোরিনযুক্ত পানিতে চুল পড়ে।
যদি কোনো বাড়ির ট্যাঙ্কিতে বেশি মাত্রায় ক্লোরিন বা ব্লিচিং পাউডার দেয়া থাকে তাহলে চুল পড়বে। মাথায় যদি কারও স্কিন ডিজিজ হয়। বড়দের যেমন স্যভোরিক অ্যাক্সিমা, সুরায়াসিস এসব ডিজিজ হলে চুল পড়ে যায়।
আগে ধারণা করা হতো যে, অ্যান্ড্রোজেনেটিক কারণে মহিলাদের চুল পড়ে না। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে যে, প্রায় ৫০% মহিলার চুল পড়ে এ কারণে।
ধুমপান বড় বড় রক্তনালীকে বন্ধ করে দেয়। আর চুলের গোড়ায় অতি সূক্ষ সূক্ষ রক্তনালী। ধুমপান করলে এই সূক্ষ রক্তনালীগুলো বন্ধ হয়ে যায়। চুলের পুষ্টি আসে রক্তের মাধ্যমে তাই রক্তনালী বন্ধ হয়ে গেলে চুল পড়ে যাবে।
শ্যাম্পু ঘন ঘন করলে চুল পড়ে। চুলটা প্রোটিন দিয়ে তৈরি। আর শ্যাম্পু অ্যালকালিক বা খার দিয়ে তৈরি। ক্ষার এবং প্রটিন একত্রিত হলে প্রটিন ভেঙে যায়। এতে চুল গোড়া থেকে ঠিক থাকবে কিন্তু সামনের অংশ ভেঙে ভেঙে পড়বে। প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে।
চুলের জন্য ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভিটামিনগুলো খুব দরকার এছাড়া ভিটামিন সি ও ডি খুব দরকার। অনেকে বলে ভিটামিন ই চুলের জন্য দরকার। কিন্তু ভিটামিন ই চুলের মধ্যে নেই বলেলেই চলে। সামান্য পরিমান ভিটামিন এ আছে। আগে মানুষ খেত কম। কিন্তু এখন মানুষ প্রচুর খায়। কিন্তু এ খাবারটা সুষম না। এ সুষম খাবারের অভাবে চুল পড়ে। প্রেগনেন্সির সময় হরমোনাল চেঞ্জের কারণে চুল পড়ে।
তেল চুলের জন্য অপরিহার্য একসময় ধারণা করা হত। যে সমস্ত এলাকার লোক চুলে তেল দেয় সেসমস্ত এলাকার লোকদের চুল পড়ার সংখ্যা অনেক কম। তেল চুলে প্রটেক্টর হিসেব কাজ করে। অর্থাৎ দেয়ালে রং করলে দেয়ালের সৌন্দর্য্য যেমন বৃদ্ধি পায়। তেমনি দেয়ালকে প্রটেক্ট করে।
কাজের বুয়া বা রিকশাওয়ালার মাথায় টাকের সংখ্যা খুব কম। তাদের সহজে চুল পড়ে না। কারণ তাদের কোন টেনশন নাই। তারা অনেক বেশি পরিশ্রমী এবং তারা মাথায় তেল দেয়।
থাইরয়েডের কারণে রুগির চুল পড়ে। আবার থাইরয়েডের চিকিৎসার জন্য যে ঔষধ দেয়া হয় সেটার কারণেও চুল পড়ে। মিনোক্সিডিল ও ফিনিস্টারেড এই দুটো হলো সরকারকর্তৃক স্বীকৃত। মিনোক্সিডিল দিলে চুল প্রচুর গজায়। ছেড়ে দিলে সে চুল গুলো আস্তে আস্তে পড়ে যায় । রোগীর ধারণা যে, তার সবচুল পড়ে যাচ্ছে। ব্যাপার টা তা না। যার চুল পড়া রোগ তার চুল কমতেই থাকবে। মিনোক্সিডিল খুব নিরাপদ একটা ওষুধ। যা সারাজীবন ব্যবহার করা যায়। তবে এতে অনেকের মাথা চুলকায়। ড্রাই হয়ে যায়। মাথায় নিয়মিত তেল দিলে মিনোক্সিডিলের কারণে মাথায় যে ড্রাই ভাব তৈরি হয় তা থাকবে না।