ইন্টারনেটের আসলে কোন মালিক নেই আবার ইন্টারনেটে মালিক হচ্ছে অনেকগুলা মানুষ। ব্যাপারটি ভেঙ্গে বলতে গেলে প্রথমেই বুঝতে হবে ইন্টারনেট আসলে কি?
ইন্টারনেট (Internet) কি?
ইন্টারনেট হলো বিভিন্ন নেটওয়ার্কের একটি সমন্বিত সংযোগ। এই সংযোগগুলো পরিচালিত হয় কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতির মাধ্যমে, যাকে বলা হয় প্রোটকল (Protocol)। এই নিয়মগুলোই সব নেটওয়ার্কের মধ্যে সহজভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছে! তবে এ সবকিছুই নির্ভর করে রাউটার নেটয়ার্ক এক্সেস পয়েন্ট (Network Access Points (NAP) এবং কম্পিউটার সিস্টেমের ওপর। এছাড়াও যোগাযোগের জন্য কাজ করে কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট), হাজার হাজার মাইল বিস্তৃত কেবল এবং সহস্র ওয়্যারলেস রাউটার। ইন্টারনেটকে যদি অনেকগুলো পার্টের সমষ্টি হিসাবে কল্পনা করেন তাহলে অনেক মানুষ একেকটি পার্টের মালিক যারা এর উন্নয়নে কাজ করছে।
বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি যারা রাউটার এবং ক্যাবলের যোগানের মাধ্যমে ইন্টারনেট মেরুদন্ড হিসাবে কাজ করছে। এই কোম্পানি গুলোকেই বলা হয় ইন্টারনেট সেবাদাতা বা আইএসপি। এখন কোন দেশ বা যদি কেউ নিজের প্রয়োজনে ইন্টারনেট এক্সেস পেতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই এই আইএসপির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। বিশ্বের সে সকল আইএসপি বা ইন্টারনেট সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান বিখ্যাত তারা হল- ইউইউনেট, লেভেল থ্রি, ভেরিযেনি, এটিঅ্যান্ডটি, কুয়েস্ট, স্প্রিন্ট, আইবিএম ইত্যাদি। সমুদ্রের নীচ দিয়ে অপটিকাল ফাইবারের যে তারের লাইন চলে গেছে সেটা কিন্তু বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার একটি মাধ্যম মাত্র। ইন্টারনেট আমাদের কাছে পর্যন্ত আসে মূলত ভিন্ন ভিন্ন স্তরে। এই তিনটি স্তরকে বলা হয় টিআর ওয়ান, টিআর টু এবং টিআর থ্রি। টিআর ওয়ানের মধ্যে যেসব কোম্পানি রয়েছে তারা নিজেদের অর্থায়নে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে এক দেশ থেকে আরেক দেশে জালের মত অপটিক্যাল ফাইবার বিছিয়ে রেখেছে। এভাবেই একটি দেশ বাকি অন্য সব দেশগুলোর সঙ্গে ক্যাবলের সাহায্যে যুক্ত হয়ে যায়।
তবুও সব কিছুর ধারা ঠিক রাখার জন্য যে প্রটোকল গুলো তৈরী হয়েছে, এগুলো আসলে কারা করছে এমন প্রশ্ন আসতে পারে। কিছু সংগঠন আছে যারা ইন্টারনেট নিয়েই কাজ করে এমন কয়েকটি সংগঠন হচ্ছে দি ইন্টারনেট সোসাইটি, দি ইন্টারনেট ইঞ্জিনিয়ারিং টাস্ক ফোর্স, দি ইন্টারনেট আর্কিটেকচার বোর্ড, দি ইন্টারনেট করপোরেশন ফর এসাইড নেম এন্ড নাম্বারস ইত্যাদি।
তাই বলা যায় ইন্টারনেট আসলে কোন ব্যক্তিমালিকানার আওতায় নেই, অর্থাৎ ইন্টারনেটের মালিক নেই। তাই ইন্টারনেট নিয়ে কাজ করলেও উপরের কোম্পানীগুলো কখনো ইন্টারনেটকে নিজেদের সম্পত্তির অংশও দাবী করতে পারেনা।