দীর্ঘদিন ধরে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের পাগল বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য, অবজ্ঞা, অপমান করাসহ চিকিৎসাবঞ্চিত রাখা হয়। কোনো পরিবারে একজন মাদকাসক্ত বা সিজোফ্রেনিয়া রোগী থাকলে সেই পরিবার যেন হয়ে ওঠে ‘কলঙ্কিত’ পরিবার। সামাজিক বৈষম্য ও লোকলজ্জার ভয়ে ওই পরিবার ও ব্যক্তিকে হেয়কর ও লাঞ্ছিত জীবন যাপন করতে হয়। তবে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অবদানে বর্তমানে এই রোগীরা শুধু আরোগ্য লাভই করছেন না, তাঁদের জন্য তাঁরা অর্থপূর্ণ ও সম্মানিত জীবনও নির্মাণ করছেন।
বর্তমানে সারা বিশ্বে কমপক্ষে দুই কোটি ৬০ লাখ লোক সিজোফ্রেনিয়া রোগে ভুগছেন। বাংলাদেশে এই রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ। সাধারণ মানুষের চেয়ে এই রোগীরা ১৫-২০ বছর আগে মারা যান। অন্যদের তুলনায় তাঁরা ছয়–সাত গুণ বেশি বেকার জীবন যাপন করেন, তাঁরা প্রায়ই গৃহহীন থাকেন (রাস্তায় ভবঘুরে জীবন যাপন করেন), সর্বোপরি তাঁদের ৫-১০ শতাংশ আত্মহত্যা করে মারা যান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, রোগজনিত অক্ষমতার প্রথম ১০টি কারণের একটি হচ্ছে সিজোফ্রেনিয়া। তাঁরা সম্মানহীন এবং বন্ধুহীন ও আত্মীয়হীন জীবন যাপন করেন। শিক্ষার সুযোগ হারান, চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকেন, শারীরিক সুস্থতা নষ্ট হয়, চেহারা বিনষ্ট হয়। সামাজিক বন্ধন ছিঁড়ে যায়, সর্বোপরি ভবিষ্যৎ জীবন বলে কিছু অবশিষ্ট থাকে না। সিজোফ্রেনিয়া রোগীদের মধ্যে ধূমপানের হার দুই থেকে ছয় গুণ বেশি। তাঁদের মধ্যে ৪৫-৫৫ শতাংশ মোটা বা স্থূলতায় ভোগেন, তাঁদের মধ্যে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের হারও অধিক থাকে। অথচ অন্যদের তুলনায় তাঁদের শারীরিক রোগের চিকিৎসায়ও অবহেলা করা হয়।
credit : Prothom Alo