অয়ন ভৌমিক
প্রথম এবং সবচেয়ে বড় কারণ হল,
পুরুষদের অশ্রুনালী (Tear Duct)বেশ গভীর আর মোটা। অনেকটা অশ্রু সেখানে জমা থাকতে পারে। ফলে পুরুষরা ইমোশনাল হয়ে যাওয়ার পর অশ্রুগ্রন্থি যদি অশ্রু তৈরি করা শুরু করে দেয়, তাহলে প্রথমে পুরো নালিটা প্রথমে পূর্ণ হবে। পরে সেটা ওভারফ্লো হলে পানি চোখের বাইরে বেরিয়ে আসবে। এর আগেই পুরুষটি আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে ফেলতে পারলে আর তার চোখের পানি বের করতে হয় না।
আর নারীদের অশ্রুনালী চিকন আর অগভীর
তাই সেখানে কম অশ্রু জমা থাকতে পারে। ফলে খুব দ্রুত সেটা ওভারফ্লো করে। ফলে মোদ্দা কথা হল কান্না আসলে একজন পুরুষ কান্না নিয়ন্ত্রণের জন্য যতটুকু সময় পায়, একজন নারী ততটুকু সময় পায় না।
আরো কিছু হরমোনাল কারণ রয়েছে। পুরুষদের সেক্স হরমোন হল টেস্টোস্টেরন। এই টেস্টোস্টেরন হরমোন আবেগতাড়িত হওয়ার প্রবণতা কমায় বলে ধারণা করা হয়। যেসব পুরুষ প্রস্টেট গ্রন্থির ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়, তাদের দেহে টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন কমে যায়। এই ক্যান্সারে আক্রান্ত পুরুষরা গড়পড়তা অন্য পুরুষদের চেয়ে দ্রুত ইমোশনাল হয়ে পড়ে।
আর খুব সম্ভবত ১৮৬০ সালে একদল বিজ্ঞানী চোখের পানির রাসায়নিক সংযুক্তি নিয়ে গবেষণা করেন। বিভিন্ন রকমের চোখের পানি যেমন,
কান্নার সময় বের হওয়া চোখের পানি, চোখে ধুলাবালি সেসময় যে পানি বের হয়, খুব জোরে হাসি এলে সেসময় যেই পানি বের হয়... এই সব ধরণের পানির মধ্যে অবস্থিত রাসায়নিক উপাদান নিয়ে ওনারা গবেষনা করেন। সেই গবেষণায় আবেগের সময় বের হওয়া চোখের পানিতে প্রোল্যাকটিন হরমোনের উপস্থিতি পাওয়া যায়। কান্না করার সাথে প্রোল্যাকটিন হরমোনের সংযোগ আছে বলে ধারনা করা হয়। এই প্রোল্যাকটিন হরমোন আবার ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ৬০ শতাংশ বেশি থাকে।
এইসব কারণেই আসলে মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে বেশি দ্রুত আবেগী হয়ে পড়ে। তাই ছেলেদের "আমরা আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আমরা অনেক মহৎ" ইত্যাদি চিন্তা মাথায় নিয়ে গর্বে বুক ফুলিয়ে চলার কোন মানে নেই। কারণ আমরা ছেলেরা বায়োলোজিক্যালি এইভাবে তৈরি।