অল্পতেই কান্না আসে? প্রতিকার? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+13 টি ভোট
4,000 বার দেখা হয়েছে
"তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে করেছেন (71,300 পয়েন্ট)

1 উত্তর

+5 টি ভোট
করেছেন (71,300 পয়েন্ট)

অল্পতেই সামান্য আবেগে কান্না করা খারাপ কিছু না।এর অনেক ভালো দিক ও আছে। চলুন জেনে আসা যাক এর ভালো দিক গুলো:

অল্প দুঃখে পেলেই যাঁদের চোখ ছলছল করে ওঠে বা ঠোঁট ফুলে ওঠে, তাঁদেরকে নিয়ে আমরা কতই না মজা করি। বন্ধু মহলে তাঁদের নামই হয়ে যায় ছিচকাঁদুনে। খারাপ সময় সবার জীবনে আসে। চোখে অন্ধকার দেখেন অনেকে। কেউ কেঁদে সামাল দেন। কেউ আবার হাসিখুশি থাকলেও ভিতর থেকে ক্রমশ ভেঙে যেতে থাকে। কিন্তু মনোবিদরা বলছেন, কান্নার বিশেষ কিছু গুণ রয়েছে। অল্পেই যাঁরা কেঁদে ওঠেন, তাঁরা এমনিতে সংবেদনশীল হন। আর অন্যের দুঃখেও যাঁদের চোখে জল আসে তেমন মানুষ জীবনে পেয়েও হারিয়ে ফেললে আপনারই ক্ষতি। নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় হয়তো অস্বস্তি হতে পারে। কিন্তু এই মানুষগুলির মধ্যেই থাকে বিশেষ গুণ।

জেনে নেওয়া যাক মনোবিদরা কোন গুণগুলির কথা বলছেন-

১) যাঁরা কাঁদতে পারেন, তাঁদের বেশ কিছু সুবিধা আছে। কষ্ট বা দুঃখ এঁরা সহজেই কেঁদে সমস্ত প্রকাশ করে ফেলতে পারে। ফলে তাঁদের দুঃখ দীর্ঘমেয়াদী হয় না। তাঁরা সহজেই সামনে এগিয়ে যেতে পারেন। অন্যদিকে যাঁরা রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ ভিতরে জমিয়ে রাখেন তাঁরা প্রতিশোধস্পৃহায় ভুগতে থাকেন। দুঃখ, রাগ এইগুলিও তাঁদের পিছু ছাড়ে না।

২) যাঁরা কাঁদেন অল্পতেই তাঁদের অনেকে ভীতু ভাবেন। কিন্তু আসলে এঁরা যথেষ্ট সাহসী হন। কান্না আবেগ থেকে আসে। কান্না ব্যক্তিগত জিনিসগুলির মধ্যে একটি। সবার সামনে তাই কেঁদে ফেলা যায় না। কেউ তো কাঁদতেই পারেন না। নিজের দুঃখের মুখোমুখি হতেই তাঁরা ভয় পান। কিন্তু যাঁরা সহজেই কেঁদে ফেলেন তাঁরা বেশ সাহসী হন। নিজের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন।

৩) না কেঁদে দুঃখ চেপে রেখে দিলে শারীরিক কিছু সমস্যাও তৈরি হতে পারে। এতে প্রেশারের হেরফের বা স্নায়ুতেও চাপ পড়তে থাকে। সঙ্গে স্ট্রেসও বাড়তে থাকে। আর যাঁরা কষ্ট হলেই কেঁদে ফেলেন তাঁরা স্ট্রেসমুক্ত থাকতে পারেন।Science Bee

৪) কান্না খুবই ব্যক্তিগত। অধিকাংশ মানুষই কান্না পেলেও তা চেপে রাখেন। কান্না পেলে ভাবেন সামনের লোক কী ভাববেন। কিন্তু যাঁরা কেঁদে ফেলেন তাঁরা খুবই আত্মবিশ্বাসী হন। তাই লোকে কী ভাববে এই ভেবে এঁরা নিজেদের আবেগ অনুভূতি দমন করেন না।

৫) এদের কান্না দেখে নাটুকে মনে হতে পারে আপনার। কিন্তু আবেগের বশে যাঁরা কাঁদে তাঁরা আদতে ভালো মানুষ হয়। এদের মনের ভিতরটাও সহজেই পড়ে ফেলা যায়। এমন ভালো মানুষ কিন্তু বন্ধু হিসেবে পাশে থাকে। তাই একটুতেই কেঁদে ফেলা বন্ধুকে কোনও দিনও হারাবেন না। প্রথমটায় তাঁর কষ্ট হলেও পরে এই স্বার্থপরদের ভিড়ে আপনিই তাঁকে মিস করবেন।

তো নিজের ভালো দিক গুলো জানতে পেরে ভালো বোধ করছেন তো??

নিশ্চয়ই অনেকটা ভালো বোধ করছেন। তবুও চাচ্ছেন নিজের এই কান্নার উপর কন্ট্রোল আনতে, তারও সমাধান আছে। চলুন জেনে আসা যাক সেই সমাধান:

প্রেমিকের দেওয়া কষ্ট হোক বা কর্মক্ষেত্রে বসের বকুনি, কারণ যাই হোক না কেন চোখে জল চলে আসে। এছাড়াও বন্ধুদের সঙ্গে মনোমালিন্য, বাবা-মা'র সঙ্গে অশান্তি ইত্যাদি যাবতীয় কারণে হালকা হওয়ার জন্য কি কেঁদে ফেলেন? কোনো পরিস্থিতিতেই চোখের জলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না? কাঁদলে তবেই মন হালকা হবে বলে মনে হয়, তাহলে মনকে শক্ত করতে রইল কয়েকটি সহজ উপায়।

নিজের কান্নার উপর কন্ট্রোল রাখার উপায়:

১)ফোকাস এবং রিল্যাক্স-নিচে মাটির দিকে বা কোনো বস্তুর দিকে ফোকাস করুন। নিজের মনকে শান্ত করুন এবং মাইন্ড সেট আপ করুন যে আপনি কোনোভাবেই কান্না করবেন না, রিলাক্স মোডে চলে যান।নিজের মুখের এক্সপ্রেশন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করুন এবং মুখের মাংশপেশী শিথিল করার চেষ্টা করুন।

২) বড় বড় করে প্রশ্বাস নিন- যে কোনো অবস্থাতেই থাকুন, যদি মনে করেন যে কান্না পাচ্ছে তাহলে অবশ্যই বড় বড় প্রশ্বাস নিন এবং তা ধীরে ধীরে ছাড়ুন। নাক দিয়ে প্রশ্বাস নিন আর মুখ দিয়ে ছাড়ুন। এইভাবে বেশকয়েকবার করতে থাকুন। শরীরে অতিরিক্ত অক্সিজেন সরবরাহ হলে কান্নার আবেগ খুব সহজেই চলে যাবে এবং সঙ্গে সঙ্গে আপনার মনকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবে।

৩) একসঙ্গে অনেকটুকু জল পান করুন- কান্না পাচ্ছে?এমনটা মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে অনেকটা জল পান করে ফেলুন। জল আপনার স্নায়ুকে শিথিল হতে সাহায্য করবে এবং সেইসঙ্গে কান্নার সম্ভাবনাও দূর হবে।

৪) পুনরাবৃত্তিমূলক চিন্তা- নিজের পছন্দের কোনো গান বা কবিতা বা কোনো লাইন মনে করুন যেগুলো আপনাকে আনন্দ আর শান্তি দেয়।বার বার মনে মনে পড়তে বা গাইতে থাকুন এসব।Science Bee

৫) আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সঙ্গে কথা বলুন- কান্না পেলেই ওয়াশরুম-এ চলে যান বা এমন কোথাও যান যেখানে আয়না রয়েছে। এবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলুন। নিজেকে বোঝাতে শুরু করুন যে এই পরিস্থিতিতে আপনার সামলে ওঠা দরকার। দেখবেন কান্না নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।

৬) সমস্যার বাইরে অন্য কোনো বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করুন। কোনও পরিস্থিতির চাপে পড়ে যদি কান্না পায়, তাহলে অবশ্যই সেই প্রসঙ্গে ভাবনা-চিন্তা করা একেবারেই বন্ধ করে দিন। অন্য কোনও বিষয়ে ভাবতে শুরু করুন। কান্নার কারণটি ভুলে গেলেই কান্না আর পাবে না।

৭) ১০০ থেকে ১ উল্টো গুনুন- যখনই কান্না পাবে এই বুদ্ধিটি প্রয়োগ করলে দেখবেন কান্না একেবারেই উধাও। ১০০ থেকে ১ উল্টো গুনতে শুরু করলে আপনার মনযোগ কান্নার দিক থেকে সরে এসে গণনার দিকে চলে আসবে।

৮) হেঁটে আসুন-নিজের মনকে শান্ত করতে বেরিয়ে পড়ুন হাঁটতে। এটা আপনার মনের কষ্ট এবং ক্লান্তি কমিয়ে দিবে অনেকটাই।

৯) সবথেকে কাছের মানুষটিকে ফোন করে কথা বলুন- যে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কান্না পাচ্ছে, সেই বিষয়টি নিয়ে নিজের কাছের কোনও বন্ধুর সঙ্গে কথা বলুন। দেখবেন অনেকটাই হালকা লাগছে।

তো নিজের কান্নার ভালো গুণ সাথে এর প্রতিকারও জেনে ভালো লাগছে নিশ্চয়ই। এখন আর কান্না চেপে রাখা নয়, কান্না পেলেই কেঁদে ফেলুন। আবার ধীরে ধীরে এর উপর কন্ট্রোল ও নিয়ে আসুন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

©Anamika Sultana Sayida ||ScienceBee

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 471 বার দেখা হয়েছে
27 ডিসেম্বর 2021 "বিবিধ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,490 পয়েন্ট)
+7 টি ভোট
3 টি উত্তর 1,924 বার দেখা হয়েছে
+12 টি ভোট
3 টি উত্তর 3,243 বার দেখা হয়েছে
05 অগাস্ট 2020 "লাইফ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন বিজ্ঞানের পোকা ৩ (25,790 পয়েন্ট)

10,846 টি প্রশ্ন

18,546 টি উত্তর

4,746 টি মন্তব্য

847,328 জন সদস্য

64 জন অনলাইনে রয়েছে
3 জন সদস্য এবং 61 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Khairul_Alom_Fardush

    140 পয়েন্ট

  2. M_H_Mueez

    120 পয়েন্ট

  3. googlemapheadle

    100 পয়েন্ট

  4. ku3933site1

    100 পয়েন্ট

  5. aaqqbet

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল #science ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক #biology পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন গাছ মনোবিজ্ঞান খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার দুধ উপায় হাত শব্দ মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা বাচ্চা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...